শনিবার, জানুয়ারি ২৫, ২০২৫
Led02রাজনীতি

রূপগঞ্জে আধিপত্য বিস্তার করতে বিএনপির নেতার বাড়িতে হামলা, চাইলেন আইনী সহায়তা

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: রূপগঞ্জে ১৯ বছর যাবত বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত মোহাম্মদ হোসেন। একবার মেম্বার ও ২ বার কাঞ্চন পৌরসভার কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিভিন্ন হামলা-মামলার শিকার হয়ে কারাগারে যেতে হয়েছে একাধিকবার। কিন্তু ৫ আগস্টের পর স্থানীয় কাউসার বাহিনীর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলার শিকার হয়ে রক্তাক্ত যখম হয়েছে মোহাম্মদ হোসেনের ছেলেসহ ভাতিজা।

নিরুপায় হয়ে আইনের দারস্থ হয়েও সঠিক বিচার না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপির এই নেতা। বর্তমানে তাঁর বাড়ির আশপাশের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিচ্ছে অভিযুক্তরা। এতে থানায় গিয়ে আইনি সহায়তা না নিতে পেরে, পরিবার নিয়ে আতঙ্কে আছেন বলে দাবি করেন সাবেক কাউন্সিল মোহাম্মদ হোসেন।

তিনি অভিযোগ করে জানান, শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকালেও আমাদের উপর হামলা করেছে। কতিপয় কাউসার বাহিনী বিভিন্ন সময় দফায় দফায় হামলা ও বাড়িঘর ভাংচুর ও দেশীয় অস্ত্রের মহড়ায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ভুক্তভোগী বিএনপি নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর হোসন বলেন, আমি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্বাচিত কাউন্সিলর হয়েও বিভিন্ন সময় হামলার শিকার হয়েছি। আমি ১৯ বছর যাবৎ বিএনপির কাঞ্চন পৌরসভা ২ নং ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি। আওয়ামী লীগ সরকার ৫ তারিখ পালিয়ে যাওয়ার পর কিছু বিএনপির নাম ধারণ করে মাদক ব্যবসা সহ নানা অপকর্ম করছে। তাদের এ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে বাধা দিলে তারা সেই রেশনালে আমার পেছনে পড়ে। গতকাল সকালেও আমার ছেলেকে না পেয়ে তার মোটর বাইককে ভাঙচুর করে খালে ফেলে দেয়। আজ সকালও ৯ টায় আমি বাহিরে এক চায়ের দোকানে বসে চা খাওয়ার সময়, কাউসার বাহিনীর লোকেরা লাঠি সোটা এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ সময় নিজের প্রাণ রক্ষায় কোনভাবে সেখান থেকে পালিয়ে আমি বাড়ি চলে আসি। এরপর হামলাকারীরা আরো লোক ও অস্ত্র নিয়ে আমার বাড়ির পাশে এসে অবস্থান নিয়েছে। আমি থানায় অভিযোগ করার জন্য বাড়ি থেকে বের হতে চাইলে তারা মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে আমি প্রাণ নাশের আশঙ্কায় আছি। গতকালের ঘটনাও আমি ৯৯৯ এ ফোন দিয়েছিলাম, ঘটনার বিবরণ দেওয়ার পর এখন পর্যন্ত কোন সহায়তা পায়নি। আমি অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে আবেদন করছি, আমার ওপর এরকমের হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি চাই। এ ধরনের ঘটনা কোন এলাকাতে যেন না হয়। আমি স্ত্রী সন্তান নিয়ে আইনের সহায়তা চাই।

মোহাম্মদ হোসেন অভযুক্তদের নাম প্রকাশ করেন। অভিযুক্তরা হলেন, রূপগঞ্জ উপজেলার শাজাহানের ছেলে ও কাউসার বাহিনীর প্রধান কাউসার (৩৮), আবু তালেবের ছেলে রাকিবুল (৩৪), শাহজাহানের ছেলে রাজিব (৩৫), আবু তালেবের ছেলে ফজলে রাব্বি (৪০), মৃত নাজির মিয়ার ছেলে আজিজুল (জজ মিয়া) (৪০), মেয়ে তো আমিরের ছেলে হাবিবুর (২৮), মৃত শাহাবুদ্দিনের ছেলে নুর আলম (৪১), একে এলাকার আলিফ, (২২), মেহেদি (২৬) , শহিদুল্লাহর ছেলে নাঈম (২৫), শাহজাদা ছেলে নাবিবুর (২৯) ও হাবিবুর (৩৬), প্রিয় না বলে ছেলে রাসেল (৩৪), নিজামের ছেলে নাহিদ (২৪), শাকিল এর ছেলে শিবলু (২৪), সুফিয়ানের ছেলে ইউসুফ (৩৫), ও মৃত সিদ্দিকের ছেলে কবির (৩৮)।

হামলার শিকার হয়েছেন সাবেক কাউন্সিল মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে মুরাদ হোসেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ আমল থেকে বিভিন্ন সময় নির্যাতিত হয়েছি। আওয়ামী লীগের আমলেও আমার বাবা এই ২ নং ওয়ার্ড কাঞ্চন পৌরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। এই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করার জন্য কিছু মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীরা আমার ও আমার বাবার ওপর হামলা করে বাড়িঘর ভাঙচুর করে। এমনকি আমার মোটরযানের উপরও তারা ভাঙচুর চালায়। আমার পরিবারের মা বাবা ভাই বোন আমরা সবাই আতঙ্কের মধ্যে আছি। আমরা বিভিন্ন সময় চেষ্টা করলেও আইনগত কোনো সহায়তা পাচ্ছিনা। আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না কারণ কাউসার বাহিনীর লোকেরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়ির আশপাশে মহড়া দিচ্ছে। অন্তবর্তী কালীন সরকারের কাছে আমার অনুরোধ রইল আমাদের জীবনে নিরাপত্তা দিয়ে আইনের সহায়তা দেওয়া হোক

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, ‘৯৯৯এ কল করলে তো একটা পুলিশের টিম যাওয়ার কথা। হয়তো এখনো তারা আমাদেরকে আপডেট করেনি। আপনার থেকেই এই তথ্য শুনলাম, পুলিশ পাঠিয়ে আমরা খবর নিচ্ছি।’

এর আগে গতবছর ২৪ নভেম্বর এই নেতার ছেলে ও ভাতিজার উপর হামলা করা হয়।

এর আগে গতবছর ২৪ নভেম্বর এই নেতার ছেলে ও ভাতিজার উপর হামলা করা হয়।

RSS
Follow by Email