মঙ্গলবার, মে ২০, ২০২৫
Led01অর্থনীতি

রাসেল গার্মেন্টেসে শ্রমিক অসন্তোষ: ভুল ভাঙলো হাতেমের আলোচনায়, শ্রমিকরা ফিরলেন মিষ্টি মুখে

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ টানবাজারের রাসেল গার্মেন্টসের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও ছুটি নিয়ে সম্প্রতি অসন্তোষ দেখা দেয়। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমের মধ্যস্থতায় শ্রমিকদের ১১ জন প্রতিনিধির সাথে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খলিলুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর (অফিসার ইনচার্জ) মো. নাসির উদ্দিন, ও রাসেল গার্মেন্টসের মালিক মো. আক্কাস হোসেন মন্ডল।

বৈঠকে শ্রমিক প্রতিনিধিরা তাদের বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন। আলোচনার মাধ্যমে কিছু দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে, তবে কিছু বিষয়ে পূর্বের নিয়ম বহাল রাখা হয়েছে।

শ্রমিকদের উত্থাপিত দাবি ও গৃহীত সিদ্ধান্ত, ঈদুল ফিতরের জন্য ৫ দিনের ছুটি (তিন দিন সরকারি ছুটি, বাকি দুই দিন পরবর্তীতে কাজের মাধ্যমে সমন্বয়)। ঈদুল আযহার জন্য ৬ দিনের ছুটি (তিন দিন সরকারি ছুটি, বাকি তিন দিন শুক্রবারে কাজের মাধ্যমে সমন্বয়)। এটিএম কার্ডের বাৎসরিক চার্জ বন্ধ এবং দুইটি অতিরিক্ত এটিএম বুথ স্থাপন। নাস্তার বিল বৃদ্ধি করে ৪০ টাকা করা। বছরে ১৮ দিন অর্জিত ছুটি প্রদান। চাকরি ছাড়ার দুই মাসের মধ্যে সার্ভিস বেনিফিট পরিশোধ। বেসিকের ৬৫% হারে ঈদ বোনাস প্রদান। প্রতি মাসের ৫ থেকে ৬ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধ। কাঞ্চা মেশিনের অপারেটরদের জন্য অতিরিক্ত ১০ টাকা নাস্তা বিল।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, শ্রমিকদের অসন্তোষ নিয়ে আমরা আজকে টানবাজারের রাসেল গার্মেন্টসে এসেছিলাম। এখানে আমরা শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছি। তাদের দাবি দাওয়ার মধ্যে কিছু আইন বহির্ভূত দাবি ছিলো, যা তারা জানতো না যে, সেগুলো আইন বহির্ভূত। তারা বিভিন্ন ছুটির বিষয়ে আমাদের দাবি জানিয়েছে। কিন্তু শ্রম আইন অনুযায়ি শ্রমিকরা এই বছর কি কি ছুটি পাবে, সেগুলো বছরের শুরুতে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এগুলো কল কারখানা অধিদপ্তর এপ্রুভ করা আছে। সুতরাং বছরের মাঝখানে এটাকে নতুন করে দেয়ার কিছু নেই। আমরা তাদের সেটা বুঝিয়ে দিয়েছি।

তিনি বলেন, এই ধরণের আইন বহির্ভূত কিছু ডিমান্ড নিয়ে তারা কয়েকদিন যাবত ঝামেলা করার চেষ্টা করছিলো, এই বিষয়ে মালিক পক্ষ আমাদের জানিয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ থানা পুলিশ, শিল্প পুলিশ ও সেনা বাহিনীকে নিয়ে আমরা বসেছি। আমরা শ্রমিক প্রতিনিধিদের বুঝিয়েছি তারা যে দাবি গুলো জানাচ্ছে সেগুলো আইন বহির্ভূত ও অবৈধ দাবি। আমরা যদি তাদের এই অবৈধ দাবি মেনে নেই তাহলে দেশের অন্যান্য গার্মেন্ট গুলো, এই অবৈধ দাবি নিয়ে রাস্তায় নামবে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে এইসব দাবি মানা যাবে না, এটাই আমরা তাদের বুঝিয়েছি। এছাড়া তাদের এইসব দাবির মধ্যে কিছু যৌক্তিক দাবি ছিলো যেমন, ব্যাংক বুথ সংখ্যা বাড়ানো, ক্যান্টিনে ঠান্ডা পানি দেয়ার বিষয়ে আমরা সহমত হয়েছি।

 

মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শ্রমিকরা আমাদের আইনকে শ্রদ্ধা করেছে, তারা অনেক বিষয়ে বুঝেছে। তারা এসব অবৈধ দাবির বিষয়ে অবগত ছিলো না। তারা এখন এগুলো মেনেছে, মিষ্টি মুখ করে আমাদের সাথে কাজ করার অঙ্গিকার করেছে। আমরা বিকেএমইএ শ্রমিকের যে কোন ন্যায্য দাবিতে তাদের পাশে থাকবো। তবে কেউ যদি অবৈধ দাবি বাস্তবায়ন করতে চায় তাহলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করবো। আমাদের এই গার্মেন্টস শিল্পে ৯৫ ভাগ শ্রমিক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ বা মারামারির সাথে সম্পৃক্ত নেই। কিছু কিছু ফ্যাক্টিরীতে শ্রমিক নামধারী কিছু সন্ত্রাসী রয়েছে, আমরা তাদের কোন ছাড় দেবো না।

RSS
Follow by Email