মে দিবসে শ্রমিক ঐক্যের ডাক: নারায়ণগঞ্জে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সমাবেশ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখা মহান মে দিবস উপলক্ষে শ্রমিক ছাঁটাই, নির্যাতন, দমন-পীড়ন ও মামলা হয়রানি বন্ধের দাবিতে রাজপথে নেমেছে। একইসঙ্গে শোভন কর্মপরিবেশ, সামাজিক সুরক্ষা এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য রেশনিং, বাসস্থান ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবার দাবিতে আগামী জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের রাম কৃষ্ণ মিশনের সামনে এক শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শ্রমিকরা শহরের প্রধান সড়কে লাল পতাকার একটি মিছিল বের করেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি এম এ শাহীন।
বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক আমজাদ হোসেন এবং দপ্তর সম্পাদক মোস্তাকিমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মে দিবস বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির অধিকারের স্বীকৃতিস্বরূপ। ১৮৮৬ সালের এই দিনে শিকাগোর শ্রমিকদের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমেই বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তবে, ১৩৯ বছর পরেও বাংলাদেশের শ্রমিকরা সেই অধিকারের সুফল থেকে বঞ্চিত। আজও শ্রমিকরা ৮ ঘণ্টা কর্মদিবস ও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত এবং অগণতান্ত্রিক আইনের বেড়াজালে আবদ্ধ।
নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, শ্রমিকরা তাদের অধিকারের কথা বললেই মালিকরা শ্রম আইনের অপব্যবহার করে ছাঁটাই ও মামলায় জড়ায়। জোরপূর্বক সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে শ্রমিকদের আইনি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয় এবং ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে বাধা দেওয়া হয়। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা নেই। এই পরিস্থিতিতেও শ্রমিকরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন, তবে তাদের জীবনযাত্রার কোনো উন্নতি হয়নি। শ্রমিকদের প্রতি এই অন্যায় নীতি পরিহার করার আহ্বান জানান বক্তারা।
শ্রমিক স্বার্থবিরোধী আইন বাতিল করে গণতান্ত্রিক শ্রম আইন প্রণয়ন, ন্যায্য মজুরি ও শ্রমিক অধিকার বাস্তবায়নের দাবি জানান শ্রমিক নেতারা। তাঁরা কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য রেশনিং, বাসস্থান ও বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য আগামী বাজেটে আলাদা বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানান। দাবি পূরণ না হলে মে দিবসের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ের হুঁশিয়ারি দেন নেতৃবৃন্দ।