মেঘনা নদীতে চাঁদাবাজদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ: আহত ৫, গ্রেপ্তার ২
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মেঘনা নদীতে বিভিন্ন নৌযানে চাঁদাবাজীর সময় পুলিশ-চাঁদাবাজদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) সকালে উপজেলার মেঘনা নদীর নুনেরটেক এলাকায় সংঘটিত এই সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ মোট পাঁচজন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে রাবার বুলেট ছুঁড়তে হয় এবং এ সময় দুই চাঁদাবাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গুরুতর আহত দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার নলচর গ্রামের বারেকের নেতৃত্বে তার ছেলে মহসিন, হাসনাত, রানা, সাজ্জাদসহ ২০ থেকে ৩০ জনের একটি চাঁদাবাজ চক্র বালু ও মালবাহী বিভিন্ন নৌযান থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করে আসছিল।
আজ সকালে বিভিন্ন নৌযান নুনেরটেক এলাকা দিয়ে মেঘনা নদী পার হওয়ার সময় বারেক, টিটু, মহসিনসহ তাদের দলবল টেটা, বল্লম, রামদা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে চাঁদা দাবি করে। তাদের দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় এমভি জয়নব বৃষ্টি পরিবহন বাল্কহেডের শ্রমিক মহিবুল্লাহ ও জাকারিয়াকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে চাঁদাবাজরা।
খবর পেয়ে বৈদ্যেরবাজার নৌ পুলিশ ফাঁড়ি ও চালিভাঙ্গা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা যৌথ অভিযান চালায়। এ সময় চাঁদাবাজরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের ওপর টেটা, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা করে। চাঁদাবাজদের হামলায় তিন পুলিশ সদস্য এএসআই মাকসুদ, কনস্টেবল সোহাগ ও সাইদুর রক্তাক্ত আহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে রাবার বুলেট ছুঁড়তে বাধ্য হন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বারেকের ছেলে রানা ও সাজ্জাদকে গ্রেফতার করে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বৈদ্যেরবাজার নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মাহাবুবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দীর্ঘ দিন ধরে একটি চাঁদাবাজ চক্র মেঘনা নদীতে সক্রিয় ছিল। আজ সকালে বাল্কহেড শ্রমিকদের ওপর হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে চাঁদাবাজরা পুলিশের ওপর হামলা করে তিন পুলিশ সদস্যকে আহত করে। এ সময় দুই চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
