মুখ ফসকে ‘জয় বাংলা’ বলায় ক্ষমা চাইলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী
# আমার কথায় ব্যাথিত হয়ে থাকলে আমি সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থী
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: একজন মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহন করে দেশের মানুষের স্বাধীনতায় অগ্রনী ভূমিকা পালন করা জীবনের সব থেকে বড় পাওয়া। দল মত নির্বিশেষে তিনি একজন দেশের সম্পদ। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জাতি এবং তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আশির্বাদ সমতুল্য। মুক্তিযোদ্ধার শূণ্যস্থান জাতি কখনো পূরণ করতে পারে না, তাই হয়তো শ্রদ্ধায় ও কৃতজ্ঞতায় সম্মান জানায় তাকে। তেমনি একজন নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী।
সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে অনুদানের চেক বিতরণের আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে বক্তব্য শেষ করেছেন তিনি। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী। তারাই ধারাবাহিকতায় ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
তবে, সেদিন ভুল বসত ওই বাক্য (জয় বাংলা) ব্যবহার করেছেন বলে দাবি নারায়ণগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী’র। জেলা প্রশাসকের দাওয়াতে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সেদিন অসুস্থ শরীর নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি। বক্তব্য শেষে ভুল বসত তিনি ‘জয় বাংলা’ বলেছেন। সেই সাথে তিনি সেদিনের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা একই সাথে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন সংসদ সদস্য ছিলাম। আমার ব্রেইনে সমস্যার কারণে আমি ব্যাংকক গিয়েছিলাম চিকিৎসার কারণে। সেখান থেকে আসার পরই জেলা প্রশাসকের দাওয়াতে আমি সেদিন ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেছিলাম। সেখানে ভুল বসত আমার মুখ থেকে ‘জয় বাংলা’ বাক্যটি বের হয়ে যায়। আমার সাথে টিপু সাহেবে সাথে কোন শত্রুতা নেই। সে আমার ছোট ভাই, সে যে রাজনীতির আদর্শ মানে আমিও সেই রাজনীতির আদর্শের একজন মানুষ। তবুও যদি সে আমার কথায় বা অন্য যারাই আছেন যদি আমার কথায় ব্যাথিত হয়ে থাকেন তাহলে আমি সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থী।
তিনি আরও বলেন, জয় বাংলা বলা আমাদের দীর্ঘ দিনের চর্চা করে রেখেছিলো ফ্যাসিস্ট হাসিনা। আমাদের সব কিছুতেই তিনি বাধ্য করতেন ‘জয় বাংলা’ বলার জন্য। আমি জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেছি মুক্তিযোদ্ধাদের স্বার্থে। কিন্তু আমি সব সময় আমার আদর্শে অটল ছিলাম। মুক্তিযোদ্ধাদের স্বার্থে আমার সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানদের সাথে সক্ষতা বজায় রাখতে হয়েছে। আমিই জোর দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে মুক্তিযোদ্ধাদের নানা উন্নয়ন মূলক কাজ গুলো করিয়েছি। কখনো তাদের থেকে কোন রাজনৈতিক ফয়দা হাসিল করার চেষ্টাও করিনি। সেই সময়ে আমাদের কোন উপায় ছিলো না, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সেলিম ওসমান, শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে গিয়ে কেউ কথা বলবে সেই সাহস আমাদের ছিলো না। বিগত সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রোগ্রামে আমাকে ‘জয় বাংলা’ বলার জন্য সেলিম ওসমান বাধ্য করেছেন। সেই জায়গা থেকেই আমি সেদিন জেলা প্রশাসকের প্রোগ্রামে ভুলবসত ‘জয় বাংলা’ কথাটা উচ্চারণ করেছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী বলেন, সেদিনের কথায় আমি অনুশোচনাবোধ করছি। আমার সেদিনের কথায় যদি কেউ ব্যাথিত হয়ে থাকেন তাহলে আমি আন্তরিক ভাবে সকলের কাছে, জাতির কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করছি। আমার অসুস্থ শরীরে সকলকে নিয়ে সামনের দিন গুলো এগিয়ে যেতে চাই। আমি সকলের সহযোগীতা কামনা করেছি, সবাই আমাকে ক্ষমা করে উন্নয়ণ মূলক কাজে অংশগ্রহন করার সুযোগ দিবেন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে বাঁচার সুযোগ দিবেন।