মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়েই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে: বীর মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেছেন, অনেক শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা এই দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা যখন যুদ্ধ করি, তখন আমাদের এক মাত্র লক্ষ্য ছিলো যে; কিভাবে দেশের মানুষকে স্বাধীনতা এনে দিবো। রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধা ভোগ করবো, সে ধরণের কোন মানসিকতা আমাদের ছিলো না। কারণ মুক্তিযুদ্ধ ছিলো অনিশ্চিত। মানুষ সমান অধিকার পাবে, ন্যায় বিচার পাবে, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। রাষ্ট্রের কাছে কিছু পেতে হবে এমন মানসিকতা মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে নেই। আমরা বিশ্বাস করি রাষ্ট্র সবার জন্য সমান ব্যবস্থা রাখবে, সবাইকে সমান অধিকার দিবে।
নারায়ণগঞ্জ বিএনপির উদ্যোগে বুধবার (১৭ জুলাই) বাজ জোহর প্রেসক্লাবের সামনে কোটা আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থীদের জন্য গায়েবানা জানাজার নামাজের পূর্বে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলো, তারা বীর পুরুষ। তাদের সন্তান, নাতি-নাতনীরা কেন কাপুরুষ হবে? আমাদের সন্তানরা নিজের মেধায় রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করবে। আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কখনো চিন্তা করিনা যে, আমার সন্তান কোটার বিনিময়ে মেধাকে পাশ কাটিয়ে সরকারি চাকরি নিশ্চিত করবে। আমার নাতি-নাতনিরা এই কোটার কেথা চিন্তা করে ঠিক মতো অধ্যায়নও করবে না। এটা আমাদের জন্য অবমাননাকর এবং আমাদের সন্তানদের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা যে কোটার আন্দোলনে অংশ নিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই তাদের মধ্যে জাগ্রত। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়েই আজ তারা আন্দোলন করছে। আর এই আন্দোলন দমনের জন্য সরকার তাদের উপর অত্যাচার করছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান দিতে হবে এটা শুধু সরকারের লোক দেখানো, তারা তাদের সুযোগ সুবিধা কিভাবে পাবে, সেই জন্য তাদের এই স্লোগান।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সন্তানরা সম অধিকার নিয়ে বাঁচবে, আমরা এটাই চাই। এই কোটা আন্দোলন অত্যন্ত যুক্তিসংগত। আমাদের সন্তানরা আজ এত সচেতন। আমার যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম কত জন? সরকার বিভিন্ন ভাবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরি করে, দেশের প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের মান ইজ্জত নষ্ট করে দিয়েছে। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা অনেক কম। কিন্তু এই সরকারের সময় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার চেয়ে বেশি। এই আন্দোলনে যারা ক্ষতিগ্রস্থ, তাদের পাশে ইনশাআল্লাহ আমরা থাকবো।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, জেলা ছাত্র দলের সদস্য সচিব জুবায়ের রহমান জিকুসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বহু নেতাকর্মী।