মির্জা আজম ও শামীম ওসমানের বক্তব্যের কড়া জবাব না.গঞ্জ বিএনপি’র
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বিএনপিকে নিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা আজম বলেন, ‘জিয়ার রহমান ১৩০০ মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছে’। অপরদিকে, বিএনপির সমালোচনা করে শামীম ওসমান বলেন,‘আমরা যদি ক্ষমতাচ্যুত হই, এবার বাংলাদেশে ৬৫ হাজার গ্রামে একজন করে হত্যা করলেও ভাবুন কত হবে।’
এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন সেনা অধিনায়ক। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের খেতাব প্রদান করেছেন, তার মধ্যে জিয়াউর রহমান অন্যতম। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে বিগত ১৫ বছরে মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ক্ষুন্ন করেছেন। তাদের (আওয়ামী লীগের) জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়া কারণে এই অবস্থা। যারা জিয়াউর রহমানকে খেতাব দিয়েছে, তারা এখন মিথ্যা বানোয়াট কর্থা বার্তা বলে। একজন মুক্তিযোদ্ধা কখনো আরেকজন মুক্তিযোদ্ধাকে খুন করতে পারে না। তাদের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রনোদিত।
তিনি আরও বলেন, বিনা ভোটে সংসদ সদস্য হয়ে এখন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বলেন। মানুষ জানে সে উদ্ভট বক্তব্য দেয়। এসব মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য দিয়ে রাজনৈতিক ভাবে আলোচনা-সমালোচনায় থাকতে চায়। উনি (শামীম ওসমান) আন্তাজে কথা বলে, উনি কিভাবে জানে এতো মানুষ খুন হবে। রাজনৈতিক ভাবে মোকামেলা করতে না পেরে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে খেই-হারিয়ে ফেলেছে। হুমকি ধমকি দিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশীদিন টিকে থাকা যায় না।
সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন বলেন, বিএনপি হত্যার রাজনীতি করে না। উনি (জিয়াউর রহমান) দেশের মানুষের জন্য যুদ্ধ করেছে। উনি বাংলাদেশকে কৃষিতে স্বনির্ভর করেছে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। দেশের অবস্থা যখন খারাপ হয়েছিলো, গণমাধ্যমে স্বাধীনতা ছিলো না, তিনি সেটা প্রতিষ্ঠিত করেছে। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছিলো জিয়াউর রহমান। শহীদ জিয়া ছিলেন একজন দেশ প্রেমিক। তারা (আওয়ামী লীগ) যেসব মন্তব্য করেছে এগুলো সব মিথ্যা ও বানোয়াট।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আওয়ামী লীগের এখন শেষ সময়। ওনারা বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে বিএনপি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে বিতর্কিত করার জন্য এবং জনগনের কাছে খারাপ হিসেবে উপস্থাপন করার জন্য চেষ্টা করতেছে। জিয়াউর রহমান মহান স্বাধীনতার ঘোষক এবং প্রত্যক্ষ ভাবে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। এসব বক্তব্য দিয়ে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকাড় করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বক্তক্তব্য দিয়ে আলোচনায় থাকতে চায়। বিএনপি কখনো হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। এমন বক্তব্যের মাধ্যমে তারা জনগনের মধ্যে একটি ভিতি তৈরি করতে চাচ্ছে এবং তাদের নেতার্কীদের এ কথা বলে উৎসাহিত করতে চাচ্ছে।
সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যার বিষয়টা সম্পূর্ণ মিথ্যা। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক ছিলেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান করতেন। তারা সঠিক ইতিহাস জানে না বলেই এবং মুক্তিযোদ্ধদের উত্তেজিত করার জন্যই তারা এমন কথা বলছে। আওয়ামী লীগের ইতিহাসে আছে খুন করার, বিএনপির ইতিহাসে নাই। বিএনপিকে মোকাবেলা করতে তাদের নেতাকর্মীদের উৎসাহিত করার তারা এগুলো বলছে, এসব রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজি।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ হত্যার রাজনীতির সাথে জড়িত, তাদের জন্মই হত্যার মাধ্যমে। তারা সবাই সন্ত্রাসি কার্যের সাথে জড়িত। তারা ১৫ বছর দেশটাকে লুটেপুটে খেয়েছে, আরও খাওয়ার জন্য আপ্রান চেষ্টা করছে। তারা প্রপাকান্ড ছড়িয়ে তাদের নেতাকর্মীদের উৎসাহ দিচ্ছে। বিএনপি রাজপথে থাকবে এবং আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ যারাই রাজপথে থাকুক না কেন, আমরা তাদের রাজনৈতিক ভাবে মোকাবেলা করবো।