শুক্রবার, মার্চ ২১, ২০২৫
Led01অর্থনীতি

মার্কেট গুলোতে বাড়ছে ভিড়, সাধ্যের মধ্যে মিলছে না পছন্দের পোশাক

# সব ধরনের পোশাকের দাম আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে: ক্রেতা
# আগামী সপ্তাহে সবাই ঈদের বোনাস পেয়ে যাবে, তখন বিক্রি বাড়বে: বিক্রেতা

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে জমে উঠেছে ঈদের মার্কেটগুলো। দিন যত এগোচ্ছে ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতিও তত বাড়ছে, কিন্তু বিক্রি বাড়েনি। তবে পোশাক, কসমেটিকস ও জুয়েলারির দাম বেশি হওয়ায় বেচাকেনা একটু কম বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরের পর থেকে চাষাঢ়া, কালির বাজার ও ডিআইটি এলাকার মার্কেট ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, চাষাঢ়া, কালির বাজার ও ডিআইটি এলাকার মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের ভালো উপস্থিতি দেখা গেছে। ক্রেতা টানতে বাহারি ঈদ পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। চাষাঢ়া এলাকায় সমবায় মার্কেট, সান্তনা মার্কেট,মার্ক টাওয়ার, হক প্লাজা, সায়াম প্লাজাসহ ডিআইটি এলাকায় বিপণি বিতানগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি আগের চেয়ে বেড়েছে।

মার্কেটে আসা ক্রেতাদের অভিযোগ, সব ধরনের পোশাকের দাম আগের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। দোকানে দোকানে ঘুরেও অনেকে সাধ্যের মধ্যে মেলাতে পারছেন না পছন্দের পোশাক। জুতাসহ অন্যান্য পণ্যের ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ।

সমবায় মার্কেটে হিরা আক্তার নামের একজন ক্রেতা বলেন, গত বছর যে পাকিস্তানি পোশাকগুলো তিন থেকে সাড়ে তিন হাজারের মধ্যে কিনেছি, এবার সেই একই ধরনের পোশাক ৫ হাজার টাকা চাচ্ছেন। সবকিছুর দাম বেশি। যে কারণে বাজেট কাটছাঁট করতে হচ্ছে।

নিজের ও পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে আসা গলাচিপার বাসিন্দা সাগর কাজী বলেন, যে পোশাক গত বছর দেড় হাজার টাকায় কেনা যেত, এবার সেটা আড়াই-তিন হাজার টাকা। দাম বাড়ার ফলে এবার মানে ছাড় দিতে হয়েছে। যে কোয়ালিটি প্রত্যাশা করি, তার থেকে কম কোয়ালিটির কিনতে হচ্ছে। মধ্যবিত্তদের জন্য এবার কেনাকাটা কঠিন।

আরও কয়েকজন ক্রেতা বলেন, মেয়েদের পোশাকের দাম বেশি, ছেলেদের পাঞ্জাবির দাম রেঞ্জের মধ্যে থাকলেও শার্ট ও জুতার দাম অনেক বেড়েছে।

দাম বেশি ও কেনাকাটা পরিস্থিতি নিয়ে ডিআইটি মার্কেটের ব্যবসায়ী বলেন, সবকিছুর দাম বেড়েছে। পোশাকের ক্ষেত্রেও সেটা হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঈদের বাজারেও প্রভাব ফেলছে। যে কারণে বিক্রি কমেছে।

এবার ভারত যাওয়া বন্ধ আছে। সে কারণে প্রচুর বিক্রির প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু সবমিলে বিক্রি ভালো হলো না। এবার শাড়ির কেনাবেচার অন্যান্য বছরের তুলনায় অর্ধেকের চেয়েও কম।

তবে ভিড় দেখা গেছে রেডিমেড পোশাকের দোকানগুলোতে। স্টাইল ফ্যাশনের কর্ণধার বলেন, এ বছর রোজার শুরুতে বিক্রি কিছুটা কম থাকলেও এখন ভালো। খুব যে বেশি হচ্ছে সেটা নয়, অন্যান্য বছরের মতো হবে কি না সন্দিহান।

রিপন মিয়া নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, আগে যেমন এক শ্রেণির মানুষ হাতখুলে খরচ করেছে, তারা এখন নেই। এখন আবার নতুন নতুন ক্রেতা আসছে। কাস্টমারের বেইজ চেঞ্জ হচ্ছে। যে কারণে বিক্রি মিশ্র মনে হচ্ছে।

কয়েক দফা সোনার দাম বাড়ায় মার্কেটে জুয়েলারির বিক্রি ভালো দেখা যায়নি। বুধবার সকালেও একদফা সোনার দাম বেড়েছে। বিক্রি প্রসঙ্গে এক জুয়েলার্সের ব্যবসায়ী গৌরব ঘোষ বলেন, মানুষ সংসারের সব খরচ মিটিয়ে তারপর সোনা কেনে। এখন মানুষের হাতে সেই টাকা নেই, অন্যদিকে সোনার দাম বেড়ে যাচ্ছে। যে কারণে বিক্রি খুব কম।

অরুপ মোদক নামে এক কারিগর জানান, সার্বিক পরিস্থিতি জুয়েলার্সের জন্য খুব প্রতিকূল। অন্যান্য যে কোনো ঈদের চেয়ে বিক্রি একদম কম।

অন্যদিকে, এবার ঈদে পাঞ্জাবির ভালো বিক্রি দেখা গেছে। সান্তনা মার্কেটের এক ব্যবসায়ী বলেন, এ ঈদে পাঞ্জাবির বিক্রি খুব ভালো। সময় যত এগোচ্ছে ক্রেতার চাপ তত বাড়ছে।

ঈদের আগে শেষ সপ্তাহে (আগামী সপ্তাহ) বেচাকেনা প্রচুর বাড়বে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা। উজ্জ্বল মিল্লাত হোসেন নামের এক বিক্রেতা বলেন, আগামী সপ্তাহে সবাই ঈদের বোনাস পেয়ে যাবে। তখন বিক্রি বাড়বে। অনেকে বেতনও পেয়ে যাবে ঈদের আগে।

ভিড় দেখা গেছে জুতার দোকানগুলোতেও। চাষাঢ়া এক শোরুমের বিক্রয়কর্মী শুভ বলেন, আগের চেয়ে বিক্রি বেড়েছে। সামনে আরও বাড়বে আশা করছি।

ভিন্ন কথা বললেন কসমেটিকস বিক্রেতা সৌরভ হোসেন। তিনি বলেন, রোজার শেষ অংশে প্রতিদিন আগে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। সেখানে এখন ৮/১০ হাজার টাকার বিক্রি করতে পারছি না। পরিস্থিতি অনেক খারাপ। মানুষের হাতে টাকা নেই, ব্যবসা-বাণিজ্য খুব খারাপ। আগে একটা ব্যবসা করলে মানুষ লাভবান হইত, এবার লাভ করতে পারছে না। সবার অবস্থা খারাপ।

RSS
Follow by Email