মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষা প্রকল্পের জনবলকে রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে মানববন্ধন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে পরিচালিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীন ‘মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম (৮ম পর্যায়)’ প্রকল্পকে আউটসোর্সিংয়ের আওতামুক্ত রেখে রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। রবিবার (২৩ মার্চ) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে, নারায়ণগঞ্জ জেলা মাউশিক শিক্ষক কল্যাণ পরিষদের আয়োজনে ওই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রকল্পে কর্মরত শিক্ষক, কেয়ারটেকারসহ সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে চলমান এই প্রকল্পে কর্মরত জনবল আর্থিক ও পেশাগত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। প্রকল্পের ১ম ও ২য় পর্যায়ের জনবলকে ২০১৮ সালে রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও ৩য় থেকে ৭ম পর্যায়ের কর্মীরা আজও সেই সুবিধা পাননি। এতে করে ইনক্রিমেন্ট, টাইম স্কেল ও পদোন্নতি না থাকায় তাঁরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। প্রকল্প শেষে চাকরি হারানোর শঙ্কায় অনেকেই হতাশায় ভুগছেন।
মানববন্ধনে ৫ দফা দাবি উত্থাপিত করা হয়। সেগুলো হলো : প্রকল্পকে আউটসোর্সিংয়ের আওতামুক্ত রাখা, প্রকল্পের ৩য় থেকে ৭ম পর্যায়ের জনবলকে রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্ত করা, কর্মী ও কেয়ারটেকারদের স্কেলভিত্তিক বেতন প্রদান নিশ্চিত করা, শিক্ষকদের সম্মানী বাড়ানো এবং ঈদের আগে প্রকল্প অনুমোদন করে বকেয়াসহ বেতন ও ভাতা পরিশোধ করা।
বক্তারা আরও উল্লেখ করেন, ১৯৯৩ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্প দেশের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা, কুরআন শিক্ষা এবং নৈতিক মূল্যবোধ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে বর্তমানে প্রকল্পটিকে আউটসোর্সিংয়ের আওতায় নেওয়ার যে চিন্তা চলছে, তা বাস্তবায়িত হলে কুরআন শিক্ষা কার্যক্রম ধ্বংসের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা।
এছাড়া বক্তারা অভিযোগ করেন, দেশের ৯% হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমকে আউটসোর্সিংয়ের আওতামুক্ত রাখা হলেও দেশের ৯০% মুসলমানের কুরআন শিক্ষা প্রকল্পে এ ধরনের সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক। এতে আলেম-ওলামাদের মাঝে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেবে বলে তাঁরা হুঁশিয়ারি দেন।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞার হাতে একটি স্মারকলিপি তুলে দেন আন্দোলনকারীরা। স্মারকলিপিতে দ্রুত প্রকল্প অনুমোদন, বকেয়া পরিশোধ ও রাজস্বখাতে অন্তর্ভুক্তির জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মাওলানা মোহাম্মদ রেজাউল, মাওলা আলী জামে মসজিদের ঈমাম ও খতিব এবং প্রকল্পের শিক্ষক মাওলানা রহমতউল্লাহ বোখারী, হযরত কুতুবশাহ্ (রা.) জামে মসজিদের ঈমাম ও খতিব এবং প্রকল্পের শিক্ষক মাওলানা আবু বকর,হযরত বন্দর উপজেলা মডেল মসজিদের ঈমাম ও খতিব এবং প্রকল্পের শিক্ষক মাওলানা মফিজুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গণশিক্ষা কার্যক্রমের ফিল্ড সুপারভাইজার মাওলানা মহিউদ্দিন, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলার মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের সাথে জড়িত সকল শিক্ষক, মসজিদের ঈমাম, কেয়ারটেকার, ফিল্ড সুপারাইজার উপস্থিত।