মর্গ্যান গার্লস স্কুলে এন্ড কলেজে ক্রীড়া মিলনায়তনের উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক পুরস্কার বিতরণ ও নবনির্মিত সুলতানা কামাল ক্রীড়া মিলনায়তনের উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (৮ জুন) সকাল ১০টায় স্কুল প্রঙ্গনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির গভর্ণিং বডি ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম ওসমান বলেন, অনেকের অনেক চাহিদা আছে, চাহিদার কোন শেষ নাই। আবার অনেকের সাথে অনেকের ঝগরা আছে, ঝগরারও কোন শেষ নাই। আনোয়ার ভাইয়ের সম্পর্কে আমার দুলাভাই হয়। দুলা ভাই এর সাথে নির্বাচনের সময় অনেক কথা কাটাকাটি হয়েছে, এগুলো হয়। যে কোন ভাবে হারাম খাওয়া, জমি দখল করা, মানুষের ক্ষতি করা, এই সমস্ত বিচার এখানেই হবে। আনোয়ার ভাইকে আমি অনেক শ্রদ্ধা করি, আমি তার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।
এসময় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ইভটিজিং এর অভিযোগ শুনে সেলিম ওসমান বলেন, এর পরে যদি এমন কোন ঘটনা ঘটে, তোমরা পুলিশের আশায় বসে থাকবে না। তোমরাই বের হয়ে যাবে রাস্তায়। ওদের ধরে যুতা পেটা করবা। তোমরা যদি ঘরে হাত গুটিয়ে বসে থাকো, তাহলে কোন সমস্যার সমাধান হবে না। আমি জানি না আমার প্রশাসন কেন এই বিষয়টা দেখছে না। এই কাজটা হচ্ছে পুলিশের, আমার না, আমার মেয়রের না। আমি পুলিশকে অনুরোধ করলাম, এই যে বাচ্চাদের কষ্ট, এই থেকে এদের উদ্ধার করেন। না হলে আমরা আপনাদের বিরুদ্ধে কথা বলবো। আমাদের বাচ্চারা ভালো মতো স্কুলে যেতে পারবে না, আর নারায়ণগঞ্জে একটি এসপি অফিস থাকবে, একটা থানা থাকবে; এটা হতে পারে না। প্রয়োজনে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, যে আমার বাচ্চাদের যাতে স্কুলে যেতে কোন সমস্যা না হয়। নারায়ণগঞ্জ থানার ওসিকে অনুরোধ করবো, স্কুলে ঢোকার সময় এবং স্কুল থেকে বের হওয়ার সময় আপনার পেট্রোল টিম যাতে বাচ্চাদের নিরাপত্তা দেয়; সেই ব্যবস্থা করেন।
তিনি আরও বলেন, স্কুলের উন্নয়নের বিষয়ে সেলিম ওসমান বলেন, আমি আনোয়ার ভাইকে নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে যাবো। প্রয়োজনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবো। আমি স্কুলের বাইরের দোকান গুলোর বিষয়ে মাননীয় মেয়র মহোদয়ের কাছে অনুরোধ করবো, যাতে এগুলোর বিষয়ে তিনি কিছু একটা ব্যবস্থা নেন। এখানে একটি জেনারেটর আছেম যার শব্দে আমার বাচ্চাদের নাকি পড়তে কষ্ট হয়। আমি স্কুল কমিটিকে বলবো আপনারা এর একটি ব্যবস্থা করেন নয়তো নতুন আনে। প্রয়োজনে আমি এবং আমার ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এতে আপনাদের সহযোগীতা করবো। প্রতিটা বাচ্চাকে আমি আমার নাতি-নাতনির মতো ভালোবাসি। তোমরা যদি ভালো হও তাহলে তোমরাই পারবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বানাতে।
তিনি বলেন, আমাদের একটি বদ অভ্যাস আছে। আমরা একজনের পেছনে আরেকজন লেগে থাকি। ইদানিং স্কুল কমিটি করার জন্য মামলা-মোকাদ্দমা হয়। অনেকে মামলা মোকাদ্দমা করেন। রিকোয়েস্ট করলেও শুনেন না। আপনি যেই হন না কেন, আপনি আসেন। স্কুল কমিটিতে থাকতে হলে আসেন বসে, কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জের গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা বসে তার পরে একটি কমিটি করে দেওয়া হবে। যে কোন উপায়ে হক, মর্গ্যান স্কুলকে আমি ভালো জায়গায় আনবো। এখানে এসে আমি যখন রেজাল্ট দেখলাম, তখন আমার ভালো লাগলো না। আমার চাওয়া আমাদের বাচ্চারা যাতে ভালো রেজাল্ট করে। শিক্ষকদের বলবো, কমিটিতে কে থাকবে কে থাকবে না, সেটা আপনাদের দেখার বিষয় না। আপনাদের কাজ হচ্ছে, শিক্ষিত মানুষ তৈরি করা। কামিটি যেটা ছিলো সেটাই থাকবে। এর মধ্যে কোন পরিবর্তন হবে না। হাই স্কুল, নারায়ণগঞ্জ কলেজ ও মর্গ্যান স্কুল; এখানে আমরা কোন রকমের বাজে লোক ঢুকতে দিবো না।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ভালো লেখেন খারাপ লেখেন, ব্যবসার অবস্থা খারাপ, অর্থনৈতিক অবস্থা সারা বিশ্বে খারাপ; অনুগ্রহ করে মিথ্যা কথা লিখবেন না। খারাপ করলে খারাপটাই লিখেন ততে, বানানো কথা লিখবেন না। দয়া করেন আমার প্রতি, দয়া করেন নারায়ণগঞ্জের মানুষের প্রতি।
আনোয়ার হোসেন বলেন, এই স্কুল অনেক ঐকিহ্যবাহী একটি স্কুল। এই স্কুলের উন্নয়ন নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিলো। যা আমি আস্তে আস্তে পুরণ করতে পারছি। দুইটি চার তলা ভবন আট তলা করা হয়েছে। এখানে আবার ক্রীড়া মিলনায়তন করা হয়েছে। আরও অনেক কিছু হবে। স্কুলের সামনের ফুটপাতে অনেক দোকান রয়েছে, যাতে আমাদের শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে ও যেতে সমস্যা হয়। তাই আমি সিটি কর্পোরেশনের মেয়রকে অনুরোধ করবো এই বিষয়টি একটু দেখতে। স্কুলের অনেক উন্নয়ন হয়েছে এবং হবে। তবে, আমাদের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষায়। তাদের বাবা-মায়েরা খুব কষ্ট করে উপার্জনের টাকায় তাদের বেতন দেন। শিক্ষার্থীরা যাতে আরও বেশি করে জিপিএ-৫ পেতে পারে আপনারা সেই দিকে লক্ষ্য রাখুন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মোদাচ্ছেরুল হক দুলাল, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের গভর্ণিং বডির সদস্য এস এম আহসান হাবিব, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান মনির, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুল হাসান মুন্না, নারায়ণগঞ্জ কলেজের উপাদক্ষ ড. রুমন রেজা প্রমুখ।