রূপগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানকে হুমকির প্রতিবাদে আ.লীগ নেতাদের মানববন্ধন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: রূপগঞ্জের দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর মাস্টারকে হত্যার হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ছেলে গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা তাকে প্রকাশ্যে এই হুমকি দেন।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) সকালে উপজেলার এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের লালমাটি এলাকায় উপজেলা আওয়ামী লীগসহ দাউদপুর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ এই কর্মসূচি পালন করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শাহজাহান ভূইয়া, কাঞ্চন পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মশিউর রহমান তারেক, দাউদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আফাজ খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক কামাল হোসেন কমল, উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. ফয়সাল আহমেদ, কার্যকরী সদস্য আব্দুল মান্নান, করিম হোসেন, নবী হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক ওবায়দুল মজিদ জুয়েল, যুবলীগ নেতা মোশারফ হোসেন ভূইয়া, নাদিম ভূইয়া, রিটন প্রধান, সাখাওয়াত হোসেন রাজিব, ছাত্রলীগ নেতা আশিকুল ইসলাম খোকনসহ অনেকে।
চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জাহাঙ্গীরের দাবি, মন্ত্রী গাজী রূপগঞ্জে তার পরিবারতন্ত্র কায়েম করতে চাচ্ছে। এক্ষেত্রে চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম তাদের পথের কাটা। আর এজন্যই মন্ত্রী পুত্র তাকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।
মানববন্ধনে চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, ‘সব স্থানে গাজী পরিবারের ছবি থাকা নিয়ে আমি একটা প্রশ্ন করেছিরাম। সেই থেকে তারা মনে করে, আমাকে এবং আমার সাথের কিছু নেতাকর্মীকে যদি শেষ না করে দেয়া যায় তাহলে তাদের পরিবারতন্ত্র থেকে একটি অংশ আলাদা থাকবে। আমি থানায় গিয়ে অভিযোগ করেছি, যদি আমি অপরাধী হই তাহলে আমি আইনের কাঠগরায় দাড়াবো। আর যদি গাজী বা গাজীর পোলা অথবা অন্য কেউ অপরাধী হয়ে থাকে, তাহলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেন। নয়তো আমরা বাধ্য হবো রাজপথে নামতে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে এটি মামরা হবে নয়তো আমরা নাজপথে নেমে আমাদের অধিকার আদায় করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই গাজী পুত্র (পাপ্পা) এক বছর ধরে হুমকি-ধামকি দিয়ে বিভিন্ন জনের নামে মন্তব্য করে। তিনি (মন্ত্রী গাজী) মন্ত্রী পাশাপাশি রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, তার ছেলে সহ সভাপতি, তার বউ উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র। এই গাজী পরিবার, পরিবারতন্ত্রের সর্বচ্চ পর্যায়ে তারা চলে গেছে।’
শাহজাহান ভূইয়া বলেন, পাপ্পা গাজীর কথা শুনে সবাই বলছে, এই ছেলেটাকি পাগল হয়ে গেছে। আজ পিতা, ছেলে বাপ যেভাবে রূপগঞ্জের মানুষের হাতে পায়ে ধরতেছে; তাদের দরকার হলো ক্ষমতা। যখন তিনি এখানে আসছেন মাত্র সারে তিন বিভা জমির মালিক তিনি (মন্ত্রী গাজী) ছিলেন। আজ উনি কয় হাজার বিঘা জমির মালিক হয়েছে? কোথায় পেলেন এত টাকা? বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি থেকে চাঁদাবাজি. মানুষের জমিতে বালু ভরাট এভাবেই উনি এসব পেয়েছেন। উনি ভালো করে জানেন, ক্ষমতা থেকে গেলে উনার সম্পত্তির দায়ভার ওনাকেই নিতে হবে। যার জন্য পুরো পরিবার পাগল হয়ে গেছে, কাকে কি বলবে।
তিনি আরও বলেন, মানুষের একটা ধৈর্যের সিমা আছে। সামনে যদি কোনদিন এধরণে ঔদ্ধত্য আচরণ করে, তাহলে যেখানেই আমাদের যাওয়া প্রয়োজন আমরা যাবো। প্রশাসন যদি ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে সেটা কিভাবে নিতে হবে সেটাও আমাদের জানা আছে। আমরা হুমকি-ধামকিতে বিশ্বাসি না। আমাদের ব্যবস্থা যে কত কঠিন তারা দেখে নাই। আপনি (মন্ত্রী গাজী) সংযত হয়ে যান, আপনার পরিবারেরর সদস্যদেরও বলে দেন। তাহলে এই রূপগঞ্জের মাটিতে আপনাদের স্থান হবে নয়তো হবে না।
উল্লেখ্য, গত ৯ নভেম্বর দাউদপুর ইউনিয়নে রংধনু গ্রুপের উদ্যোগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে বক্তব্য দেয়ার এক পর্যায়ে এই হুমকি দেন বলে জানান জাহাঙ্গীর মাস্টার।