ভোট দিয়ে ভূমিদস্যুদের প্রতিহত করুন: মেয়র প্রার্থী বাদশা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারণা শেষ। ২৬ জুন ইভিএম পদ্ধতি ভোট গ্রহণ। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে সকল ধরণের প্রস্তুতি শেষ করেছে ইসি। রিটার্নিং কর্মকর্তার আশ্বাসের পরও ভোটারদের সন্ত্রাস আতঙ্ক কাটছে না। প্রার্থীরা করছে অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ।
প্রতিরাতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা মহড়া দিচ্ছে। মেয়র প্রার্থী রফিক, তার ভাই শফিক, মোগল বহিরাগত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য নিশি রাতে অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে । এই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন মোবাইল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী দেওয়ান আবুল বাশার বাদশা। সোমবার (২৪ জুন) মোবাইল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী দেওয়ান আবুল বাশার বাদশা এ দাবি জানান ।
এর আগে তিনি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চান। কাঞ্চনে এখন তার পক্ষে গণজোয়ার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এলাকার সাধারণ মানুষ তার পক্ষে মাঠে নামছে। শিল্পপতি আর খেটে খাওয়া মানুষের প্রথম পছন্দ বাদশা। গাজী পরিবারও তাকে সমর্থন দিয়েছে।
বাদশা সাংবাদিকদের বলেন, নিশি রাতে বহিরাগত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে রফিক ও তার ভাই শফিক, মোগল অস্ত্রের মহড়া দিয়ে ভোটারদের মাঝে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। হিন্দু ভোটারদের অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। আমার লোকদের হুমকি দিচ্ছে। রাতে কালো গাড়ি নিয়ে শফিকের বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী ঘুরে বেড়াচ্ছে । তার কাছে সব সময় অস্ত্র থাকে। রফিক ও তার লোকজন গভীর রাতে টাকা দিয়ে ভোট কিনার চেষ্টা করছে। ভোটের দিন রফিকের সন্ত্রাসী বাহিনী ভোট কেন্দ্রে হামলা, ভাংচুর, কেন্দ্র দখল করতে পারে। প্রশাসনকে আমি নজরদারি বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছি।
বাদশা বলেন, মোবাইল ফোন বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। আমার প্রতিপক্ষ আমার লোকজন সহ ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। প্রশাসনের কাছে আমি এর প্রতিকার চাই। আমার কোন সন্ত্রাসী বাহিনী নাই। এবারের নির্বাচন কাঞ্চন থেকে ভূমিদস্যুদের প্রতিহত করার নির্বাচন। আপনারা আমাকে ভোট দিয়ে ভূমিদস্যুদের প্রতিহত করুন। আমি কারও জমি দখল করি নাই। রফিকের দ্বারা যারা জমি হারিয়েছে আমি নির্বাচিত হলে তা ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো। কাঞ্চনের জনগণ আমার শক্তি। রফিক ৪ টা হত্যা মামলার আসামি। আমি ১০ বছর চেয়ারম্যান এবং ৫ বছর মেয়র ছিলাম, আমার দ্বারা কোন লোক নির্যাতিত হয় নাই । রফিকের বিরুদ্ধে অস্ত্র, সন্ত্রাসী, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। গত ৫ বছর ধরে তার ভাই মুঘল ও শফিকসহ তাদের লোকজন এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ইতোপূর্বে তাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ১০০ দেশী ও বিদেশী অস্ত্র উদ্ধার করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। সমস্ত এলাকায় তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর কারণে মানুষ শান্তিতে বাস করতে পারছে না। অস্ত্রের মুখে অনেক নিরীহ মানুষের সম্পত্তি দখল করেছে। তারা রাতের বেলায় যেসব কালো গ্লাসের গাড়িগুলো ব্যবহার করে, সেসব গাড়িতে পুলিশ তল্লাশি করলে অস্ত্র পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস’, বলেন মেবাইল ফোন প্রতীকের প্রার্থী।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে রিটার্নিং অফিসার, জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার, থানা পুলিশসহ সবাইকে লিখিতভাবে অবগত করলেও উল্লেখযোগ্য কোনো তৎপরতা দেখতে পাচ্ছেন না।
ভোটাররা ভয় পাচ্ছে। ধীরে ধীরে তারা ভীত হয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনের দিন হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে। আমি নিজেও কিছুটা আতঙ্কিত’, যোগ করেন দেওয়ান আবুল বাশার।
তবে, প্রশাসন একটি সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নেবে বলে বিশ্বাস এ প্রার্থীর।
তিনি বলেন, ‘দু-একদিনের মধ্যে প্রশাসনের পদক্ষেপ কেমন হয় তা বলে দিবে ভোটের দিনের পরিস্থিতি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগেও আমি ছয়টা নির্বাচন করেছি, এটি আমার সপ্তমবার। আমি যেখানেই যাচ্ছি লোকজন আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন। জনগণের ভাষা আমি বুঝি। তাদের পক্ষ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।’
পরিবেশ শান্তিপূর্ণ থাকলে ৮০ শতাংশ ভোটার কেন্দ্রে উপস্থিত হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে এ মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘এই স্থানীয় নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী যেমন আছে কাউন্সিলর প্রার্থীও আছে। সুতরাং ৮০ শতাংশ ভোটার কেন্দ্রে উপস্থিত হবে বলে আমার ধারণা। কিন্তু ভয়ভীতি দেখালে এই সংখ্যা কমতে পারে। প্রশাসন তৎপর হলে এবং ভোটরদের যদি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দিবে- এমন আশ্বস্ত করতে পারলে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যাবে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এমায়েত হোসেন,কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলি, রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. ফয়সাল আহম্মেদ।
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে কাঞ্চন পৌরসভার ১৯টি ভোট কেন্দ্রে ৪০ হাজার ৭৯৮ জন ভোটার ভোট দিবেন। এ নির্বাচনে ২জন মেয়র, ২৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।