ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তার টানতে গিয়ে সড়ক হলো সংকীর্ণ, নগরবাসীর চরম দুর্ভোগ
# ‘সড়কের প্রায় ৪০ ভাগ চলাচলের অযোগ্য হয়ে আছে’
# এক সপ্তাহের মধ্যে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে: ডিপিডিসি
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: মাটির নিচে বৈদ্যুতিক তার নিতে সড়কের একাংশ ড্রিলিং করে কাটা হয়েছে। বৈদ্যুতিক তারের কয়েল ও ভারী যন্ত্রাংশ এবং মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থে কাটা অংশের চারপাশে দেওয়া হয়েছে বেষ্টনী। এর কারণে সড়ক হয়েছে সংকীর্ণ। বাস, ট্রাক, অটোরিক্সা, রিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল হচ্ছে ধীর গতিতে। মাঝে মধ্যেই যানবাহনের চাপে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে বেশ দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা।
এই ছিল চাষাড়া থেকে সিদ্ধিরগঞ্জের দিকে সলিমুল্লাহ সড়কের অবস্থা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিপিডিসির ‘জিটুজি’ প্রকল্পের আওতায় চানমারির সাব স্টেশন থেকে ভূগর্ভস্থ তার এনে খানপুরের অপর সব স্টেশনে যুক্ত করা হবে। সেপ্টেম্বর থেকে চানমারী থেকে লিঙ্ক রোডের পাশে মাটি কেটে ভূগর্ভস্থ তার সংযোগের ব্যবস্থার কাজ শুরু করা হয়। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন অংশে বৈদ্যুতিক তার যুক্ত করে, বালু ও মাটি দিয়ে গর্ত বা কাটা অংশ ভরাট করা হয়।
রবিবার (২৭ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাষাড়া বাগে জান্নাত মসজিদ পেরিয়ে মিশনপাড়া হয়ে সলিমুল্লাহ সড়কের এক পাশ দিয়ে ভারী যন্ত্রাংশের মাধ্যমে খনন কাজ করা চলছে। এতে ১৩২/৩৩/১১ কিলো ভোল্ট ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তার টানার জন্য ডিপিডিসির কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন। ভোর সকাল থেকে দুপুরের আগ পর্যন্ত এবং গভীর রাতেও কাজ হচ্ছে বলে জানান কর্মীরা। সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তা ও যন্ত্রাংশ রাখার জন্য সড়কের একটি অংশ নিয়ে বেষ্টনী দেওয়া হয়েছে। এর ফলে, সলিমুল্লাহ সড়কটি যাতায়াতের জন্য বেশ সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। অটো রিক্সা, প্রাইভেট কার, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন ধরণের যান ধীর গতিতে চলাচল করছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা জানান, রাস্তা কাটার পর এই সড়কটিতে যাতায়াত করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা। সাব্বির নামে এক দোকানদার লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, রাস্তার প্রায় ৪০ ভাগ চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। এই রাস্তায় বিকেল থেকে যানবাহনের বেশ চাপ দেখা যায়। রাত ৯টা পর্যন্ত প্রচুর চাপ থাকে এই সড়কে। বাস, ট্রাকের মতো বড় গাড়ী কয়েকটা একসাথে এখান দিয়ে গেলে রাস্তা আটকে যায় প্রায়ই।
সাইদুল ইসলাম নামে এক যাত্রী জানান, সেপ্টেম্বরের দিকে চানমারি, চাষাড়ার দিকে রাস্তা কাটা দেখেছিলাম। এখন মিশনপাড়ার দিকে এই বেহাল দশা দেখছি। কারেন্টের লাইনের কাজ হচ্ছে শুনেছি। কিন্তু সড়কের বিশাল অংশ চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে আছে। যানবাহনে এখান দিয়ে অনেক আস্তে চলাচল করে, প্রচুর সময় নষ্ট হয়। রাশ আওয়ারের সময়ে সহজেই জ্যাম বাধে। এই কাজের সাথে জড়িত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আমাদের অনুরোধ, দ্রুত রাস্তার কাজ শেষ করুন।
এদিকে, এক সপ্তাহের মধ্যে এই সড়কটিতে যাতায়াতে দুভোর্গ দূর হবে বলে জানিয়েছে ডিপিডিসি। ডিপিডিসি নারায়ণগঞ্জ দক্ষিণ বিভাগের উপ প্রকৌশলী (এসএই) মাহফুজুল ইসলাম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সলিমুল্লাহ সড়কটিতে যাতায়াত স্বাভাবিক হবে।
তিনি জানান, ডিপিডিসির জিটুজি প্রকল্পের আওতায় নারায়ণগঞ্জে ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক ক্যাবল এর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন অঞ্চলে পর্যায়ক্রমে ভূগর্ভস্থ ক্যাবল টিউনিং করছি। চানমারিতে ডিপিডিসির সাব স্টেশন করা হচ্ছে। খানপুর এলাকায় আরেকটি একটি সাব স্টেশন রয়েছে। এই দুই স্টেশনকে ভূগর্ভস্থ লাইন দিয়ে সংযোগ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই মিশনপাড়া, ডনচেম্বার এলাকায় পুরোদমে কাজ হচ্ছে। কাজ শেষ হলেই আমরা সড়ক ভরাট করবো। এলাকাভেদে ডিপিডিসির পক্ষ থেকে সড়ক ও জনপথ, সিটি কর্পোরেশনকে সড়ক মেরামতের জন্য ড্যামারেজ বা অর্থ দেওয়া হয়েছে। উনারাই সড়ক মেরামত করবেন। আশা করছি, এক সপ্তাহের মধ্যে খানপুর পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ তার সংযোগের কাজ সম্পূর্ণ হবে ও এই সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে।