ভারতের পানির ঢলের কাছে দেশের মানুষ হেরে যেতে পারে না: গণসংহতি আন্দোলন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে বন্যাকবলিত মানুষের সহায়তায় ক্রাউড ফান্ডিং করা হয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর সমন্বয়ক তরিকুল সুজন ও নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব এক যৌথ বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এ সময় এতে উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস, মহানগর কমিটির সমন্বয়কারী নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব, দফতর সম্পাদক মোঃ ইব্রাহীম, জেলা কমিটির সিনিয়র সদস্য আলমগীর হোসেন আলম, প্রচার সম্পাদক শুভ দেব, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন জেলার সাবেক সভাপতি ইলিয়াস জামান সহ ছাত্র নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিতে বলেন, আমরা দেখছি যে, কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও খাগড়াছড়িসহ ১২টি জেলা ভয়াবহভাবে বন্যাকবলিত। গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণ এবং ভারত বাঁধ খুলে দেয়ার কারণে সেখান থেকে আসা উজানের পানি এ ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি করেছে। শহররক্ষা বাঁধগুলো ভেঙে যাওয়ায় পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। বর্তমানে এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে প্লাবিত জেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ অবস্থান করছেন। এদেরকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া এখন প্রাথমিক ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আমরা যত দ্রুত সম্ভব বন্যায় আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করে তাদের নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা এবং খাদ্য ও চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানাচ্ছি।
বাংলাদেশের পূর্ব সীমান্তবর্তী ১২ টি জেলার ওপর দিয়ে যে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখা গেল, তা নজিরবিহীন। গত ৩ দশকে এই অঞ্চলে এ রকম বন্যা আর হয়নি। মৌসুমের শুরু, মধ্য কিংবা শেষে সাধারণত সিলেট অঞ্চল ও উত্তরবঙ্গে একাধিক বন্যা হয়ে থাকে। কিন্তু এবার পূর্ব সীমান্তের ১২ টি জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বন্যা যে তাণ্ডব তৈরি করলো তাতে ১৮ জনের প্রাণহানি ছাড়াও ৫০ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
বন্যার তোড়ে বহু ঘরবাড়ি, মাছের খামার, গবাদি পশু, গাছপালা ও শস্য ভেসে যায়। এই মুহুর্তে জরুরি হলো বন্যাদুর্গত মানুষগুলোকে উদ্ধার করা, শুকনো খাবার পৌঁছানো, শিশু খাদ্য পৌঁছানো, জরুরি চিকিৎসা সামগ্রীসহ জামা-কাপড় পৌঁছানো। সেই সাথে পানি নেমে গেলে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি আমাদের আহ্বান, বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ার সঙ্গে পানিবাহিত রোগবালাই বাড়ে এবং রোগবালাই যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় যথাযথ উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে।
নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রতি আমাদের আহ্বান, আমার-আপনার-আমাদের ন্যূনতম সহযোগিতা বানভাসী মানুষকে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবার সাহস জোগাবে। পানির কাছে, বন্যার কাছে, ভারতের পানির ঢলের কাছে দেশের মানুষ হেরে যেতে পারে না। তাই যে যেটুকু পারেন, সেই সহযোগিতাটুকু বানভাসী মানুষের কাছে পৌঁছে দেবার আহ্বান জানাই। বানবাসী মানুষের আর্তনাদ, নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত পৌছেছে। নারায়ণগঞ্জবাসী সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এই বার্তা আমরা দেশবাসীর কাছে, বানভাসীর কাছে পৌঁছে দিতে চাই।