শনিবার, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪
ক্রীড়াজেলাজুড়েসিদ্ধিরগঞ্জ

বৈষম্যমুক্ত জেলা ক্রীড়া সংস্থা গড়ার দাবিতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ‘বৈষম্যমুক্ত জেলা ক্রীড়া সংস্থা’ গড়ার দাবিতে খেলোয়ার ও ক্রীড়া সংগঠকদের এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫ টায় তল্লায় অবস্থিত মডেল গার্মেন্টস এর সম্মেলন কক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বক্তারা বলেন, গত পনেরো বছরে নারায়ণগঞ্জে কোনো ফুটবল লীগ হয়নি। ফুটবল ক্রিকেটে নতুন একজনও খেলোয়ার জাতীয় দলে সুযোগ পায়নি। নতুন ষ্টেডিয়াম তৈরীর বদলে পুরনো ষ্টেডিয়ামের জায়গা এওয়াজ বদল করে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। বাংলার ম্যারাডোনা সম্রাট হোসেন এমিলির জুনিয়র পনেরোজন খেলোয়ার জাতীয় পুরস্কার পেলেও এমিলিকে দেয়া যায়নি কারণ নারায়ণগঞ্জ থেকে ঐ পরিবারের বিরোধীতার কারণে এমিলির নাম পুরস্কারের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়নি। নারায়ণগঞ্জের ক্রীড়া জগতকে পুনরুজ্জীবিত করতে গডফাদার পরিবারের ছায়াবিহীন লোকজন নিয়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থা পুনর্গঠনের দাবী জানান তারা।

অনুষ্ঠিত এ সভায় উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি ও ঢাকা মেট্রোপলিস ক্রিকেট কমিটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুজ্জামান, সাবেক জাতীয় ফুটবলার সম্রাট হোসেন এমিলি, গোলাম গাউস, আমান উল্লাহ, জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক ক্যাপ্টেন কাজী নজরুল ইসলাম, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসির সহ-সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদ, শহীদ হোসেন স্বপন, মোঃ সুজন ভ‚ইয়া, ইসাল উদ্দিন ঈসা, মোহাম্মদ জন, নাজমুল হাসান মিঠু, ক্রিকেটার রেজাউল করিম লিটন, আলমগীর হোসেন, রিয়াজ উজ জামান সুমন, আমিনুর রহমান তনু প্রমুখ।

সভায় ক্রিকেটার আলমগীর হোসেন আলম বলেন, গত পনেরো বছর নারায়ণগঞ্জের ক্রীড়াঙ্গনে কোনো জবাবদিহিতা ছিলো না। ফুটবল লীগ হয়নি। ক্রিকেট হয়েছে লোক দেখানো। একজন উঠতি প্লেয়ারের বছরে ২০ টা স্থানীয় পর্যায়ের ম্যাচ খেলার দরকার হয়। সেখানে ম্যচ সাতটা হতো। টিম করতে দেয়া হতো না। টিম হতো তাদের ইচ্ছেমতো। পয়েন্ট ভাগাভাগিতে বাধ্য করা হতো। এসময়ে কোনো নতুন প্লেয়ার উঠে আসেনি। জাতীয় দলে যেতে পারেনি। অথচ আগে প্রতিটা জাতীয় দলে নারায়ণগঞ্জের কমপক্ষে ৩-৪ জন প্লেয়ার থাকতো।

জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক ক্যাপ্টেন কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ক্রিকেটের চাইতেও ভয়াবহ অবস্থা নারায়ণগঞ্জ ফুটবলের। পনেরো বছরে কোনো ফুটবল লীগ হয়নি। ফুটবলারদের পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়নি। তারা খেলা ছেড়ে কেউ গার্মেন্টসে কেউ অন্য কোনো কোথাও চলে গেছে। নারায়ণগঞ্জে মাঠের তীব্র সংকট। নতুন মাঠ তৈরী করা হচ্ছে না। নারায়ণগঞ্জের মাঠের জন্য বরাদ্দ করা টাকা কুমিল্লায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অথচ সামান্য প্রতিবাদও কেউ করেনি।

সাবেক জাতীয় ফুটবলার নাজমুল হাসান মিঠু বলেন, আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে জাতীয় পর্যায়ের প্রতিটি দলে ৭-৮ জন প্লেয়ার থাকতো। আর গত পনেরো বছরে একজনও জাতীয় দলে সুযোগ পায়নি। নতুন স্টেডিয়াম তৈরী হয়নি। উল্টো ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামের জায়গা এওয়াজ বদল করে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। সেখানে দশ তলা বিল্ডিং হয়েছে। একটা পূর্নাঙ্গ স্টেডিয়াম করতে ৯ একর জায়গা লাগে। আমাদের পৌনে নয় একর জায়গা ছিলো। অথচ সে জায়গা তছনছ করে ফেলা হলো।

কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা ক্রীড়া সংস্থার এমন নতুন কমিটি চাই যেখানে গডফাদার পরিবারের ছায়া থাকবে না।
জাকির হোসেন বলেন, জেলা ক্রীড়া সংস্থা গত পনেরো বছর শুধু ক্রিকেটের কাজ করেছে। আমরা আশা করি আগামীতে নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মাসুদুজ্জামান ক্রীড়া সংস্থার দায়িত্ব নেবেন। এবং এটি ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, দাবা, হাডুডু, জিমন্যাস্ট, এথলেটিক্স, সাতারসহ সব ইভেন্টের পৃষ্ঠপোষকতা করবে। খেলোয়ারদের তাদের সর্ব্বোচ্চ যোগ্যতা প্রমানে সহায়তা করবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি মাসুদুজ্জামান বলেন, কাউকে কোনো পদে বসানোর জন্য আজকের সভা না। আমি চাই গত পনেরো বছর নারায়ণগঞ্জের ক্রীড়া জগতে যাদের অবদান রয়েছে বিশেষ করে রিয়াজ উদ্দিন আল মামুনের মতো লোক থাকুক। জাহাঙ্গীর মোল্লার পক্ষে বিপক্ষে কিছু কথা আসছে তবুও সে কমিটিতে থাকুক কারন সে খেলার জন্য কাজ করেছে। আর এটা খুব সত্যি জেলা ক্রীড়া সংস্থার নতুন কমিটি প্রয়োজন। আমাদের নতুন খেলার মাঠ প্রয়োজন। খেলোয়ারদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। আমরা স্বপ্নবাজ লোক চাই। তাদের স্বপ্নকে এগিয়ে নেয়া আমাদের কাজ। আমরা জাতীয় দলে ঈর্ষনীয় ভাগ বসাতে চাই।

RSS
Follow by Email