সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
জেলাজুড়েরাজনীতিসিদ্ধিরগঞ্জ

বৃহস্পতিবার পথশিশু-বৃদ্ধদের মাঝে উপহার দিবেন এমপি সেলিম ওসমান

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: পথশিশু ও ভিক্ষুকদের আশ্রয়স্থল সিদ্ধিরগঞ্জের সরকারী আশ্রয় কেন্দ্র। সরাকারীভাবে পরিচালিত এ আশ্রয়স্থলে ছোট্ট শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়সের অনেকেরই মাথা গোজার ঠাই হয়েছে। অভিভাবকহীন অনেক পথশিশু এখানে থেকেই খাওয়া দাওয়া, লেখাপড়া এবং প্রশিক্ষন পেয়ে থাকেন। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় সরকারী অর্থ বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। তাই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে আশ্রয় কেন্দ্র একবার হলেও ঘুরে দেখার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

জেলা প্রশাসনের আমন্ত্রনে সারা দিয়ে ১৪ জুলাই (রবিবার) দুপুরে সরেজমিনে প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও ব্যবসায়ী নেতা এ.কে.এম সেলিম ওসমান। এ সময় অবস্থানরত বৃদ্ধ ও শিশুদের সাথে বেশ সময় কাটান। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটির উপ সহকারী পরিচালক মীর মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান এর সাথে আলোচনা করে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত সংস্কারে কি কি প্রয়োজন তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এ সময় তিনি আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা বৃদ্ধ ও শিশুদের সাথে নানা বিষয়ে কথাবার্তা বলেন। তাদের খাবার সহ তারা পড়ালেখা করতে ইচ্ছুক কিনা, কি ধরনের কাজে তাদের আগ্রহ রয়েছে এসব বিষয়ে তাদের সাথে খুটিনাটি আলাপ করেন সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান।

এ সময় তিনি শিশুদের কাছে জানতে চান তাদেরকে এমপি সেলিম ওসমান একদিন রান্না করে এনে খাওয়াবে, তারা কি খেতে চায়। শিশুরা এমপি সেলিম ওসমানকে বলেন তারা খাঁসির মাংস দিয়ে ভাত খেতে চায়। সেই মোতাবেক আগামী বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) রাতে এমপি সেলিম ওসমান তাদেরকে রান্না করা খাবার নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সাথে তাদেরকে একসেট করে নতুন পোশাক উপহার দিবেন বলেও জানান। এ সময় শিশুরা খুশিতে হাততালি দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে।

নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাকে এখানে এসে দেখার জন্য আমন্ত্রন জানিয়ে ছিলেন। আমি ওনার আমন্ত্রনে এখানে এসেছি। ঘুরে দেখেছি। বাচ্চাদের সাথে কথা বলেছি। ওদের জন্য আমি আগামী বৃহস্পতিবার রান্না করা খাবার ও শিশুদের জন্য একসেট প্যান্ট ও শার্ট এবং বৃদ্ধদের জন্য একটি লুঙ্গি ও শার্ট উপহার হিসেবে নিয়ে আসবো। যেহেতু এলাকাটি আমার সংসদীয় আসনের আওতাভুক্ত নয়। সেহেতু এখানে সরকারী ভাবে কিছু করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু আমি একজন ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে ব্যবসায়ী সংগঠন গুলো এবং ব্যবসায়ীদের সহযোগীতা নিয়ে আমি প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত সংস্কার করার চেষ্টা করবো।

সরকারী আশ্রয় কেন্দ্রের উপ সহকারী পরিচালক মীর মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান জানান, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে ১১৫ জন পথ শিশু ও ৪০ জন বৃদ্ধ ভিক্ষুক রয়েছে। শিশুদের মধ্যে বুদ্ধি ও মানসিক প্রতিবন্দী ২৭জন, বাক ও শ্রবন প্রতিবন্দী ১৪ জন এবং শারিরীক প্রতিবন্দী ১৯ জন। বৃদ্ধ ভিক্ষুকদের মধ্যে বুদ্ধি ও মানসিক প্রতিবন্দী ১০ জন, বাক ও শ্রবন প্রতিবন্দী ৬জন, শারিরীক প্রতিবন্দী ৭জন রয়েছে।

আশ্রয় কেন্দ্রের সবাইকে ৪ বেলা খাবার দেওয়া হয়ে থাকে। এর মধ্যে সকালের নাস্তা। দুপুরে সপ্তাহে তিন দিন মাছ, দুই দিন মাংস, ও দুই দিন ডিম দেওয়া হয়ে থাকে। রাতে সবজি ও ডাল। প্রত্যেক জনের খাবারের জন্য সরকার থেকে প্রতিদিন ১০০ টাকা করে বরাদ্দ পেয়ে থাকেন। আর প্রতি তিন মাসে একবার করে তাদের জন্য সরকার থেকে এক সেট নতুন পোশাক দেওয়া হয়।

তিনি আরোও জানান, এখানে শিশুদের জন্য একটি স্কুল ও মোক্তব রয়েছে। সেই সাথে তাদেরকে আপাতত সেলাই প্রশিক্ষন দেওয়া হয়ে থাকে। ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী সার্ভিসিং (টিভি, ফ্রিজ) এর প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা হবে, সরকার থেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ আসলেই চালু করা হবে। তবে প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত অবস্থা খুব নাজুক। শিশুদের থাকার ঘরের চাল ভেঙ্গে গেছে, বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে। প্রশিক্ষন কেন্দ্র সহ থাকার ঘর গুলো খুবই জরাজীর্ণ যে গুলো সংস্কার করা খুবই প্রয়োজন। ভবন গুলোর দেয়াল এতোটাই দুর্বল হয়ে গেছে যে শিশুরা বাথরুমের ভ্যান্টিলেটার ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। যা দ্রুত সংস্কার করা খুবই জরুরি।

RSS
Follow by Email