বৃহস্পতিবার, মে ২২, ২০২৫
Led05ফতুল্লা

বিস্ফোরক-হত্যা চেষ্টাসহ ১৪ মামলার আসামি চুন্নু আটক

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ফতুল্লায় ঘটে যাওয়া চাঞ্চল্যকর লামিয়া আক্তার ফিজা (২১) হত্যা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মোফাজ্জল হোসেন চুন্নু (৫০) কে আটক করেছে র‍্যাব-১১। বুধবার (২১ মে) দুপুর ১টা ১০ মিনিটে ফতুল্লার নয়া মাটি (কুতুবপুর) এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এর আগে, গত ৬ জানুয়ারি লামিয়ার পিতা মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় ১২ জনকে অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং-৯)

মামলার এজাহার ও তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ভিকটিম লামিয়া আক্তার ফিজার সাথে অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান ওরফে মুন্নার ২০২০ সালের ১৪ আগস্ট ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই মুন্না পরকীয়ায় লিপ্ত ছিলেন। লামিয়া তাকে বাধা দিলে মুন্না তাকে বিভিন্ন সময় মারধর করতেন। তাদের ২ বছর বয়সী একটি পুত্র সন্তান (মোরসালিন) থাকা সত্ত্বেও পরকীয়া অব্যাহত ছিল। লামিয়া অন্যদের কাছে এ বিষয়ে বিচার চাইলে তারা বিচার না করে বরং তাকে গালিগালাজ করতেন। পারিবারিক ভাবে বেশ কয়েকবার শালিস মীমাংসা হলেও মুন্না সংশোধন হননি। তিনি দেরীতে বাসায় ফিরতেন, যা নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে লামিয়া মারধরের বিষয়টি গোপন রাখতেন।

আনুমানিক এক সপ্তাহ আগে লামিয়া তার স্বামীকে পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় অন্যান্য অভিযুক্তদের ইন্ধনে মুন্না লামিয়াকে মারধর করেন। অভিযুক্তরা লামিয়াকে হুমকি দিত যে, মারধরের ঘটনা তার পরিবারকে জানালে তাকে ‘জীবনের তরে শেষ করে ফেলবে’। এই ভয়ে লামিয়া সব ঘটনা গোপন রাখতেন। গত ২ জানুয়ারি লামিয়ার পিতার বাসায় আসার কথা ছিল, কিন্তু তিনি আসেননি। ওইদিন বিকাল ৪টা ৫০ মিনিটে অভিযুক্তদের বাড়ীর পাশে এক ব্যক্তি লামিয়ার চাচার মোবাইলে ফোন করে জানান যে, অভিযুক্তরা লামিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে ঘরের মধ্যে আটক করে রেখেছে।

এই সংবাদ পেয়ে লামিয়ার পরিবারের লোকজন ২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব লামাপাড়া নয়ামাটি মার্কাস মসজিদ সংলগ্ন মুন্নার বাড়ীতে যান। সেখানে তারা দেখতে পান, মুন্নার রুমে জানালার গ্রিলের সাথে লামিয়া গলায় ওড়না ও গামছা দ্বারা বাঁধা অবস্থায় পা মাটিতে ডান হাতের আঙ্গুলে এবং বাম হাতের বাহুসহ গলায় লালচে দাগসহ মৃত অবস্থায় ঘাড় বেঁকে ঝুলছেন। পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে এবং লামিয়ার লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

মামলা রুজু হওয়ার পর থেকেই অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে র‍্যাব-১১ ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এই ঘটনার সাথে জড়িত ৪ নং অভিযুক্ত মো. মোফাজ্জল হোসেন চুন্নু (৫০) কে ফতুল্লা নয়ামাটি (কুতুবপুর) এলাকা থেকে আটক করতে সক্ষম হয়। আটককৃত চুন্নুর বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় বিস্ফোরক আইন, হত্যা চেষ্টা, মাদক, চুরিসহ ১৪টি মামলা রয়েছে। আটককৃত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ফতুল্লা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

RSS
Follow by Email