বিকেএমইএ’র কারখানা গুলোতে নিয়োগ বন্ধ, সেলিম ওসমানের চিঠিতে সাত ‘নির্দেশনা’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) সদস্যভুক্ত কারখানাগুলো এবার নতুন নিয়োগ বন্ধ করলো। এক চিঠির মাধ্যমে সদস্য কারখানাগুলোকে এ তথ্য জানিয়েছে বিকেইএমইএ। প্রয়োজন না হলে নতুন নিয়োগ বন্ধ থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। একই সঙ্গে সামগ্রিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কারখানার গেটে ‘নিয়োগ বন্ধ’ সংক্রান্ত নোটিশ টাঙাতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার বিজিএমইএ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পোশাক কারখানায় নতুন নিয়োগ বন্ধ রাখার কথা জানায়। বিজিএমইএ বলছে, পোশাক খাতে শ্রমিক অসন্তোষসহ সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে এলে আবার নতুন নিয়োগ শুরু হবে।
এদিকে, কারখানাগুলোয় পাঠানো বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমানের সই করা চিঠিতে বলা হয়, নিট শিল্প বর্তমানে এক ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে যুদ্ধের ডামাডোলের কারণে অর্থনৈতিক সংকট প্রকট থেকে প্রকটতর হচ্ছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই দেশের প্রধান রপ্তানিখাত নিট শিল্পখাতে এর প্রভাব আমরা এরই মধ্যে লক্ষ্য করতে শুরু করেছি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, এর মধ্যেই ন্যূনতম মজুরি কাঠামো ঘোষিত হয়েছে। কষ্টকর হলেও তা বাস্তবায়ন করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এই সুযোগে এই শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য নানা ধরনের ষড়যন্ত্রের ছক আঁকছে। মনে রাখতে হবে, দেশের স্বার্থে, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এবং শ্রমিকদের স্বার্থে এই শিল্পকে আমাদের টিকিয়ে রাখতে হবে।
সংগঠনের সদস্যদের উদ্দেশ্যে জানানো হয়, আপনার প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার স্বার্থে সামনের দিনগুলোতে বিকেএমইএ’র সাত নির্দেশনা মেনে চলতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। বিকেএমইএ’র নির্দেশনার বলা হয়েছে-
১. কারখানায় যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সেদিকে মালিকদের সজাগ দৃষ্টি রাখা।
২. জারুরি প্রয়োজন না হলে কারখানায় শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ রাখা, কারখানার গেটে যাতে ‘নিয়োগ বন্ধ’ নোটিশ টাঙানো হয়। নতুন নিয়োগের প্রয়োজন হলে শ্রমিকের সব তথ্য যাচাই করে নিয়োগ দেওয়া। প্রয়োজনে ওয়ার্কার্স ডাটাবেজসহ অন্য ব্যক্তিগত তথ্যাদি সম্পর্কে নিশ্চিত করা।
৩. বিকেএমইএর লিখিত অনুমোদন ছাড়া তৃতীয় কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে কারখানার তথ্য বা উপাত্ত প্রদান থেকে বিরত থাকা।
৪. কারখানার ওয়ার্কার ডাটাবেজ আবশ্যিকভাবে হালনাগাদ করতে হবে। কারণ, শ্রমিকদের যেকোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান বা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্যাদি অত্যাবশ্যকীয়।
৫. কারখানার সব ধরনের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রশাসনিক তদারকি বাড়াতে হবে এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিরাপদে সংরক্ষণে রাখতে হবে।
৬. নিয়মিতভাবে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনাসহ তাদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো শোনা ও তা লিপিবন্ধ করা। কোনো সমস্যা চিহ্নিত হলে তা দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া।
৭. যেসব কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে কাজ করা থেকে বিরত থাকবে বা কারখানা ছেড়ে বেড়িয়ে যাবে, সেসব কারখানার মালিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যথাযথ আলোচনা সাপেক্ষে বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ধারা ১৩(১) এর বিধান মোতাবেক কারখানা বন্ধ করে দিতে পারেন।