বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
Led02রাজনীতি

বিএনপি কী না.গঞ্জে শক্তি হারাচ্ছে?

#সময় বলে দিবে তাদের ভবিষ্যৎ: কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম
#চিন্তা করেই বহিষ্কার করা হয়েছে, ক্ষতি হওয়ার চান্স নাই: গিয়াসউদ্দিন

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে নেতৃত্বে ছিলেন বর্তমান তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার। তবে, ২০২২ সালের পর থেকেই তিনি বহিস্কৃত, অবহেলিত আর পদবঞ্চিত। তারই মতো এই নেতার অনুসারীরাও ছিল অবহেলার পাত্র হয়ে। এবার তৈমূর আলম বলছেন,‘অনেকেই তার সাথে তৃণমূল বিএনপিতে আসতে চাইছেন।’

তাই রাজনৈতিক বোদ্ধা মহলের প্রশ্ন- বিএনপি কী নারায়ণগঞ্জে শক্তি হারাচ্ছে।

তবে এ প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, ‘তৈমূর আলম ক্ষতিকারক ছিল বলেই বিএনপি থেকে বহিস্কার হয়েছে। তার অনুসারী চলে গেলেও বিএনপির সমস্যা হবে না।’

জাতীয় নির্বাচনের আগে দলীয় কোন্দল বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিএনপির জন্য। বেশ কয়েক বছর ধরেই নেতৃত্বের সংকটসহ নানান সমস্যায় জর্জরিত ছিলো দলটি। জেলায় দুটো কমিটি হলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও সংঘাতের ঘটনা এখন রাজপথেই দৃশ্যমান। এরমধ্যে দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙে স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন নির্বাচন থেকে শুরু করে, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও অংশ নিয়ে বহিস্কৃত হয়ে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। ফলে, নেতৃত্বের কিনারা পেতে বিকল্প হিসেবে বেছে নিচ্ছে ভিন্ন মতের দল।

বিএনপির অনেক ত্যাগী নেতা যাদের অনেকে সক্রিয় থাকার পরেও গত নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। এছাড়া প্রতিটি এলাকায় মনোনয়ন প্রত্যাশী যেসব নেতা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তারা কেউ কেউ টের পাচ্ছেন- কেন্দ্রের সঙ্গে তার যোগাযোগ কম, তার নমিনেশন পাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। এমন অনেকেই তৃণমূল বিএনপিতে ভেড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

জানা গেছে, এক সময়ে পুরো নারয়ণগঞ্জের বিএনপি’র হাল ধরেছেন এড. তৈমূর আলম খন্দকার। পৈতৃক ভিটা রূপগঞ্জ হওয়ায় সেখানেও আছে তার কর্মী বাহীনি। দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে মারধরের শিকার ও জেল খেটেছেন এই নেতা। তাঁর দল পরিবর্তনে বিশাল একটা কর্মী জমায়েত হারাবে বিএনপি। যারাই দল ছাড়ছে, এক বুক হতাশা আর চাপা কষ্ট নিয়ে ছাড়ছে। রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম পেতে বিএনপির আরও অনেক নেতা দল ছাড়ছেন। এদের মধ্যে বিএনপির সাবেক এবং বর্তমান নেতৃত্বের বড় একটি অংশ রয়েছে; যারা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত, বহিস্কৃত ও নিষ্ক্রিয়। তবে বিএনপি বলছে, দুয়েকজন সুবিধাবাদীকে ভাগিয়ে নিলেও মূলদলে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ‘দুই এক বালতি পানি উঠালে সাগরের কিছু আসে যায় না। যারা অন্যায় করবে দলের বিরুদ্ধে কাজ করবে তাদের বহিস্কার করেছি। কেউ যদি দলে আসতে চায় তাহলে তাদের কর্ম ভালো থাকতে হবে। যেমন দেখেন তৈমূর আলম খন্দকার, তিনি তো দলে আসার জন্য আবেদন করছে, আমরা তো তাকে দলে নেইনি। কারণ আমরা জানতাম তিনি যথার্থ জায়গায় থাকতে পারে না। তাই তার বহিস্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হয়নি। বিএনপি প্রতি তার কোন দরদ ভালোবাসা নাই, তাই সে চলে গেছে।

তিনি বলেন, এমন অনেক নেতা আছে বহিস্কার হয়েছে কিন্তু দল ছাড়ে নাই। যাদের বহিস্কারের পরও বিএনপির প্রতি ভালোবাসা থাকবে, তাদের অতিত, বর্তমান দেখে বিবেচনা করবো। যারা চলে যাবার তারা চলেই যাবে, এই জন্যই সেগুলো বহিস্কার হয়েছে।

নেতার সাথে কর্মীরাও চলে যায়, এ বিষয়ে আব্দুস সালাম বলেন, তৈমূর আলম খন্দকারের মেয়ে বলেছে, ‘আমি বিএনপি করি, বিএনপি করবো, বাবা তাঁর মতো চলে গেছে’। অন্য দিকে তার ভাগিনা বলেছে ‘সে আমার অভিভাবক কিন্তু আমার দলের অভিভাবক না’। তাই আমাদের কোন দুঃচিন্তা বিষয় না কর্মীরাও চলে যাবে।

তিনি আরও বলেন, কোন বহিস্কৃত নেতা যদি মনে করে দল করবে, তাহলে সে প্রমাণ করবে যে, ভালো পথে যাবে। অতিতের কাজ সে করবে না। তাহলে তারা থাকতে পারবে। সময় বলে দিবে তাদের ভবিষ্যৎ। আমরা যে ১দফা আন্দোলনে নেমেছি মাঠে, সেটা সফল করে আমরা ঘরে ফিরবো ইনশাআল্লাহ।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক এমপি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন লাইভ নারায়ণগঞ্জ বলেন, বিএনপি যখন মনে করে কেউ বিএনপির জন্য ক্ষতিকারক কিংবা বিএনপির সিদ্ধান্ত পরিপন্থি কোন কাজ করছে যেটা দলের জন্য ক্ষতি কারক, সেইক্ষেত্রে বিএনপি তাদের বহিষ্কার করতেই পারে। আর বহিষ্কৃত ব্যক্তি সে কোথায় যাবে কি করবে এতে বিএনপি ক্ষতি হওয়ার কোন কারণ নাই। কেননা বিএনপি এটা মনে করেই তাকে বহিস্কার করেছে যে, সে বিএনপির জন্য উপযোগী না, বিএনপি করার জন্য সে অধিকার রাখে না। সে থাকলে ক্ষতি হবে, এটা চিন্তা করেই তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এতে বিএনপি ক্ষতি হওয়ার কোন চান্স নাই।

RSS
Follow by Email