বিএনপি কন্ট্রোলের মাল না যেভাবে পারবেন সেভাবেই খাবেন: এড. সাখাওয়াত
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান দলের অভ্যন্তরে ক্ষমতার লোভে প্রবেশকারী এবং ‘সুসময়ে মধু আহরণ করতে আসা’ নেতাদের বিরুদ্ধে বার্তা দিয়েছেন। সোমবার (২১ জুলাই) বিকেলে বন্দর থানা বিএনপির ২৬নং ওয়ার্ডের প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
সাখাওয়াত হোসেন খান সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, “আজকে যারা নির্বাচন করতে চান, আপনারা তো আসেন মধু খেতে। কারণ এখন দলের অবস্থা ভালো দেখছেন, এখন আপনারা আসছেন মধু আহরণ করতে। আপনাদের তো কিছুটা শরম থাকা দরকার নাকি! আইসাই আপনারা মাঝখানে বসতে চান, এমপি হয়ে যেতে চান—এটা কোনো রকমই সম্ভব হবে না।”
তিনি স্পষ্ট করে দেন যে, “অনেকেই অনেক কথা বলছেন, কিন্তু আমাদের নেতা তারেক রহমান কোনো কথাই কানে তুলবেন না। আপনারা বিএনপির জন্য কোনো কিছু করেন নাই, সুতরাং সুসময়ে আপনারা বিএনপির থেকে কিছু পাবেন না।” তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ীই দলের ভবিষ্যৎ পথচলা নির্ধারিত হবে বলেও তিনি ইঙ্গিত দেন।
সাখাওয়াত হোসেন খান কিছু ‘শিল্পপতি’র সমালোচনা করে বলেন, যারা অতীতে বিএনপি নেতাকর্মীদের পুলিশ ও আওয়ামী লীগের লোকজন দিয়ে হয়রানি ও হামলা-মামলার শিকার করিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “তারা আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির পক্ষে বিভিন্ন ধরনের কার্যকলাপ করেছিল। শুধু তাই নয়, প্রকাশ্যে নির্লজ্জের মতন তাদের মিটিং-মিছিলে গিয়েছিল।”
তিনি আরও জানান, এই ধরনের ব্যক্তিদের দল থেকে ইতিমধ্যে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং দল থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাদের সাথে কোনো সম্পর্ক না রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যারা এখনো বহিষ্কৃতদের সাথে চলছেন, তাদের ‘ওই বহিষ্কৃতদের পর্যায়ের লোক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন সাখাওয়াত। তিনি দলের নীতি ও আদর্শ মেনে চলে দলকে সংঘটিত করার আহ্বান জানান।
দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপর জোর দিয়ে সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, “বিএনপি কিন্তু কন্ট্রোলের মাল না, যে কন্ট্রোলের চাল যেভাবে পারবেন সেভাবেই খাবেন।” তিনি অভিযোগ করেন, “এখন দেখছি বিএনপিতে যাদের সদস্য পদ নেই, তারাও বিএনপির নাম ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম দিচ্ছেন। এতে করে কিন্তু সাধারণ জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।”
তিনি কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “একটি কথা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, আপনারা জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন না। যারা এগুলো করছেন, তাদের উদ্দেশ্য করে বলতে চাই—আপনারা বিএনপির কী? আপনি বিএনপির নাম ব্যবহার করে সমাবেশ করেন, মিছিল করেন। আর সেটা করতে হলে দলের নিয়ম-নীতি ও আদর্শ এবং গঠনতন্ত্র মেনেই করতে হবে।”
তিনি স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেন, “আপনি দলই করেননি, দলের মেম্বারও হননি, এখন যদি আপনি সামনে এসে বসতে চান—সেটা কি সম্ভব? যারা দল করেছে, নির্যাতিত হয়েছে, হামলা-মামলার শিকার হয়েছে, তারা সামনে বসবে আর আপনারা পেছনে থাকবেন, তারপরে বসবেন।”
সাখাওয়াত হোসেন খান দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “আজকে যারা এখানে আছে, তারা দীর্ঘ ১৫টি বছর আওয়ামী লীগের নির্মল নির্যাতন স্বীকার করেছে। আমরা তাদেরকেই মূল্যায়ন করতে চাই। তাদেরকে নিয়ে আমরা চলতে চাই এবং আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে চাই।”
মহানগর ২৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সফি উদ্দিন সোহেল প্রধানের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড.আবু আল ইউসুফ খান টিপু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন্দর থানা বিএনপির সভাপতি শাহেনশাহ আহমেদ এবং সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক রানা।