বিএনপি’র নেতাকর্মীদের গিয়াসউদ্দিনের হুঁশিয়ারি ‘স্বৈরাচারের দোসরদের ঠাই দেওয়া যাবে না’
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে জন সমাবেশ করেছেন কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ফতুল্লা পাগলার কুতুবপুর নয়ামাটি এলাকায় ওই সমাবেশের অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ।
এর আগে দুপুর আড়াইটা থেকে পাগলা রেললাইন এলাকায় কুতুবপুরের বিভিন্ন ইউনিয়ন ও থানা বিএনপি এবং জাসাসের নেতৃবৃন্দরা দলে দলে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগদান করেন। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নারী নেতৃত্বের অংশ গ্রহন ছিলো উল্লেখযোগ্য সংখ্যা।
সমাবেশে প্রধান অতিথি মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন বলেন, নারায়ণগঞ্জের যত রাজনৈতিক দল আছে, তাদের ভালো মানুষ দিয়ে সংগঠন গঠন করতে হবে ও ভালো মানুষের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে । রাজনৈতিক দল একটি এলাকায় সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, কালচারাল প্রতিষ্ঠান, ক্রীড়াবিদদের প্রতিষ্ঠান। এই সকল প্রতিষ্ঠানে যখন যোগ্য নেতৃত্ব, গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তখন নারায়ণগঞ্জ জেগে উঠবে, এই জেলার উন্নয়ন হবে। স্বৈরাচারী সরকার শিক্ষা কে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাজনীতি করণ করা হয়েছে। সমস্ত জায়গায় দলের অযোগ্য ব্যক্তিদের দিয়ে, খারাপ মানুষদের দিয়ে নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে। কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন রাজনীতিবিদদের কবলে যেতে না পারে। সব জায়গাতে উপযুক্ত যোগ্য ও ভালো মানুষদের নেতৃত্ব দিতে হবে। যেখানে রাজনৈতিক এগুলো হটিয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, মসজিদে যায় না নামাজ পড়ে না তাদেরকে যদি মসজিদ কমিটির নেতা বানিয়ে দেই, সেই মসজিদ ভালোভাবে চলবে না। যারা ঈমানদার পরহেজগার তাদেরকে দিয়ে মসজিদ কমিটি করতে হবে। যারা শিক্ষিত তাদেরকে দিয়ে স্কুল-কলেজের নেতৃত্ব দিতে হবে। চোরের দল নিজের লোকদের দিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের লুটপাট চালিয়েছেন। যারা এখনো রয়ে গেছে তাদেরকে বিতাড়িত করতে হবে। নারায়ণগঞ্জের মধ্যে পড়ে কুতুবপুর ইউনিয়ন সবচেয়ে বড়, এতে ভোটার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আগামীতে রাজনৈতিক দিক দিয়ে ও উন্নতির দিক দিয়ে কুতুবপুর ইউনিয়নকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, স্বৈরাচারের যারা দোসর ছিল তাদেরকে কোন অবস্থায় সমাজে ঠাই দেওয়া যাবে না। আমার দলের নেতৃবৃন্দ যারা আছেন তাদেরকে বলবো, আপনারা যদি আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী,ঘুষ-উৎকোচের বিনিময়ে তাদেরকে আপনাদের সাথে নেন। তাহলে আপনাদেরকে রেহাই করা হবে না। তারা অন্যায় করেছে, তাদেরকে শাস্তি পেতে হবে। তারা অন্যায় করে মানুষের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে নাই। স্বৈরাচারী হাসিনা এখনো ষড়যন্ত্র করছে। শেখ হাসিনা নিজে শেষ হয় নাই, তার পরিবার শেষ হয় নাই, নিজের বাপ মাকে শেষ করে নাই। শেখ হাসিনা শেষ করে গেছে বাংলাদেশকে। শেষ করে গেছে আওয়ামী লীগ ও নেতাকর্মীদের শেষ করে গেছে।
গিয়াসউদ্দিন বলেন, শেখ হাসিনার প্ররোচনায় যারা কাজ করবে তাদেরকে ভেবে দেখতে হবে আগামী দিন তাদের কি হবে। আমার মনে হয় এত বোকামি করা ঠিক হবে না। বাংলাদেশের মাটিতে শেখ পরিবারের রাজনীতি করার আর সুযোগ নাই। তারা এ দেশের সম্পদ চুরি করেছে লুট করেছে। এই পরিবার হচ্ছে একটা চোর পরিবার। এ পরিবার আবার কিভাবে বাংলাদেশে আসবে রাজনীতি করতে। নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে এ পরিবারের সাথে যারা জড়িত ছিল তাদের কাউকে নেতা বলা যাবে না। তাদেরকে চোর বলতে হবে। এই চোরেরা নারায়ণগঞ্জে কোনদিন দাঁড়াতে পারবে না। জনগণ তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে তাদেরকে তাড়িয়ে দিয়েছে। তাই ক্ষোভে তারা এখন জনগণের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বিল্লাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আলীর সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয়দাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিএম সাদরিল, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার মনিরুল ইসলাম, বর্তমান সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন খন্দকার শিপন, সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুল বারী ভূঁইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. খন্দকার আকতার হোসেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাইনুল হোসেন রতন, ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাসান মাহমুদ পলাশ প্রমূখ।