মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪
Led02রাজনীতি

বিএনপির একক ভাবে কিচ্ছু করার ক্ষমতা নেই: শামীম ওসমান

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বিএনপির একক ভাবে কিচ্ছু করার ক্ষমতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। তিনি বলেছেন, ‘এই দেশে মৌলবাদিদের উত্থান হবে, মৌলবাদিরা এ দেশ চালাবে; দেশ হবে আফগানিস্তান। বিএনপি এখানে এক ফোটাও বেনিফিট পাবে না।’

শুক্রবার রাতে বেসরকারি এক টেলিভিশনের টক-শোতে অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। টক-শোতে আরও অংশ নিয়েছিলে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম এবং দৈনিক সংবাদ এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ুন।

এসময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শামীম ওসমান বলেন, ‘কারা দেশের ক্ষতি করতে পারবে? ওই যে সেকেন্ড ফোর্সরা রয়েছে, আমি তাদের নাম বলতে চাচ্ছি না। কিন্তু আমি বলবো, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে এক হওয়া দরকার। এখনই সময় আপনাদের ভয়েস রাইজ করার।’

শামীম ওসমান বলেন, বিশ্ব মোড়লরা কি চায়? বঙ্গবন্ধু কন্যা তো পরিস্কার বলে দিয়েছেন, বঙ্গপোসাগর ব্যাবহার করে তারা এই সাব কন্টিন্টেকে (উপ মহাদেশ) কন্ট্রোল করতে চায়। শেখ হাসিনাকে আমি আওয়ামী লীগের সম্পদ মনে করি না, তিনি যদি শুধু আওয়ামী লীগের সম্পদ হতেন; তাহলে আমি আওয়ামী লীগ করতাম না। শেখ হাসিনা আমাদের বাচ্চাদের আগামী দিনের ভবিষ্যত, আগামী দিনের স্বপ্ন। বঙ্গবন্ধুকে হাড়িয়ে আমরা বিরাট বড় ভুল করে ফেলেছি এবং কিচ্ছু করতে পারিনি সেদিন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার সরকার দুর্বল না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা পর যে শক্তি ক্ষমতায় বসে গিয়েছিলো, আমার মনে হয় একটা সময় মুক্তিযোদ্ধাদেরই বিচার হতো; কেন তারা দেশটিকে স্বাধীন করেছিলো। আমরা কিন্তু কোন বড় শক্তিশালি দেশ না। বাচ্চা একটি দেশ, মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছি। আমাদের অর্থনীতি দাঁড়াচ্ছে। তাই নজর পরেছে সবার। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, মুক্তি দেয়ার আগেই মেরে দেয়া হয়েছে। পরে জাতির পিতার কন্যা এই অর্থনৈতিক মুক্তিটা এনে দিয়েছেন। কভিড আর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ না হলে আমাদের জিডিপি ১০ পার্সেন্টের চেয়ে বেশি গ্রো করতো।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনাকে ২২ বার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এই মহিলাটা ২১শে আগস্ট বোমা হামলায় যদি মারা যেতেন যেতেন, তাহলে কি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতো? যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হতো? শেখ হাসিনা প্রমান করেছেন বাংলাদেশ কারো পায়ের উপর ভর করে দাঁড়িয়ে নেই। এটা কি হতো?

বিএনপিকে গণতান্ত্রীক দল মনে করেন না উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, ফখরুল সাহেব হাসি দেখছেন না, ওনার এই কথা শুনে মনে হচ্ছে উনি মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। উনি ভেবে নিচ্ছেন এটা হবে, ওইটা হবে; ওনারা ভাবেন বেশি করেন কম। জামাত-বিএনপি যখন আমাদের হুমকি দিচ্ছেলো, তখন আমরা অশান্তি ও যারা মানুষ মারে তাদের বিরুদ্ধে ‘খেলা হবে’ বলেছিলাম। ২০১৩-১৪ সালে ৩হাজার ৫৫২টি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো। ২৯টি রেলগাড়ি, ৯টি লঞ্চ, ৫৮২টা স্কুল, ৬টি ভুমি অফিস, ৭০টি বিভিন্ন সরকারি অফিস পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো। ২০১৩-১৫ সাল পর্যন্ত ৩হাজার ৩৩৬টি মানুষের গায়ে আগুন দেয়া হয়েছিলো, যার মধ্যে ৫০০জনের মতো আহত ও নিহত হয়েছিলো। ২৬জন পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে পিটিয়ে-কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিলো। একই দিনে ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা করা হয়েছিলো। এখন এটা কি আমি গণতান্ত্রীক শক্তি বলবো কি বলবো না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের তো রাজনীতি করার কথা না। মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর আমাদের পরে স্বাধীন হয়েছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে আমরা ওই জায়গাটাতে থাকতাম। ৩১ বছর বয়সে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা দেশে এসেছেন। ২১ বছর সময় লেগেছে ওনার, ক্ষমতায় আসতে। তখন আমাদের দাবী ছিলো একটি স্পেশাল ট্রাইবুনালের ব্যাবস্থা করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা হোক। কিন্তু আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি বলেছিলেন, না আমি চলমান প্রক্রিয়াতেই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হবে। আমার উপর যখন বোম ব্লাস্ট হলো তখন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, যে জাতির পিতার পরিবারের নিরাপত্তা আইন পাশ করানোর জন্য আমি নিজের উপর বোম ব্লাস্ট করিয়েছি। সেদিন কিন্তু দেশে অনেক সুশিল ছিলেন, মানোবতাবাদী লোক ছিলেন, কেউ কিন্তু এটার প্রতিবাদ করেননি। ২০টা মানুষ বোম ব্লাস্টে টুকরা হয়ে গিয়েছিলো। চন্দনের পা নাই, রতনের পা নাই।

RSS
Follow by Email