বৃহস্পতিবার, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪
জেলাজুড়েরাজনীতিসদর

বাস ভাড়া কমাতে যাত্রি অধিকার ফোরামের হুশিয়ারী

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বাস ভাড়া কমানোর দাবিতে সমাবেশ ও শহরে মিছিল করেছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে শহরে মিছিল করেন নেতৃবৃন্দরা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের আহ্বায়ক ও সংকৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, জেলা খেলাঘর আসরের উপদেষ্টা রথীন চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল, নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দিপু, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিমাংশু সাহা, জেলা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজল, জেলা বাসদের সদস্য সচিব আবু নাঈম খান বিপ্লবসহ আরও অনেকে।

এসময় রফিউর রাব্বি বলেন, আগামী ৭ দিনের মধ্যে ঢাকা নারায়ণগঞ্জের ভাড়া ৪৫ টাকা না করা হয়ে, তাহলে নারায়ণগঞ্জে কি হতে পারে তা আপনার ধারণা নাই। ডিসিকে বলছি, আপনি আর ২-৪ দিন নারায়ণগঞ্জে আছেন। আপনি যাওয়ার আগে এই ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত দিয়ে যান। আমরা হরতাল করেও ভাড়া কমিয়েছি। এই ভাড়া কমানো জন্য যা করা দরকার তাই করবো। খুনি হাসিনা বদল হয়েছে। আপনারা খুনিদের দোসরদের আর পাহারা দিতে যাবেন না। জণগনের পক্ষে এসে আগামী ১০ তারিখের মধ্যে ভাড়া কমানো সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। নাহলে নারায়ণগঞ্জে কি হতে পারে সেটা ডিসি তখন দেখবেন। আপনি সম্মানের সাথে বিদায় নিয়ে যাবেন। আপনাকে সবাই বলবে ডিসি যাওয়ার আগে একটা ভলো কাজ করে গেছে। না হয় ধিক্বার নিন্দা জানিয়ে আমরা আমাদের অধিকার আদায় করবো। নতুন পুলিশ সুপার এসেছে। আপনার পূর্বে যে পুলিশ সুপার ছিলো সে নারায়ণগঞ্জবাসীকে ভয় দেখানোর জন্য বলেছে ‘আমি ছাত্রলীগ করা ক্যাডার। তার কিন্তু অপসারণ হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের চেহারা দেখে আপনি সিদ্ধান্ত নিয়েন। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের ভাড়া সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা করতে হবে। এবং ছাত্রদের হাফ ভাড়া করে তাদের যাতায়াতের সুযোগ দিতে হবে। এতো দিন অনেক ব্যবসা করেছেন, এখনো যদি সেই রাস্তায় হাটবেন ভাবছেন তাহলে বোকার স্বর্গে বাস করছেন। নতুন করে কোনো গডফাদারের কাছে গেলেও রক্ষা হবে না।

গণসংহতির তরিকুল সুজন বলেন, নারায়ণগঞ্জের পরিবহনগুলোর বাস ভাড়া কমছে না। ৫ আগস্টের পর থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরটা স্থবির হয়ে আছে। চাষাড়া গোল চত্বরে সব যানবহন থেমে থাকে। ফতুল্লা থেকে যারা আসেন তাদের রেল লাইনের সামনে নামিয়ে দেওয়া হয়। যারা নিতাইগঞ্জ থেকে আসেন তাদের চাষাড়ায় আসতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই নারায়ণগঞ্জকে চাঁদাবাজরা স্থবির করে রেখেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ডিসি-এসপি মিলে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল রুট পারমিট ছাড়া, ফিটনেস বীহিন পরিবহনগুলোর বাস বন্ধ করে দেয়া হবে। এ নারায়ণগঞ্জে চার শতাধিক বাস চলে। যার মধ্যে দেড় শতাধিকের রুট পারমিট নাই। নারায়ণগঞ্জের বন্ধন বাসের ৫৭টা বাস চলে, কিন্তু রুট পারমিট আছে মাত্র ১৫টির। উৎসবের ৪২টা বাসের মধ্যে ২টার রুট পারমিট আছে। ৫ আগস্টের পর আমরা দেখলাম, যারা পরিবহন খাত থেকে যারা চাঁদাবাজি করতো তারা সরে গেল। কিন্তু আজমীর ওসমানসহ নতুন চাঁদাবাজরা হাজির হলো। নারায়ণগঞ্জে অমুক বাস, তমুক বাস দিয়ে স্থবির করে দিল। ট্রাফিক পুলিশরা এ চাঁদাবাজদের সাথে মিলে টাকা খেয়ে রুট পারমিট নাই, ফিটনেস নাই এমন বাস চলতে দিচ্ছে। নবাগত এসপিকে অনুরোধ করবো, এই সকল রুট পারমিট বিহীন, ফিটনেস বিহীন বাসকে চিহ্নিত করে ডাম্পিং এর ব্যবস্থা করুন। নারায়ণগঞ্জবাসী টাকা দিয়ে বাসে উঠে। এই লক্কর-ঝক্কর বাসে আমরা ৫৫ টাকা ভাড়া দিতে রাজি না। আমরা বাস ভাড়া ৪৫ টাকার বেশি দিব না।

কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম বলেন, আগে শামীম ওসমানকে চাঁদা দিতে হয় বলে বাস মালিক পক্ষ ভাড়া বাড়িয়েছে। আবার জ্বালানীর দাম বৃদ্ধি হলেই তারা ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। তেলের মূল্য একটাকা বাড়লে তারা আন্দোলন করে সরকারকে চাপ দেয়। সরকার তাদের কথা শুনে ভাড়া বাড়ায়। কিন্তু যখন জ্বালানির দাম কমে যায় তখন তারা চুপচাপ থাকে। শেখ হাসিনার সরকার এমনি ক্ষমতায় ছাড়েনি, আমরা তাদের ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করেছি। আমাদের এই দাবি না মানা হলে, আমরা সারা নারায়ণগঞ্জবাসীকে নিয়ে বাস কাউন্টারে যাবো। আমরা প্রতিটা কাউন্টার অবরোধ করবো। তাদের যৌক্তিক ভাড়া নিতে বাধ্য করবো।

নাগরিক কমিটির সভাপতি এড এ বি সিদ্দিক, আমরা ৭-৮ বছর আগেও বাস ভাড়া কমানোর দাবিতে আন্দোলন করেছি। এক পর্যায় আমরা ডিসির সম্মেলন কক্ষে বসি। সেদিন দেখেছি জনপ্রতিনিধিরা জনগণের বিরুদ্ধে কিভাবে অবস্থান নেয়। ভোট চাওয়ার সময় তারা নানান আশা ভরসা দেয়। ভোট পেয়ে গেলে তারা নিজের কথা চিন্তা করে। আমরা তখন বিআরটিসির চেয়ারম্যানের সাথে সাক্ষাত করি। তখন তারা ১০০ টা বাস দিয়েছিলো যার ৫০ টা বাস এসি ও ৫০টা নন-এসি বাস ছিলো। বাসগুলো আসলো নারায়ণগঞ্জে। কিন্তু স্থানীয় বাস মালিক ও স্টাফরা সেই বাস ভেঙে ফেললো এবং তাদের তাড়িয়ে দিল। তখন প্রশাসনও আমাদের দিকে তকায় নি। বর্তমান সরকারকে বলতে চাই, আপনারা প্রতিনিধি নিয়ে এসে নারায়ণগঞ্জ ঢাকার দুরত্ব মেপে যান। সেই দুরত্ব অনুযায়ি ব্যবস্থা গ্রহন করেন।

RSS
Follow by Email