বাজারে কমেছে শাক-সবজি ও মাছ-মাংসের দাম
লাইভ নারায়াণগঞ্জ: ১৭ দিন পর পবিত্র মাহে রমজান। আর রমজানকে ঘিরে অস্থির হয়ে ওঠা শাক-সবজির বাজারে কিছুটা প্রশান্তি এসেছে। সেই সাথে কমেছে মাছ-মাংসের দাম। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর দ্বিগুবাবুর বাজারে সরেজমিনে ঘুরে এরকম চিত্র লক্ষ্য করা যায়।
শাক-সবকির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে শাক-সবজির মূল্য ১০-২০ টাকা হ্রাস পেয়েছে। বাজারে আলু প্রতি কেজি ২৫-৩০ টাকা, পেঁয়াজ ১০৫-১১৫ টাকা, সিম ৪০-৫০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা, টমেটো ৩০-৪০ টাকা, মরিচ ৫০-৬০ টাকা, শসা ৬০-৭০ টাকা, আদা ১৮০-২০০ টাকা, রসুন ১৪০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি শাক আঁটি হিসেবে লালশাক ৩০ টাকা, লাউশাক ৩০ টাকা, পালংশাক ৩০ টাকা ও ডাটা শাক ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে, কয়েকটি সবজির দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে উস্তা ও লেবু। গত সপ্তাহে উস্তা কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছিল ৮০ টাকায়, বর্তমান তার মূল্য ১৪০ টাকা। লেবুর হালি গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৬০ টাকা, বর্তমান বাজারে মূল্য ৬০-৮০ টাকা।
সৈকত নামে এক সবজি বিক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত সপ্তাহে যে উস্তা ৮০ টাকা করে বিক্রি করছি। সেটি বর্তমানে ১৪০ টাকায় কাস্টমারের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে। বাজারে উস্তা নেই বললেই চলে। পাইকাররা বলতেছে তাদের কাছে উস্তা এখন নাই। এজন্য বাড়তি দামে কিনে বিক্রি করতে হচ্ছে।
মুরগীর বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মত বিভিন্ন জাতের মুরগী একই দামে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার প্রতি কেজি ১৯৫-২০০ টাকা, কক মুরগী ৩০০-৩১০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগী ২৯০-৩০০ টাকা, লেয়ার সাদা মুরগী ২৯০-৩০০ টাকা। অপরদিকে ডিম বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডিমের মূল্য ১শ‘ পিছে কমেছে ৪০-৫০ টাকা, কিন্তু দেশি মুরগীর দাম বেড়েছে। প্রতি হালি লাল ডিম ৪৪ টাকা, দেশি মুরগীর ডিম ১০ টাকা বেড়ে ৯০ টাকা ও হাঁসের ডিম ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০০০ টাকা দরে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছের কেজিতে মূল্য ৫০-৩০০ টাকা হ্রাস পেয়েছে। বিক্রেতারা জানায়, বাজার খালি ক্রেতাদের আনা-গোনা কম থাকায় মাছের দাম একটু কম। প্রতি কেজি ইলিশ মাছ ১০০০-১৮০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৪০০-১০০০ টাকা, বোয়াল ৬০০-১২০০ টাকা, রুই মাছ ৩০০-৪৫০ টাকা, কাতল ৩০০-৪৫০ টাকা, পাঙ্গাস ২২০-২৫০ টাকা ও শিং ৮০০-১১০০ টাকা।
বাজার করতে আসা মো. সুমন মিয়া বলেন, আমি একজন পোশাক শ্রমিক। যা বেতন পাই, তা দিয়ে পরিবারের সম্পূর্ণ ভরণপোষণ করতে পারি না। এদিকে বাজার করতে আসলে, আমার হতাশা যেন ক্রমেই বেড়ে যায়। যে ভাবে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, পরিবারকে ভালো-মন্দ খাওয়াতে পারি না। কবে যেন, এ শোকেই মারা যাই। জিনিসপত্রের দাম না কমালে আমার মতো খেটে খাওয়া মানুষ বাঁচতে পারবে না।
আরেকজন ক্রেতা আফরোজা ইসলাম বলেন, প্রতিবার রোজার আগেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম হুরহুর করে বেড়ে যায়। যারা স্বল্প আয়ের মানুষ আছে, তাদের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সরকারের উচিৎ রোজার আগেই বাজারের নিত্যপণ্যের মূল্যের উপর দৃষ্টি রাখা।