বৃহস্পতিবার, জুলাই ২৪, ২০২৫
Led05আদালত

বন্দরে স্ত্রীকে পুতার আঘাতে হত্যার ঘটনায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বন্দরে গৃহবধূ শান্তা আক্তারকে পুতা দিয়ে আঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে তার স্বামী আমিরুল ইসলাম বাবুকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৩ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৭ সালে সোনারগাঁওয়ের বারদী এলাকার আমিরুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে একই এলাকার সুলতানা আক্তার শান্তার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তারা বন্দর উপজেলার রাজবাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতে শুরু করেন। তবে তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না; পারিবারিক বিষয় নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো এবং বাবু তার স্ত্রীকে মারধরসহ নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন করতেন।

এই কলহের জের ধরেই ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর রাতে আমিরুল ইসলাম বাবু তার স্ত্রী শান্তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে পুতা দিয়ে আঘাত করে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। হত্যার পর শান্তার লাশ কম্বল দিয়ে মুড়িয়ে গুম করার চেষ্টা করেন তিনি। ২৯ ডিসেম্বর সকালে শান্তার মরদেহ উদ্ধার হলে তার বাবা আব্দুল করিম মোল্লা বাদী হয়ে ওইদিনই বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে পুলিশ আসামি আমিরুল ইসলাম বাবুকে গ্রেফতার করলে তিনি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আবুল কালাম আজাদ জাকির জানান, এটি একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর মামলা ছিল। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করে এবং মামলাটি বিচার নিষ্পত্তির জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। ২০২২ সালের ২২ মে আদালতে চার্জ গঠন করা হলে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী আরও জানান, আদালত এ মামলায় ১৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। আসামির জবানবন্দি এবং সাক্ষীদের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে উভয়পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক ও দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত আসামি আমিরুল ইসলাম বাবুকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। পিপি আবুল কালাম আজাদ জাকির বলেন, “আমরা মনে করি বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পেয়েছেন।”

RSS
Follow by Email