বন্দরে এড. সাখাওয়াত ‘সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদকাসক্ত ব্যক্তির বিএনপিতে ঠাঁই নাই’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেছেন, তাদের নেতা তারেক রহমান জনগণের পক্ষে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। জনগণের সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থাকতে এবং দেশ ও দেশের মানুষ, বিশেষ করে বন্দর ও নারায়ণগঞ্জের কল্যাণে কাজ করার জন্য তিনি এই নির্দেশনা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে মদনপুরের কেওঢালায় আয়োজিত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদল ও বন্দর থানা ছাত্রদলের উদ্যোগে এক দোয়া মাহফিল ও বৃক্ষ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া পরিচালনা করা হয়।
সাখাওয়াত হোসেন খান তার বক্তব্যে প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সব সময় বলতেন জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। আর সেই কারণেই আমাদের নেতা তারেক রহমান তার পিতার আদর্শকে অনুকরণ ও লালন করে জনগণকে সকল ক্ষমতার উৎসে পরিণত করার জন্য আমাদেরকে আপনাদের কাছে পাঠিয়েছেন।”
বিগত ১৫ বছরের শাসন নিয়ে তিনি তীব্র সমালোচনা করেন। সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, “বিগত ১৫টি বছর এদেশের মানুষ অত্যন্ত বিপদের মধ্যে ছিল। আপনারা দেখেছেন তৎকালীন সরকার নারায়ণগঞ্জকে একটি সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিণত করেছিল। বন্দর ও সদরে তারা তাদের রাম রাজত্ব কায়েম করেছিল। তারা তাদের নিজস্ব কর্মী বাহিনী দিয়ে জনগণকে নির্যাতন ও নিপীড়ন করেছিল।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “তারা জনগণের সম্পদ লুটপাট করে দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন এবং বিদেশে পাচার করেছে। এর থেকে বাংলাদেশকে উত্তরণ করতে হবে। আমরা চাই নারায়ণগঞ্জে আমরা সুখে-দুঃখে একসাথে বসবাস করতে।”
বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমরা যারা বিএনপি করি, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের কর্মী, আমরা যারা বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ভালোবাসি এবং দলের সিদ্ধান্তকে যারা পছন্দ করি ও মেনে চলি, আপনারা কেউ জনগণের বিপক্ষে যাবেন না, জনগণকে হয়রানি করবেন না। জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করবেন না।” তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা বলতে চাই, কোনো সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদকাসক্ত ব্যক্তির বিএনপিতে ঠাঁই নাই। বিএনপি তাদেরকে গ্রহণ করবে না।”
সম্প্রতি দেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের বিষয়ে তিনি বলেন, “আপনারা দেখেছেন জুলাই বিপ্লবের পরে দেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। গত ১৫ বছরে এদেশের মানুষের যে ভোটার অধিকার হরণ করা হচ্ছে তা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এবং দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই সরকার গঠন করা হয়েছে।”
কিছু রাজনৈতিক দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “কিছু রাজনৈতিক দল আছে তারা নির্বাচনকে ভয় পায়। বিভিন্ন তালবাহানা করে নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে চায়। তারা চায় না এদেশে দ্রুত কোনো একটি নির্বাচন হোক এবং জনগণ তাদের ভোটার অধিকার প্রতিষ্ঠা করুক। আমরা সেই অবস্থা হতে দিতে চাই না। আমরা চাই অতি দ্রুত আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। আগামী রোজার আগেই এই নির্বাচন করতে হবে।”
সাখাওয়াত হোসেন খান একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য কিছু শর্তও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমরা চাই সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। আর এই নির্বাচন যদি করতে হয় তাহলে আগে এই দেশে যারা আওয়ামী লীগের দোসর রয়েছে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে হবে। যারা বিভিন্ন প্রশাসনের দফতরে ঘাপটি মেরে আওয়ামী লীগের দোসররা বসে আছে তাদেরকে আগে চিহ্নিত করে তাদেরকে চাকরি থেকে অপসারণ করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।”
বন্দর থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী আল আমিনের সভাপতিত্বে এবং মদনপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি পদপ্রার্থীর সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।