শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
জেলাজুড়েসদর

ফতুল্লা জলাবদ্ধতায় আমাদের দোষ রয়েছে: সিভিল সার্জেন

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জেলা সিভিল সার্জন মশিউর রহমান বলেন, ফতুল্লা জলাবদ্ধতা হয়েছে এটা আসলে দুঃখজনক ব্যাপার। তবে এখানে আমাদের দোষ রয়েছে। আমার ফতুল্লায় বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আছে। অনেকেই বাড়িতে সেফটি ট্যাংক ব্যবহার করে না। একটা পাইপ বের করে দিয়েছে ড্রেনের মধ্যে, সব ধরনের ময়লা-আবর্জনা ও প্লাস্টিক ড্রেনের পানিতে যাচ্ছে। আমাদের সচেতনতা বাড়াতে হবে, তাহলেই পরিবেশ রক্ষা সম্ভব।

বুধবার (৫ জুন) সকালে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র‍্যালির আয়োজন করেছে করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সম্মেলন কক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় এ কথা বলেন জেলা সিভিল সার্জন মশিউর রহমান। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাকিব আল রাব্বির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক। আরও উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমীন সাগরসহ জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সিভিল সার্জেন আরও বলেন, তৃতীয় শ্রেনী থেকে পরিবেশ সম্বন্ধে আমাদের ধারণা দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, আশপাশে যা কিছু আছে সব কিছু নিয়েই আমাদের পরিবেশ। এই পরিবেশ রক্ষা করতে হলে, এ বিষয়ে অনেক শিক্ষা আমাদের গ্রহণ করতে হবে। পরিবেশকে রক্ষা করতে হলে আমাদের অনেক অভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে। শিশুরা প্রতিজ্ঞা করুক যে চিপসের বা বিভিন্ন খাদ্যের গ্রুপদের প্যাকেট যেখানে সেখানে ফেলবো না। তাহলেই দেখবেন পরবির্তন শুরু হয়েছে। যদি আইনের কথা বলতে যাই, তাহলে বাজার থেকে মুরগি যদি পায়ে ধরে ঝুলিয়ে নিয়ে আসে সেখানে আইনে জরিমানার বিষয় আছে। এখন যদি কোন সাধারণ মানুষ বাজার থেকে একটি মুরগি কিনে সেটাকে পায় বেঁধে ঝুলিয়ে আনে, আর আমি যদি তাকে জরিমানা করি সে তো আমাকে গালি দিবে। এই আইনগুলো তৈরি হয়েছে যাতে করে আমরা পশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করি। তবে আমরা দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করতে দুই একজনকে শাস্তি দেই। শাস্তি দিয়ে পরিবেশ রক্ষা করা যাবে না যতদিন না পর্যন্ত সচেতনতা না আসবে। সচেতনতা ছাড়া এই পরিবেশ রক্ষা করা যাবে না।

তিনি বলেন, ২০৪১ সালের যে স্বপ্ন আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেখেন তখন হয়তো আমরা অনেকেই থাকবে না কিন্তু বাচ্চারা থাকবে। তাই বাচ্চাদের মধ্যে সেই অনুভূতিটা জাগ্রত করতে হবে যে আমার পরিবেশ আমি রক্ষা করব। আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের পরিবেশটা সুন্দর করে গড়ে তুলতে হবে। যে রেমাল বাংলাদেশের একটি অংশকে লন্ডভন্ড করে দিল এই রুমালের জন্য দায়ী আমরা। এই রেমাল একদিনে সৃষ্টি হয়নি। ২০০ বছর আগ থেকে এটি সৃষ্টির কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। আমাদের কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়েছে, গ্লোবাল ওয়ার্মিং বেড়েছে, আমাদের দেশের সবুজায়ন কমে গেছে। আমাদের দেশে যে পরিমাণ গাছ থাকার কথা, সে পরিমাণ গাছ এখন নেই। একটি গাছ কাটলে দশটি গাছ লাগানোর দরকার কিন্তু আমরা সেটা পালন করি না। শিল্প কখনো দেশের বিরুদ্ধে না। আমরা যখন একটি প্রকল্প বা কাজ হাতে নেব তখন সেটা পরিবেশের উপর কতটা প্রভাব পড়বে সেটা আগে থেকেই নির্ণয় করতে হবে। সেই প্রভাবটা যতটা কমিয়ে আনার সম্ভব এর উপরে কাজ করতে হবে। কারণ দেশ এগোতে হলে শিল্পের কোন বিকল্প নেই।

সিভিল সার্জেন আরও বলেন, এই শীতলক্ষ্মার পানি এত পরিষ্কার ছিল যে মানুষ সরাসরি পানি পান করতো। শীতলক্ষ্যার তলদেশ খালি চোখে দেখা যেত। এই শীতলক্ষাকে ঘিরে হাজার হাজার শিল্প কারখানা গড়ে তোলা হলো। আমরা চাইলে একটি শিল্প কারখানা বন্ধ করতে পারি না কারণ একটি কারখানায় হাজার হাজার শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র গঠন করে। পরিবেশ রক্ষাটা আসলে বৃহৎ একটি বিষয়। এখানে আমাদের সবাইকে মিলে কাজ করতে হবে। জেলা প্রশাসক মহোদয় পরিবেশ সম্বন্ধে অনেক সচেতন। তিনি এ বিষয়গুলোতে আমার কাজ করে যাচ্ছেন।

RSS
Follow by Email