ফতুল্লায় জমি ব্যবসায়ী হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ফতুল্লায় জমি ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদকে হত্যার অভিযোগ তুলে তার প্রথম পক্ষের সন্তান আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। পরকীয়া প্রেমে বাধা দেওয়ায় বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে লাশ জোরপূর্বক দাফন করা হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ঘটনা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে নিহত আব্দুর রশিদের প্রথম স্ত্রীর বড় ছেলে রুবেল হাওলাদার বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মহিন উদ্দিন কাদেরের আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন— নিহতের দ্বিতীয় স্ত্রী মোর্শেদা বেগম (৪২), মোর্শেদার দুই মেয়ে জাকিয়া সুলতানা (২১) ও মায়া আক্তার (৩৫) এবং মোর্শেদার কথিত পরকীয়া প্রেমিক জাকারীয়া ভেন্ডার (৫৫) সহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন সন্ত্রাসী।
শনিবার বিকেলে মামলার আদেশ পাওয়ার পর বাদী পক্ষের আইনজীবী সাইদুর রহমান সাব্বির জানান, বিজ্ঞ আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্ত করে দ্রুত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ আগস্ট রাতে ফতুল্লার ভুইগড় মাহমুদপুর এলাকায় জমি ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের নিজ বাড়িতে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে, বাড়িটি আগেই দ্বিতীয় স্ত্রী মোর্শেদা বেগম ও তার মেয়ে জাকিয়া সুলতানার নামে লিখে নেওয়া হয়েছিল। এরপর মোর্শেদার সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন জাকারীয়া ভেন্ডার।
বাদী পক্ষের আইনজীবী আরো উল্লেখ করেন, আব্দুর রশিদ তার দ্বিতীয় স্ত্রী মোর্শেদা বেগমকে নিজ ঘরে পরকীয়া প্রেমিকের সাথে অন্তরঙ্গ সময় কাটাতে দেখে প্রতিবাদ করতেন। এ ছাড়া মোর্শেদার আগের পক্ষের মেয়ে মায়া আক্তার প্রায় সময় আব্দুর রশিদকে বাড়ির জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতেন। এসব নিয়ে প্রতিবাদ করলেই মোর্শেদা বেগম তার দুই মেয়েকে সাথে নিয়ে আব্দুর রশিদকে মারধর করতেন।
আইনজীবী সাইদুর রহমান সাব্বিরের দাবি, হত্যাকাণ্ডের রাতে আব্দুর রশিদ নিজেই আশপাশের লোকজনকে খুন হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানেরা বাড়িতে এসে আব্দুর রশিদের রক্তাক্ত লাশ দেখে এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে সন্দেহ করেন। তারা থানায় খবর দিতে চাইলে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ভয় দেখিয়ে তড়িঘড়ি করে মাহমুদপুর কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয় বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আসামি মোর্শেদা বেগম তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, “জাকারীয়া ভেন্ডারের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই। সে আমার স্বামীর সাথে ব্যবসা করতেন। তারা মামলায় যা উল্লেখ করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট।”
বর্তমানে বিষয়টি পিবিআইয়ের তদন্তাধীন রয়েছে।