প্রয়াত খেলোয়াড় মতিউর সেন্টু’র স্মরণে শুকতারার স্মরণ সভা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শুকতারা যুব সংসদের সাবেক খেলোয়াড় ও আলোকচিত্রী মতিউর সেন্টুর স্মরণ সভায় বক্তারা বলেন, অসাধারণ ফুটবল খেলতেন সেন্টু। তার নৈপুর্ণ্য ও নান্দনিক খেলা এখনো চোখের সামনে জ্বল জ্বল করে। সেন্টুর অকাল প্রয়াণ শুকতারা ক্লাব হারিয়েছে তার নিবেদিত প্রাণ একজনকে সাবেক খেলোয়াড়কে। সাংবাদিকতায় সেন্টু অর্জন করেছিলেন সাফল্য। জীবিকার তাগিদে দেশের বাইরে পাড়ি জমিয়ে গেলেন না ফেরার দেশে।
রোববার বাদ আসর নারায়ণগঞ্জ শহরের অক্টো অফিস এলাকায় অবস্থিত শুকতারা যুব সংসদ প্রাঙ্গনে আয়োজিত স্মরণ সভা বক্তারা এসব কথা বলেন। স্মরণ সভায় বক্তাদের বক্তব্য শেষে প্রয়াত মতিউর সেন্টুর রূহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মোনাজাত করা হয়।
ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোজাম্মেল হক তালুকদারের সভাপতিত্বে মাহমুদুল হক শাহীনের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় বক্তব্য রাখেন, ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি কামরুজ্জামান বাদশা, সোলায়মান সরকার, রহমত উল্লাহ, ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান, কোষাধ্যক্ষ সাইদুর রহমান, সাবেক খেলোয়াড় ও বাংলাদেশ নিটিং ওনার্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি রাকিবুল হাসান ও আবুল বাশার, জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সদস্য মোস্তফা কায়সার, নিহত মতিউর সেন্টুর বড় ভাই মজিবুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
মতিউর সেন্টু সর্ম্পকে স্মরণ সভায় ক্লাবের সভাপতি মোজাম্মেল হক তালুকদার তার বক্তব্যে বলেন, মতিউর সেন্টু লেফট বেক পজিশনে খেলতো। খুব ভালো খেলতেন। মাঠে শৃঙ্খলা নিয়ে অসাধারণ খেলতেন। ওর সেই এখনও চোঁখের সামনে জ্বল জ্বল করে। ৮৫ সাল থেকে ক্লাবে নিয়মিত খেলেছে। খেলাধুলার সুনামের সঙ্গে সাংবাদিকতায় অর্জন করেছেন অসাধারণ কৃতিত্ব। জীবিকার তাগিদে দেশের বাইরে পাড়ি জমিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানেই তিনি প্রাণ হারান তিনি। আমরা তার রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি সোলায়মন সরকার বলেন, আমাদের ক্লাবের খেলোয়াড় ছিলেন, দারুণ খেলতো। অপরিণত বয়সে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন-এই দু:খজনক। তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি।
মতিউর সেন্টুর এই অকাল প্রয়াণ আমাদের মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়ে ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি রহমত উল্লাহ বলেন,ক্লাব নিবেদিত প্রাণ তার এক কর্মীকে হারালেন।
মতিউর সেন্টু সর্ম্পকে ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন বলেন, পরিশ্রম করে খেলতেন। সাংবাদিকতা সাফল্য অর্জন করে অনেক দূর গিয়েছিলেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান বলেন, প্রাক্তণ খেলোয়াড়রা আমরা সবাই শুকতারার প্রাণ। এই বন্ধন আমাদের ধরে রাখতে হবে।
ক্লাবের সাবেক খেলোয়াড় আবুল বাশার বলেন, ক্লাবে খেলেছেন, সাংবাদিকতা করতেন সেন্টু। সামনের দিনে আমরা সবাই এক সঙ্গে যাতে বসতে পারি এবং ক্লাবের উন্নয়নে কাজ করতে পারি সে ব্যাপারে সচেষ্টা থাকতে হবে।
স্মরণ সভায় বক্তারা আরও বলেন, এক ঝাঁক নতুন খেলোয়াড়ের সঙ্গে মতিউর সেন্টু ৮৫ সালে শুকতারা ক্লাবে যোগ দেন। এরপর থেকে তিনি নিয়মিত খেলতেন। বিনয়ী ভদ্র হাসি খুশি ছিলেন মতিউর সেন্টু। অসাধারণ খেলতেন। আমাদের হক ভাইয়ের প্রিয়জন ছিলেন। খুব অসময়ে আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন তিনি। তার মৃত্যুতে শুকতারা অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। শোকাহত সেন্টুর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান তারা।
স্মরণ সভায় মতিউর সেন্টুর ভাই মজিবুর রহমান বলেন, আমার ভাই মতিউর আপনাদের কত কাছের ছিলেন, আজকের এই আয়োজন তার প্রমাণ। আমার ভাই সর্ম্পকে আপনারা সবাই ভালো জানেন। আপনারা তার সর্ম্পকে যে মূল্যায়ন করলেন তা খুব অসাধারণ। তিনি মতিউর সেন্টুর জন্য সকলের কাছে দোয়া চান।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি শহীদ হোসেন স্বপন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মেহেবুবুল হক তালুকদার টগর, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য শ্যামা, সাবেক খালোয়াড় নাদিম হাসান মিঠু, সবুর খান, খোকন, জাবেদ হোসেন, টিপু হোসেন, আওলাদ, কালু, রবি, পিলু, জাহাঙ্গীর, গণেশ, বাদলসহ শুকতারা যুব সংসদের সাবেক খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ সেপ্টেম্বর ইতালীতে মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে ইন্তেকাল করেন শুকতারা ক্লাবের সাবেক খেলোয়াড় ও দৈনিক ইনকিলাবের সিনিয়র আলোকচিত্রী মতিউর সেন্টু। মরদেহ দেশে আনাহলে ১৯ অক্টোবর পাইকপাড়া বড় কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।