রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
Led04বন্দর

প্রথমে চাকরি দিয়ে সহায়তা, পরে অপহরণ করে মুক্তিপন আদায়ের চেষ্টা

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ‘কাজের সন্ধানে নারায়ণগঞ্জ আসেন রাহিম নামে এক যুবকে। বন্দরের ইউনুস আলীর সাথে পরিচয় সুবাদে কৃষি কাজে যুক্ত হয়। প্রায় দুইমাস কাজ করার পর অর্জিত অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য সেই ইউনুস আলী বল প্রয়োগ করে। একপর্যায়ে নিজ গ্রামে ফিরে যাওয়ার সময় ওই যুবককে অপহর করে তার পরিবারের কাছে ৬০ হাজার টাকা দাবি করে কর্মদাতা ইউনুস আলী। তবে র‌্যাবের বিশেষ অভিযানে আটক হয় ইউনুসসহ সহযোগীরা, সাথে উদ্ধার করা হয় রাহিমকে।’

সোমবার (২১ অক্টোবর) র‌্যাব-১১ মিডিয়া অফিসার (মেজর) মো. অনাবিল ইমামের সাক্ষরিত, এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। উদ্ধারকৃত যুবক মো. রাহিম (১৮) সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার জিয়াপুর গ্রামের মো. মইনুল করিমের ছোট ছেলে।

র‌্যাব জানায়, আনুমানিক দুই মাস পূর্বে কাজের সন্ধানে নারায়ণগঞ্জ আসেন রাহিম। বন্দরে ইউনুস আলী (৩৪) নামের একজনের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর তারা একত্রে কৃষি কাজে দিনমজুর হিসেবে কাজ শুরু করেন। প্রায় দুই মাস কাজের মজুরির জমা করা টাকাগুলো রাহিম নিজের কাছে রাখে, কিন্তু ইউনুস আলী সেই টাকাগুলো দাবি করে। রাহিম দিতে না চাইলে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে গত ১৫অক্টোবর রাত সাড়ে ১০ টায় রাহিম তার জমানো টাকাগুলো নিয়ে তার নিজ বাড়িতে চলে যাওয়ার জন্য মদনপুর বাস স্ট্যান্ড যায়। রাত্র ১১টায় বাস স্ট্যান্ডে ইউনুসসহ অন্যান্য আটককৃতরা রাহিমকে অপহরণ করে। পরে বন্দর আনন্দনগর এলাকায় নিয়ে গিয়ে তার সাথে থাকা ২০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন জোরপূর্বক নিয়ে যায় এবং মুক্তিপণ হিসেবে আরও ৬০ হাজার টাকা দাবী করে।

র‌্যাব আরও জানায়, মুক্তিপণের টাকার জন্য ভুক্তভোগী রাহিমের ব্যবহৃত মোবাইল থেকে তার বড় ভাই নাঈমকে ফোন দিয়ে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে কাঁচপুরে আসতে বলে। মুক্তিপণের টাকা দিতে দেরি হওয়ায় রাহিমকে এলোপাতারী চরথাপ্পর ও কিলঘুষি মারে। পরে মুক্তিপণের টাকা দিতে দেরি হওয়ায় উপরে উল্লেখিত অপহরণকারীগণ ভিকটিমের ভাইকে ফোনে ভিকটিমকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে। পরবর্তীতে ভিকটিমের বড় ভাই নাঈম সুনামগঞ্জ থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হাজির হয়ে এই সংক্রান্তে একটি সাধারণ ডায়রী করেন।

র‌্যাব-১১ মিডিয়া অফিসার (মেজর) মো. অনাবিল ইমাম প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, পরবর্তীতে রাহিমের বড় ভাই নাঈম আইনগত সহায়তা প্রাপ্তির জন্য র‌্যাব-১১, বরাবর লিখিত আবেদনসহ সিদ্ধিরগঞ্জ থানার দায়েরকৃত জিডির কপি প্রদান করেন। তারই ধারাবাগিকতায় র‌্যাব-১১ একটি পিম ২০ অক্টোবর রাতে বন্দর আনন্দনগর বাইতুন নুর জামে মসজিদ এলাকা হতে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় চক্রের নারী সদস্যসহ ৫ জন অপহরণকারী গ্রেফতার এবং তাদের হেফাজত হতে অপহৃত ভিকটিম উদ্ধার।

আটককৃতরা হলো, সুনামগঞ্জ শান্তিগঞ্জ উক্তিরপাড় এলাকার মমসুর আলীর ছেলে ইউনুস আলী (৩৪), একই এলাকার খদর আলীর স্ত্রী ও মৃত শুকুর আলীর মেয়ে মার্জিয়া বেগম (২৫), বন্দর আনন্দনগর সরাইল এলাকার আনসু মিয়ার ছেলে মো. হাসান (২২), আনজুম মিয়ার ছেলে মো. নাজমুল (২৮), বন্দর চাপাতলী এলাকার মো. গোলাজার হোসেনের ছেলে মো. জহিরুল ইসলাম (৩২)।

র‌্যাব-১১ সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, আসামীদের গ্রেফতার ও তাদের হেফাজত হতে ভিকটিম মো. রাহিমকে উদ্ধারের পর ভিকটিমের বড় ভাই নাঈম বন্দর থানায় নিজে বাদী হয়ে এই সংক্রান্তে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করেন। যা বন্দর থানার মামলা নং-২৭, তারিখ-২১/১০/২০২৪ ইং, ধারা-৩৬৫/৩২৩/৩৮৫/৩৮৬ পেনাল কোড ১৮৬০।

RSS
Follow by Email