পরিবার নিয়ে বাঁচতে চায় রফিকুল, বোন-ভাগ্নের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বাবার প্রথম সংসারে ৬ মেয়ে। ৪২ বছর আগে ৬ সন্তান রেখে মারা যায় সেই প্রথম সংসারের স্ত্রী। ফের বিয়ে করলে সেই ঘরে রফিকুলসহ দুই বোন জন্ম নেয়। জন্মের পর থেকেই ৩ ভাই-বোন একসাথে পৈত্রিক বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। ২০০৪ সালে বাবা মারা যাওয়ার সময় রেখে যাওয়া ১৮ শতাংশ জমির মধ্যে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ জমি আগেই বড় মা অর্থাৎ প্রথম স্ত্রীর নামে লিখে দিয়েছিলেন। এর মধ্যে প্রথম ঘরের ৬ কণ্যা সন্তানের মধ্যে ৩ কণ্যা সন্তানের নামে ৫ দশমিক ১২ শতাংশ লিখে দেয় বাবা।
অবশিষ্ট জমির মধ্যে থেকে নিজের ভাগের জমি রফিকুল দাবি করলে, তার উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠে প্রথম ঘরের মেয়ে সেতারা আক্তার সেলিনা ও তার ছেলে কায়েস আহম্মেদ পল্লবের বিরুদ্ধে। এ সময় তাদের বাড়িতে হামলা ও লুট পাট চালায় তারা। রফিকুলের স্ত্রীর গলায় স্বর্ণের চেইনসহ মোবাইল ও ঘরের দামি জিসিপত্র লুট করে। অন্যান্য আসবাবপত্রে ভাঙ্গচুর চালায়। পরবর্তীতে অসহায় হয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হলেও নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন রফিকুল ও তার পরিবার।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করেন রফিকুল ইসলাম রিয়াদ ও তার সহধর্মীনি আয়েশা আক্তার। এ সময় গণমাধ্যমের সহযোগীতায় জীবনের নিরাপত্তা চায় প্রশাসনের কাছে। ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তে করে আইনের সহায়তা চায় অসহায় এই ভুক্তভোগী পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে রফিকুল ইসলাম রিয়াদ জানায়, আমি ফতুল্লা পশ্চিম দেওভোগ কৃষ্ণচূড়ার মোড় এলাকার বাসিন্দা। আমি জন্ম থেকেই পৈত্রিক বাড়ীতে বসবাস করে আসছি। আমার সৎ মা তাহার ঔরষে ৬ কন্যা রেখে তিনি ১৯৮২ সালে মারা যান। পরবর্তী আমার বাবা ২য় বিবাহ করেন এবং ২য় স্ত্রী অর্থাৎ আমার মায়ের গর্ভে আমি ও দুই বোন জন্ম গ্রহণ করে।
২০০৪ সালে আমার পিতা মৃত্যু বরণ করার পর থেকে আমাদেরকে আমার পৈত্রিক বাড়ী থেকে উচ্ছেদ করার জন্য আমার সৎ ৬ বোনসহ তাদের একজন ছেলে (ভাগ্নে) নানা রকম অন্যায়, অত্যাচার ও ষড়যন্ত্র করে আসছে। তখন এলাকার বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে বিষয়টি জানাই এবং তারা বিষয়টি সামাজিক ভাবে মিমাংশা করার জন্য তাদেরকে একাধিক বার ডাকে কিন্তু তারা কোন ভাবেই মিমাংশা করার জন্য রাজি হয় নাই এবং উপস্থিত হয় নাই। গত ২ বছর থেকে তাদের অত্যাচারের পরিমাণ মাত্রারিক্ত হয়ে যায়। আমাদেরকে বাড়ী ছাড়ার জন্য নানা রকম হুমকি প্রদান করতে থাকে। বাড়ী না ছাড়লে আমাদের মারধর করে বাড়ী ছাড়া করবে এবং প্রাণ নাশের হুমকি দিয়া আসছে।
তিনি আরও জানায়, গত বছরের ১৬ জুন আমার সৎ বোন সেতারা আক্তার সেলিনার ছেলে কায়েছ আহম্মেদ পল্লব তার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমাদের বসত বাড়ী ভাংতে আসে। আমি এই ব্যাপারে ১৪৫ ধারায় নারায়ণগঞ্জ কোর্টে একটি মামলা করি। মামলার ধারা অনুযায়ী শান্তি শৃংখলা বজায় রেখে উভয় পক্ষ মিমাংশার করার জন্য বলিলে তাতেও কোন কাজ হয় নাই। পরবর্তীতে আমি একটি বন্টননামা মামলা করি। আমার সৎ বোনদের সাথে সম্পদের ফরায়েজ নিয়ে বন্টন নামা মামলা বিরাজমান, নারায়ণগঞ্জ জেলা কোর্ট আদালতে রয়েছে যার মামলা নং ২৬৩/২০২৩। মামলা। করার পর থেকে তারা আমাকে বিভিন্ন রকম হুমকি প্রদান করে আসছে। গত ৮ আগস্ট আমার সৎ বোন সেতারা আক্তার সেলিনার ছেলে কায়েছ আহম্মেদ পল্লব ১৫০ থেকে ২০০ সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান (জুট ব্যবসা) ও বসত বাড়ীতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর চালায় আমাকে এবং আমার স্ত্রীকে মারধর করে। এই বিষয়ে আমি ফতুল্লা থানায় এবং ডিসি অফিসে অভিযোগ দায়ের করি। ঐ ঘটনা বিভিন্ন পত্রিকায়, সামাজিক মাধ্যমেও প্রকাশিত হয়। এরপর থেকেই কায়েছ আহম্মেদ পল্লব আমার ক্ষতি করার জন্য এবং আমাকে মেরে ফেলার জন্য একাধিক বার হুমকি প্রদান করছে এবং আমার ব্যক্তিগত সুনাম নষ্ট করার জন্য আমার নামে মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন সংবাদ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ করছে। আমার সৎ বোনেরা আমাকে আমার বৈধ প্রাপ্য সম্পত্তি কম দেওয়াতে আমার প্রকৃত হিস্যা দাবী করে মামলা দেওয়াতেই শত্রুতা করে টাকা-পয়সা, ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে আমাকে মেরে ফেলতে চেষ্টা করছে। আমি আইনের আশ্রয় চাই। কায়েছ আহম্মেদ পল্লব ও আমার সৎ বোনেরা ছাড়া আমার কোন শত্রু নাই। আমার এবং আমার পরিবারের কোন ক্ষতি হলে তার জন্য একমাত্র তারাই দায়ী থাকবে।