পরকীয়া প্রেমিক নিয়ে ছেলেকে হত্যা, গ্রেপ্তার ১
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: পরকীয়া প্রেমিক ও তার ২ সহযোগীকে নিয়ে ছেলেকে খুন করে মা।
আদালতে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মাসহ তাঁর পরকীয় প্রেমিককে দেওয়া হয় মৃত্যুদন্ড। যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হয় ২ সহযোগীরা।
হৃদয় বিদারক এই ধটনাটি চাঁদপুরের হাইমচরের হলেও শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর থেকে খুনের সাথে জড়িত এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম মো. মাহবুব মোল্লা (৩৮)। সে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ থানার উত্তর বিষকাটলি এলাকার বিল্লাল মোল্লার ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, হত্যার শিকার আরিফ হোসেন তার মা খুকি বেগমের সাথে জয়নাল গাজীর পরকীয়া সম্পর্কের কথা জানতেন। এ বিষয়ে মা ও ছেলের সম্পর্কের অবনতি হয়। ২০১৫ সালের শুরুতে ছেলে আরিফ হোসেন প্রেমের সম্পর্ক করে পার্শ্ববর্তী উত্তর আলগী ইউনিয়নের মিজিবাড়ির আব্দুস সালাম মিজির মেয়ে আসমা আক্তারকে (১৯) বিয়ে করেন। তাদের বিয়ে মা খুকি বেগম প্রথমে মেনে না নিলেও এক পর্যায়ে মেনে নেন। এরপর মা, ছেলে ও ছেলের বউয়ের সাথে বিভিন্ন বিষয়ে ঝগড়াবিবাদ হতো। এরই মধ্যে মা খুকি বেগম ছেলেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারই আলোকে ২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর ছেলের বউ আসমা বেগমকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এরপর ১৮ নভেম্বর পরিকল্পিতভাবে মা খুকি বেগম নিজ গৃহে পরকীয়া প্রেমিক জয়নাল গাজী ও সহযোগীদের দিয়ে ছেলে আরিফকে ঘুমন্ত অবস্থায় হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে, দা দিয়ে কুপিয়ে এবং ব্লেড দিয়ে কেটে মৃত্যু হয়েছে মনে করে ঘরের মেঝেতে ফেলে চলে যায়। পরদিন ১৯ নভেম্বর সকালে খুকি বেগম আরিফের স্ত্রী আসমাকে ফোন করে জানান, ডাকাতরা আরিফকে জখম করে ফেলে গেছে। আসমা তাৎক্ষণিক স্বামীর বাড়িতে চলে আসেন এবং আরিফকে উদ্ধার করে প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে ঢাকা নেওয়ার পথে মতলব ফেরিঘাটে পার হওয়ার সময় আরিফের মৃত্যু হয়।
ঘটনার পর আরিফ হোসেনের স্ত্রী আসমা আক্তার বাদি হয়ে শাশুড়ি খুকি বেগমসহ অজ্ঞাতপরিচয়ের ব্যক্তিদের আসামি করে হাইমচর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচার শেষে ২০২৩ সালের ২৩ আগস্ট খুকি বেগম (৫০) ও জয়নাল গাজীকে (৩৫) মৃত্যুদণ্ড এবং সহযোগী দুই আসামি ইউছুফ মোল্লা (৩৬) ও মাহবুব মোল্লাকে (৩৮) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করে। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
র্যাবের কাছে দেওয়া স্বীকারুক্তিতে গ্রেপ্তারকৃত মাহবুব মোল্লা জানায়, ঘটনার পর গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় ৩ বছর জেলে ছিলেন। পরবর্তীতে জামিনে বের হয়ে চাঁদপুর থেকে পালিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে থাকেন।