নিখোঁজের একদিন পর ড্রেনে মিলল যুবকের বস্তাবন্দি লাশ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ফতুল্লায় এক যুবকের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকালে ফতুল্লার পূর্ব শিয়াচর লালখা এলাকার এডভান্স গার্মেন্টস সংলগ্ন গলির পাশে একটি ড্রেন থেকে ওই লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত ওই যুবকের নাম জনি সরকার (২৫)। প্রাথমিক সুরতহালে পুলিশ ধারণা করছে, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে, যখন কর্মব্যস্ত দিনের শুরু, তখনই কিছু পথচারীর চোখে পড়ে ড্রেনের ঘোলা জলে ভাসমান একটি রহস্যময় বস্তা। প্রথমে হয়তো কেউ গুরুত্ব দেয়নি, কিন্তু বস্তার ভেতর থেকে উঁকি দেওয়া একটি মানুষের পা দেখে আঁতকে ওঠে সবাই। মুহূর্তেই খবর ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। উৎসুক জনতা ভিড় করে ঘটনাস্থলে। স্থানীয় ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. হান্নানুর রফিক (রঞ্জু) কে খবর দেওয়া হলে তিনি দ্রুত ফতুল্লা মডেল থানায় বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বস্তাটি উদ্ধার করে এবং তা খুলতেই বেরিয়ে আসে এক ভয়াবহ চিত্র; হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক যুবকের নিথর দেহ।
নিহত জনি সরকার সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ থানার বিষ্টপুর গ্রামের বাসিন্দা। ফতুল্লার লালখা এলাকার দুলাল মিয়ার বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। তার বাবা করুণা সরকার নারায়ণগঞ্জ শহীদ রিয়া গোপ (খান সাহেব ওসমান আলী) ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নৈশপ্রহরীর কাজ করেন। মা এবং দুই বোন নিয়ে লালখা এলাকায় সাদামাটা জীবনযাপন করছিল জনির পরিবার। জনি নিজেও মাঝে মধ্যে গার্মেন্টসে কাজ করে পরিবারের পাশে দাঁড়াতেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, সোমবার রাত ১০টার দিকে জনি বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফেরেননি। সকালে এই মর্মান্তিক খবর পেয়ে তার বাবা করুণা সরকার ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন এবং নিজ সন্তানের লাশ শনাক্ত করেন। প্রিয়জনের এমন নৃশংস মৃত্যুতে পরিবারে নেমে এসেছে শোকের মাতম।
ফতুল্লা মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, “প্লাস্টিকের বস্তায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় জনির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার নাক-মুখে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে এবং গলায় কাপড় পেঁচানো ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।”
পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।