না.গঞ্জ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে হামলায় রক্তাক্ত দেশের প্রথম নারী চালক
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী একটি ট্রেনে একদল উশৃঙ্খল যুবকের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন দেশের প্রথম নারী ট্রেন চালক সালমা খাতুনসহ অন্তত ৩ জন। ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে হামলা ও পাথর নিক্ষেপের কারণে ট্রেনের জানালার কাচ ভেঙে যায়, যা কর্মীদের চোখে-মুখে লেগে আঘাতের সৃষ্টি করে।
শুক্রবার রাতে ঢাকার গেন্ডারিয়া স্টেশনে এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই চালক সালমা খাতুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
সালমা খাতুনের টাইমলাইন থেকে ‘রেল তথ্য নারায়ণগঞ্জ’ নামে একটি আইডি তাঁর বক্তব্যটি ফেসবুকে প্রকাশ করে। সেই পোস্টে তিনি লেখেন, “এটাই হচ্ছে আমাদের চাকরির ধরন। মেয়ে মানুষ হলে তো আরও রিস্কি।”
তিনি বিস্তারিত উল্লেখ করেন: “আজ ৩/১০/২৫ ইং ডিউটিরত অবস্থায় যখন নারায়ণগঞ্জ স্টেশন থেকে ট্রেন চালিয়ে এসে গেন্ডারিয়া স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াই। নিয়মমতো লাইন ক্লিয়ার পাওয়ার পর যখন ঢাকার উদ্দেশ্যে ট্রেনটা স্টার্ট করি। তখনই কয়েকটা ছেলে এসে ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে জানালায় বাড়ি দিতে থাকে।”
সালমা খাতুন জানান, তাঁর সহকর্মী এবং ইঞ্জিনের ভিতরে থাকা আরেক সহকর্মী জানালা দিয়ে জানতে চাইলে, ছেলেগুলো ব্যাট দিয়ে মারতে উদ্যত হয়। দ্রুত জানালা বন্ধ করার পর পরই তারা পাথর নিক্ষেপ শুরু করে।
“জানালার ভেঙ্গে কাচগুলো আমাদের সবার চোখে মুখে লেগে যায়। আমার সহকর্মীর হাত কেটে যায় এবং ওর পেটে গিয়ে পাথরটা লাগে,” লেখেন তিনি।
পরে হামলার কারণ অনুসন্ধানে জানা যায় আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। সালমা খাতুন তাঁর পোস্টে লেখেন, “পরবর্তীতে আমি জানার চেষ্টা করি কি কারণে আমাদেরকে পাথর ছুড়েছে। পরে জানতে পারি আমার ইঞ্জিনের উপর থেকে একজন ছিনতাইকারী নেমে একটা ছেলের নিকট থেকে মোবাইল নিয়ে আবার ইঞ্জিনের উপরে উঠে যায়। আমাদেরকে মারার কারণ ইঞ্জিনের উপরে কেন ছিনতাইকারী? এই হচ্ছে আমার এবং আমাদের দেশের অবস্থা।”
এ বিষয়ে গেন্ডারিয়া রেলস্টেশনের মাস্টার আলমগীর হোসেন জানান, ঘটনাটি তিনি লোকমুখে শুনেছেন, কিন্তু ট্রেন চালক তাঁর কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি।
নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছেন যে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক পাথর নিক্ষেপ করেছে। সেই ট্রেনের চালক ছিলেন সালমা খাতুন। তিনি আরও জানান, এ বিষয়ে কেউ কমলাপুর রেলওয়ে থানায় অভিযোগ করেনি। তারপরও কমলাপুর থানা পুলিশের সহযোগীতায় উশৃঙ্খল যুবকদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।