না.গঞ্জে হাসনাত আব্দুল্লাহ ‘রাষ্ট্রযন্ত্র আ.লীগকে পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন প্রস্তুতি নিচ্ছে’
#শামীম ওসমানসহ প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হলে দরকার বিপ্লবের প্রোক্লেমেশন: সামান্থা শারমিন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী রাজনীতি করতে পারবে কি না এটা এখন প্রাসঙ্গিক না। আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত প্রতিটা নেতাকর্মীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ফ্যাসিবাদের পক্ষে যে কলম লিখবে আমরা সেই কলম ভেঙে দেব। যে মিডিয়া ফ্যাসিবাদের পক্ষে দাঁড়াবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবো। আপনারা যদি তরুণ প্রজন্মের কথা বুঝতে ব্যর্থ হন তাহলে আওয়ামী লীগের মতোই আপনাদের পরিণতি হবে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের প্রচারণা ও লিফলেট বিতরণের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করতে হাসনাত আবদুল্লাহ, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্থা শারমিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ নারায়ণগঞ্জে আসেন। সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয় গণসংযোগ এবং পথসভা কার্যক্রম। এরপর, বেলা সাড়ে ১১টায় আদমজী সড়ক ধরে শোভাযাত্রা করা হয় এবং সিদ্ধিরগঞ্জ চিটাগাং রোডে পথসভা ও গণসংযোগ করা হয়। সর্বশেষ, সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুরে পথসভা ও গণসংযোগের মাধ্যমে তাদের কর্মসূচি শেষ হয়।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমাদের পরবর্তী বাংলাদেশ হবে অতীতের রাজনীতির অভিজ্ঞতা ও তরুণ প্রজন্মের মনোভাবের সংমিশ্রণে। এখানে যদি তরুণদের মাইনাস করার চিন্তা থাকে তাহলে আমরা বলতে চাই, এ আন্দোলনে যত ক্রিয়াশীল ও ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ছিল তারা সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে এসে এ ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছি। আমরা বারবার বলেছি, সবার আগে আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে। যে-সব টকশোজীবী ও বুদ্ধিজীবী এখন আওয়ামী লীগের মানবাধিকারের জন্য সরব হয়েছেন, আপনারাই এতদিন ফ্যাসিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। রাষ্ট্রযন্ত্র আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্ন প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা বিপ্লবী শক্তি, আমাদের হারানোর কিছু নেই। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হবে কিনা সেটা এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কিছু নেই। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হবে কিনা তার সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে ৫ আগস্ট।
তিনি আরও বলেন, যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির পুনর্বাসন করতে চান তাদের বলতে চাই, আওয়ামী লীগের রাজনীতি পুনর্বাসিত হবে কিনা সেটা প্রশ্ন নয়। তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে। বিচারের আগে যারা পুনর্বাসনের কথা বলবে, যারা বলবে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না, আমরা ধরে নেব আওয়ামী লীগ যে জাহেলিয়াতের রাজনীতি কায়েম করেছিল তারাও তার দোসর ছিল। আমাদের রাস্তায় নেমে রক্ত দিতে হয়েছে। ভয়কে জয় করতে হয়েছে। আমাদের যে প্রতিহিংসার রাজনীতি তা তরুণদের যুগের পর যুগ আশাহত করেছে। রাজনৈতিক কাঠামো আমাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। এ ক্ষোভ থেকেই আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়েছি।
হাসনাত বলেন, আমাদের আল্টিমেটাম ১৫ তারিখ পর্যন্ত। অন্তর্বর্তী সরকার আমাদের কমিটমেন্ট দিয়েছে সব রাজনৈতিক দলের ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে প্রক্লেমেশন করা হবে। তবে দুঃখজনক হলো আমরা এখনও কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে দেখিনি। আমাদের উপদেষ্টাদের বলতে চাই, আপনারা আমাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনাদের যদি মনে হয় এখানে কোনো বাধা আছে সেটা জনগণের কাছে প্রকাশ করুন। আমরা আবারও রাস্তায় নেমে আসবো।
এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, শামীম ওসমান সহ আওয়ামী লীগের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হলে আমাদের একটা ঘোষণা পত্র দরকার, সেটাই হলো আমাদের বিপ্লবের প্রোক্লেমেশন।