মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪
Led01Led02অর্থনীতিবিশেষ প্রতিবেদন

না.গঞ্জে সরকারি নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে পলিথিন ব্যবহার

# ‘বাজারে পলিথিনের কোন বিকল্প ব্যাগ নেই’
# ‘চাল-ডাল কাগজের ব্যাগে দিলেও ক্রেতারা পলিথিন চেয়ে বসে’
# ‘মাছ-মাংস পলিথিন ছাড়া নিবো কিভাবে’
# ‘হাতে পলিথিন ব্যাগ দেখা মাত্র জরিমানার ব্যবস্থা করা উচিত’
# পলিথিন বন্ধে ধাপে ধাপে অভিযান অব্যাহত আছে : পরিবেশ অধিদপ্তর

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বাজারে নিষিদ্ধ করা হয়েছে পলিথিন ব্যাগ। কাঁচাবাজার, ভাসমানবাজার, প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারীসহ প্রায় সকল পর্যায়ে চলছে সরকারের অভিযান। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের বাজারে থেমে নেই পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার। জেলার বিভিন্ন বাজারে জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চলছে। তবুও ব্যবসায়ীরা পণ্য পলিথিনে করেই ক্রেতাদের কাছে সরবরাহ করছেন। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েই বলছেন, পণ্য বহনের জন্য পলিথিনের বিকল্প সামগ্রী এখনও হাতের নাগালে আসে নি। যার কারণে বন্ধ করা যাচ্ছে না পলিথিনের ব্যবহার।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সদর উপজেলার দ্বিগুবাবুর বাজার ও কালিরবাজারে ঘুরে দেখা যায়,ক্রেতা কিংবা বিক্রেতা কারও কাছে নেই পলিথিনের কোন বিকল্প ব্যাগ। চাল,ডাল, মসলা, মাছ, মাংস, সবজি, ফলসহ যেকোন নিত্য পণ্য বহন করতে ব্যবহৃত হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ। মসলা, চাউল-ডালের গুটি কয়েক দোকানে কাগজের ব্যাগে করে পণ্য দিতে দেখা যায়। তবে ক্রেতাদের অনুরোধে কাগজের ব্যাগে মোড়ানো পণ্য পলিথিনে নিতে দেখা যায়। সেই দোকানীদের সাথে কথা হলে জানান, পলিথিন নিষিদ্ধ করেছে সরকার, তা আমরা জানি। পলিথিনের বিকল্প ব্যাগ হিসেবে কাগজের ব্যাগ ও জালি ব্যাগ সংগ্রহ করেছি। তাতে করে চাউল, ডালসহ অন্যান্য মসলা সামগ্রী সরবরাহ করছি। তবে কিছু ক্রেতা পণ্য বহনের জন্য পলিথিন দেয়ার কথা বলেন।

বিজয় কৃষ্ণ নামে এক বিক্রেতা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, পলিথিন বন্ধ হউক সেটা আমারও চাওয়া। সেটার জন্য সরকারের উচিত পলিথিন উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া। তাহলে বাজারে সাপ্লাই আসবে না। আমি কাগজের ঠোসে করে আমার মালামাল দেয়ার চেষ্টা করি। স্টকে নতুন করে আর পলিথিন আনি নাই এখনও। চাল, ডালের মতো দু-একটা পণ্যের জন্য অনেক ক্রেতারা পলিথিন ব্যাগ চেয়ে বসেন। বাধ্য হয়ে দেয়ার লাগে। ক্রেতাদের ব্যাপারে পলিথিন ব্যাগ বহনের জন্য কিছু ব্যবস্থা নেয়া উচিত। নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া, ১নং রেল গেইট, ২নং রেল গেইট আর নিতাইগঞ্জে কারও হাতে পলিথিন ব্যাগ দেখা যায়, তাদেরকে এক‘শ টাকা করে জরিমানা করা উচিত। তাহলে সকলে সতর্ক হবেন।

দ্বিগুবাবুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, টমেটো, ফুলকপি, মূলা,লাল শাক, কচুর ছড়া, লাউ, কুমড়া, গাজর, আলু, পেঁয়াজ, আপেল, আনার, কলা, কাচ কলাসহ সকল প্রকার সবজি ও ফল বিক্রেতারা পণ্য বহনের জন্য পলিথিন ব্যবহার করছে। বাজার করতে আসা ক্রেতাদের হাতেও পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাট, কাপড়ে বা অন্য কোন ব্যাগ দেখা যায় নি। ক্রেতাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, বাজারে পলিথিনের কোন বিকল্প ব্যাগ নেই। দশ,পনের, বিশ টাকায় যে ব্যাগ পাওয়া যাচ্ছে তাও প্লাস্টিক পণ্য। তাই, পলিথিনে ব্যাগেই করে সবজি,ফল ও অন্যান্য নেয়া হচ্ছে।

সেলিম নামে এক ক্রেতা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, পলিথিন বন্ধ করা হয়েছে, তবে পলিথিনের বিকল্প কোথায়। বাজারে কোথাও পলিথিনের বদলে কাপড়, বা পাটের ব্যাগ পাই নাই। ছোট থাকতে আমার বাবা পাটের ব্যাগে করে তরকারি কিনতেন। বাজার করতে একই ব্যাগ দু-এক বছর চলত। সেই একই চিত্র বর্তমানে সম্ভব হলেও ব্যাপারটা মন্দ না। তবে আগে পলিথিন উৎপাদন বন্ধ করতে হবে। নয়ত পলিথিনের ব্যবহার বন্ধ হবে না। এরই সাথে পলিথিনের যেসকল বিকল্প ব্যাগের কথা বলা হচ্ছে, তা মানুষের হাতের নাগালে আসতে হবে।

আক্তার হোসেন নামে অপর ক্রেতা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, বাজারে পরিচিত কয়েকজন বিক্রেতা কাল থেকে ব্যাগ আনার কথা বলেছেন। আমিও ভাবছি কাপড় কিংবা পাটের ব্যাগ নিব। তবে এটা শুধু সবজি, ফল, চাল,ডাল, মসলার মতো শুকনো খাবারের জন্য চলবে। কিন্তু মাছ-মাংস পলিথিন ছাড়া নিবো কিভাবে। পলিথিনের অল্টারনেটিভ আমরা পেলে, সবাই তা জানলে ও সতর্ক হলে পলিথিন ব্যবহার বন্ধ হবে। এর আগে নয়।

আনোয়ার নামে এক সবজি বিক্রেতা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, দ্বিগুবাবুর বাজারে সেই রবিবারে অভিযান করেছিল, আর কোন খবর নাই। এক-দুই দিনের অভিযানে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। কারখানাগুলোতে পলিথিন উৎপাদন থামাতে হবে। সেই সাথে প্রতিনিয়ত সরকার, প্রশাসনকে কাজ করতে হবে এটা নিয়ে।

এদিকে, নারায়ণগঞ্জে পলিথিন বন্ধে ধাপে ধাপে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তর নারায়ণগঞ্জ‘র উপপরিচালক এএইচএম রাসেদ। তিনি লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, আমরা জেলায় বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান পরিচালনা করছি। পলিথিন ব্যাগ জব্দসহ জরিমানা করছি। আমরা আপাতত ব্যবাসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ক্রেতাদের দিকে এখনও আমরা কোন পদক্ষেপ নিচ্ছি না। পলিথিন বন্ধে আমাদের অভিযান চলবে।

RSS
Follow by Email