বুধবার, ডিসেম্বর ৪, ২০২৪
Led01Led02রাজনীতি

না.গঞ্জে সনাতন ধর্মলম্বীদের গিয়াসউদ্দিন ‘ভুল পথে পা দিয়ে সুখের সাম্রাজ্য অশান্তি আনবেন না’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে জন সমাবেশ করেছেন ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপি। শনিবার (৩০ নভেম্বর) ফতুল্লায় ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড সংলগ্ন, নতুন কোর্ট এলাকায় ওই সমাবেশের অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন আহম্মেদ। প্রধান বক্তা হিসেবে ছিলেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুল বারী ভূঁইয়া।

মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার দোষররা পার্শ্ববর্তী দেশে অবস্থান করেছেন। অবৈধভাবে অর্জিত কোটি কোটি টাকা এখন ব্যয় করছে, কিভাবে এই দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যায়। আমাদের এখানে স্বৈরাচারের গডফাদার ছিলো শামীম ওসমান। সে কিভাবে অবৈধ টাকা লুন্ঠন করেছে, কিভাবে চাঁদাবাজি করেছে, কিভাবে বিদেশে টাকা পাচার করেছে আপনারা জানেন। এই গডফাদারের একটি সন্ত্রসী বাহীনি ছিলো আমাদের সিদ্ধিরগঞ্জে, সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন। সে জেলে আছে আর জেলে থেকে টেলিফোনে বিভিন্ন জায়গা যোগাযোগ করছে কিভাবে আবার খুন করাতে পারা যায়। কিভাবে দাঙ্গা হাঙ্গামা করা যায়, সেজন্য সে বিনিয়োগও করেছে। আমাদের জৈনক এক নেতা আছে এই দলে (বিএনপি)। নূর হোসেন যখন বাহিরে ছিলো তখনও সে তার অর্থ দিয়ে রাজনীতি করতো। এখন জেলে আছে এখনো তার অর্থ নিয়ে রাজনীতি করে।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে সেই নেতা নূর হোসেনের সাথে জেল খানায় দেখা করে মিটিং করেছে, আমাদের কাছে তথ্য আছে সেখান থেকে টাকা দিচ্ছে। স্বৈরাচারি শেখ হাসিনার গডফাদার শামীম ওসমানের তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, যখন সে ক্ষমতায় ছিলো। আজকেও তাকে দিয়ে আমাদের মধ্যে আত্মগ্রহ, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য চেষ্টা করছে। খুন খারাপি করানোর জন্য, আমাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। বিএনপি’র গঠনতান্ত্রিক পদ্ধতি অমান্য করে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় মিছিল মিটিং করে। তাদের ইচ্ছা হলো আমরা যাতে তাদের মিটিং মিছিল বন্ধ করে দেই কিনা। এতো বড় স্পর্ধা কার? আমরা যদি চাই তারা মিটিং মিছিল করতে পারবে না। কিন্তু তারা চাচ্ছে আমরা যাতে তাদের উপর কোন আক্রমণ করি, তাদের বাধা দেই। তাহলে তারা সেখানে একটা বিরোধ সৃষ্টি করতে পারবে। আর এর মাধ্যমেই তারা চায় তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে। আমরা ধৈর্যের সাথে সেগুলো দেখছি আমরা এগুলো কখনোই করতে দিবো না। স্বৈরাচারী শাসকদের সাথে মিলে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রামকে নষ্ট করেছো। আমরা আন্দোলন সংগ্রাম করে পরাহিত করেছি স্বৈরাচারকে। আবারো নতুন সংগ্রামে নেমেছো, সাবধান হয়ে যাও। গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ করলে কাউকে রেহাই দেয়া হবে না। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

নারায়ণগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের উদ্দেশ্য গিয়াসউদ্দিন বলেন, নারায়ণগঞ্জে আমরা হিন্দু-মুসলিম একসাথে বসবাস করেছি। এখনো আমরা সম্প্রতি বজায় রাখি। স্বৈরাচারী সরকার ক্ষমতায় আসলে হিন্দু ব্যবসায়ী নেতাদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা নেয়া হয়। কিন্তু বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসে আপনাদের উপর কোন চাপ প্রয়োগ করা হয়না, কোন চাঁদা আদায় করা হয়না, আপনারা সব চাইতে ভালো থাকেন। পার্শ্ববর্তী দেশের ইন্ধনে কিংবা স্বৈরাচারের ইন্ধনে মিথ্যাকে নিয়ে, নারায়ণগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উষ্কানি দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবেন না। সারা দেশবাসী হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করছে। আমরা তো আছি, নারায়ণগঞ্জে একটা হিন্দুর সম্পদ ও জানমালের ক্ষতি কেউ করতে পারবে না। আপনারা কেউ ভুল পথে পা দিয়ে সুখের সাম্রাজ্য অশান্তি আনবেন না।

ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাসান মাহমুদ পলাশ সভাপতির বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর এই ফতুল্লার মানুষ চাঁদাবাজের শিকাল হয়ে নাভিশ্বাসে হয়ে গিয়েছিলো। ৫ তারিখের পরও এর থেকে মুক্তি পায়নি। আপনার (গিয়াসউদ্দিন) হস্তক্ষেপে আমরা এই ফতুল্লার চাঁদাবাজি ও সন্ত্রসী থেকে মুক্তি চাই। ফতুল্লাবাসীর জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির জন্য সর্ব প্রথম গিয়াসউদ্দিন সাহেব এটাকে সিটি কর্পোরেশন করার দাবি তুলেছেন, এবং সেই লক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। সেইসাথে আমরা সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ থেকে মুক্তি চাই।

এ সময় সমাবেশে ফতুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাসান মাহমুদ পলাশের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসকুল ইসলাম রাজিব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন খন্দকার শিপন, কাশিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাইনুল হোসেন রতন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব কায়সার রিফাত, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আলী, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার মনিরুল ইসলাম, জাতীয়দাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিএম সাদরিল, ফতুল্লা থানা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. খন্দকার আকতার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক হাসান আলী, ফতুল্লা থানা কৃষক দলের সভাপতি আমির হোসেন বেপারীসহ নেতৃবৃন্দ।

RSS
Follow by Email