না.গঞ্জে মান্না ‘ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, নয়ত স্বৈরাচারী কাঠামো ভাঙবে না’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান পরবর্তী আজকের বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে নারায়ণগঞ্জ নাগরিক ঐক্য। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বের) নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে ওই সভার আয়োজন করেন। এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্য কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ইকবাল কবিরের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, ঢাকা উত্তরর সভাপতি খসরু, নারায়ণগঞ্জ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহমানসহ জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, নারায়ণগঞ্জ ছিলো স্বৈরাচারের আখড়া। পট পরিবর্তনের পর এটা এখন খুবই স্পষ্ট যে, আমাদের প্রথম পর্যায়ে বিজয় হয়েছে। স্বৈরাচার যেটা চেপে বসেছিলো, সেটা যে যেতে পারে এবং এতো তাড়াতাড়ি সেটা বিশ্বাসও করতে পারি নাই। ৪ তারিখেও আমাকে অনেকে ফোন করে বলেছিলো, ভাই এটা কি পারবেন? এটা কি হবে? আসলে কি পারবেন? আচ্ছা ৫ তারিখেই স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। সব চেয়ে দীর্ঘস্থায়ী রক্তাক্ত, ১৫ বছর যে লড়াইটা করেছে সেটা জিতেছে। সময়ে পরিবর্তনে একটা অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে যে আকাঙ্খা সামনে এসেছে, আমদের ১১দল কেউ সমাজতন্ত্র চায়, কেউ কল্যান রাষ্ট্র চায়, কেউ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চায়। কিন্তু সবাই যখন এক দিকে ফোকাস হয়ে গেলো, তখন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বললো আমরা নতুন একটা বাংলাদেশ চাই। এমন একটা দেশ যেখানে নিজের মনে হবে, সেখানে থাকতে পারবো, বসবাস করতে পারবো, ইনজয় করতে পারবো। সংবিধানের যে ধারা বা অনুচ্ছেদগুলো একটি সরকারকে স্বৈরাচার হওয়ার সুযোগ দেয় তা বাতিল করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে, অর্থনীতিতেও গতি ফিরে আসছে, আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রনে পুলিশ আছে, তবে তারা চুপ। তাদেরকে আরও বেগবান হওয়ার তাগিদ দেন এই নেতা। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। নয়ত এই স্বৈরাচারী কাঠামো ভাঙবে না। নির্বাচনেও সংস্কার করতে হবে৷ মানি হল পাওয়ার। এটাকে কন্ট্রোল করতে হবে। দায়িত্ব অনেক বেশি, তাই চাপাচাপির দরকার নেই। এখন রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করে আর লাভ হবে না। যারা করছে পরবর্তীতে বুঝতে পারবে। কারণ মানুষের মন পরিবর্তন হচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার প্রধান ডক্টর ইউনুস বলেছেন নিজেদের জায়গায় সফল ছিলাম কিন্তু দেশ গড়া রাজনীতিবিদদের ব্যাপার। এখানে আমাদের অভিজ্ঞতা নেই। তাই এখানে তাদের সময় লাগতে পারে। রাজনৈতিক সরকার হলেও তো এখানে সময় লাগবে। চাষাঢ়ায় যেই জ্যাম৷ ট্রাফিক পুলিশ পাশে বসে আছে। তাদের কোন বিকার নেই। তারা ভয় পায়, কিছু বললে জনগণের রোষানলে পড়বে। বিগত সরকার পুলিশ দিয়ে যে অত্যাচার করেছে এটা তারই ফল। যেভাবে ডক্টর ইউনুস বলেছে আমাদের চাপ প্রয়োগ করার কিছু নেই। এটা বাস্তবায়ন করতে আমাদের সময় দিতে হবে। কিছু বিষয় অবশ্য রয়েছে বিক্ষুব্ধ হওয়ার মত। তবে আমরা মনে করি রাজনৈতিক দলের উচিত এখন পরিবর্তনের ধারাটাকে বোঝা এবং নিজে পরিবর্তিত হওয়া।
এত বড় ঘটনা ঘটাল শিক্ষার্থীরা৷ রাজনৈতিক দলগুলো এটা করতে পারেনি। আমরা লক্ষ লোকের সমাগম ঘটিয়েছি। কিন্তু পুলিশের দমনের মুখে তারা চলে গেছে। কিন্তু ছাত্ররা সাহস দেখিয়েছে। এই সাহস দেখিয়েই তারা জিতেছে। এখন আগের কালচার দিয়ে চলবে না। সবাই চাচ্ছে যেভাবে পারি একটা পোস্ট দখল করি। এটা হবে না। এখন দেশে রাজনৈতিক সংস্কৃতি ভাঙাচোরা হবে।
তিনি বলেন, এবারের আন্দোলনের সাথে অতীতের আন্দোলনের মিল নেই। এখানে কোন নেতৃত্ব নেই, কোন স্ট্রাকচারই নেই। এটা কালচারাল ফাইট। এটা না বুঝলে সমস্যা হবে। এই পরিবর্তন আমাদের বুঝতে হবে। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করব। কিন্তু সরকার ভুল করলে আমরা সমালোচনা করবো। যতদূর পারি তাদের এই জায়গায় রাখবো। সরকারের ব্যার্থ হওয়ার সুযোগ কম। আমরা তাদের সঠিক জায়গায় রাখতে চেষ্টা করবো।