না.গঞ্জে মহাসপ্তমীর পুণ্যতিথিতে উৎসবের ঢেউ আরও তীব্র
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ‘দেখতে দেখতে এসে গেল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ—বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব, শারদীয় দুর্গাপূজা!’—ঠিক এভাবেই গত সন্ধ্যায় শুরু হয়েছিল উৎসবের সূচনা। আজ, সোমবার, সেই আনন্দের ঢেউ আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে এসেছে মহাসপ্তমীর পুণ্য তিথি।
গতকাল, রবিবার, মহাপঞ্চমীর সন্ধ্যা শেষে ঢাকের বাদ্যি আর উলুধ্বনির মধ্যে দিয়ে মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল মূল উৎসব। আজ তার দ্বিতীয় দিন। নারায়ণগঞ্জের প্রতিটি মণ্ডপে এখন দেবী আবাহনের সেই পবিত্রতা ও উৎসবের প্রাণবন্ততা চোখে পড়ার মতো।
সনাতনী পঞ্জিকা অনুযায়ী, আজ ভোরে দেবীর নবপত্রিকা স্থাপন করা হয়েছে। এই নবপত্রিকা, যা ‘কলাবউ’ নামেও পরিচিত, মূলত প্রকৃতির নয়টি ভিন্ন রূপের প্রতীক। মহাসপ্তমীর প্রধান আচার হলো এই নবপত্রিকা স্থাপনের মাধ্যমে দেবীর মঙ্গে এর প্রতিষ্ঠা এবং এরপর দেবীর বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই পূজার মধ্য দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে মর্ত্যলোকে দেবী দুর্গার অবস্থানের দ্বিতীয় দিন পালিত হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলাজুড়ে মোট ২২৩টি মণ্ডপে চলছে এই উৎসব। সদর, বন্দর, সোনারগাঁ, আড়াইহাজার ও রূপগঞ্জের সকল মণ্ডপে সকাল থেকেই ভক্তদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে নতুন পোশাকে সেজে ওঠা দর্শনার্থী ও ভক্তরা দেবী দর্শন, অঞ্জলি প্রদান এবং আরতিতে অংশ নিচ্ছেন।
গতকালের ষষ্ঠীপূজার পর, আজ মহাসপ্তমীতে উৎসবের আমেজ যেন আরও গাঢ় হয়েছে। মণ্ডপগুলোতে চলছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যা স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে মুখরিত। প্রশাসন এবং পূজা কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সার্বক্ষণিক নজরদারি বজায় রেখেছেন।
এ বছর দেবী দুর্গা গজে (হাতি) আগমন করায় মর্ত্যলোকে সুখ, সমৃদ্ধি ও শান্তির বার্তা রয়েছে। কিন্তু আজকের আনন্দমুখর দিনেও ভক্তদের মনে বিজয়া দশমীর দিনটির কথা উঁকি দিচ্ছে। কারণ শাস্ত্রমতে, দেবী বিদায় নেবেন দোলায় (পালকি) চড়ে, যা মহামারী এবং অতিমৃত্যুর ইঙ্গিত দেয়। তবে, এই মূহুর্তে সকল চিন্তা ছাপিয়ে সবাই উৎসবের পবিত্র আনন্দে মেতে উঠেছেন।
পূজা কমিটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজকের মহাসপ্তমীর পর আগামীকাল মঙ্গলবার উদযাপিত হবে মহাষ্টমীর বিশেষ তিথি। এই দিনটি কুমারী পূজার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত এবং এটিই দুর্গাপূজার সবচেয়ে জমজমাট দিনগুলোর মধ্যে অন্যতম।
সংক্ষেপে: আজ, সোমবার, নারায়ণগঞ্জে দুর্গাপূজার মহাসপ্তমী পালিত হচ্ছে। নবপত্রিকা স্থাপন ও বিশেষ পূজার মধ্য দিয়ে উৎসবের দ্বিতীয় দিনটি এখন পূর্ণাঙ্গ রূপ নিয়েছে। আগামীকাল মহাষ্টমীর জন্য প্রস্তুতি চলছে।