না.গঞ্জে বৈরী আবহাওয়ায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ এখন সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হওয়ায় এর প্রভাবে নারায়ণগঞ্জে বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিপাত বৃহস্পতিবার দিনভর অব্যাহত রয়েছে। কখনও মুষলধারে, কখনও হালকা বৃষ্টি আর সাথে ঝড়ো হাওয়ায় জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর থেকে অভ্যন্তরীণ নৌপথে সকল ধরনের ছোট লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ, এতে করে হাজার হাজার যাত্রী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় নারায়ণগঞ্জে প্রায় ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কখনও ভারী, কখনও হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সেই সাথে বইছে ঝড়ো হাওয়া, যার গতি প্রতি ঘণ্টায় সর্বনিম্ন ১০ কিলোমিটার থেকে সর্বোচ্চ ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অফিস পূর্বাভাস দিয়েছে, এই বৃষ্টিপাত আগামী ২৪ ঘণ্টাও অব্যাহত থাকতে পারে।
টানা বৃষ্টির কারণে স্কুল ও অফিসগামী মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শহরের প্রধান সড়কগুলো ও নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, যা যান চলাচলকে ধীরগতি করে তুলেছে। ছাতা নিয়ে বের হয়েও অনেকে বৃষ্টির ছাঁট থেকে বাঁচতে পারছেন না। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন অভ্যন্তরীণ রুটের নৌযাত্রীরা। নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সকল ছোট আকারের যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ-চাঁদপুর রুটের হাজার হাজার যাত্রী আটকা পড়েছেন। মতলব, শরীয়তপুরগামী যাত্রীরাও চরম দুর্ভোগে পড়েছেন, কারণ তাদের গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য নৌপথই অন্যতম মাধ্যম।
বন্দরে অপেক্ষারত অনেক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, তারা কাজের সূত্রে নারায়ণগঞ্জে এসেছিলেন এবং এখন বাড়ি ফিরতে পারছেন না। অনেক যাত্রী জানান, “আমাদের জরুরি কাজ ছিল, কিন্তু এখন সব বন্ধ। বাস বা অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেই, যা আমাদের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ।” বিশেষ করে নারী ও শিশুরা চরম বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। অনেকে দূর-দূরান্ত থেকে এসে টার্মিনালে আটকা পড়েছেন, তাদের রাত কাটানোরও কোনো নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেই।
নারায়ণগঞ্জ লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, “সকাল থেকে বৃষ্টির কারণে দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে, নারায়ণগঞ্জ-মুন্সিগঞ্জ রুটের কিছু কিছু লঞ্চ সীমিত আকারে চলাচল করছে। মুন্সিগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য তারা এক ধরনের জিম্মি করে এই লঞ্চগুলো চালু রেখেছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা ইতোমধ্যে টার্মিনালে সকল চালককে সতর্ক করেছি। এছাড়া বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তাদের লঞ্চ চলাচলে সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনে বন্ধ রাখার আহ্বান জানিয়েছি।”