বুধবার, নভেম্বর ২০, ২০২৪
Led05জেলাজুড়েফতুল্লাশিক্ষা

না.গঞ্জে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন নারায়ণগঞ্জের স্কুল-মাদরাসার শিক্ষকরা। মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে সদর উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে নারায়ণগঞ্জ জেলা বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট ও বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে শিক্ষকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের পদায়ন বন্ধ রাখা ও শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি জানান। পরবর্তীতে তারা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা ও শিক্ষক কর্মচারী উন্নয়ন পরিষদ সদর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সোবহান, গণবিদ্যা নিকেতনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল জব্বার, রওজাতুল সালিহীন ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আব্দুল শুকুর আলী ও নারায়ণগঞ্জ ইসলামিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. শাহজাহান মিয়াসহ বিভিন্ন স্কুল-মাদরাসার শিক্ষক।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, একটি উন্নত আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে সুষম সুস্থ-পরিচ্ছন্ন মানবিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য চাই সার্বজনীন শিক্ষার গভীর ও ব্যাপক আয়োজন। প্রাথমিক শিক্ষা হলো মৌলিক শিক্ষা। এই শিক্ষা সবাইকে গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু প্রাথমিক শিক্ষা মানব সম্পদ সৃষ্টি করে না। অন্যদিকে উচ্চ শিক্ষা পেশাদারী শিক্ষা প্রদান করে এবং উচ্চতর জীবিকার সম্ভাবনাময় পেশাদাররা দেশের বাইরে চলে যায়। শুধুমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে যথার্থ জনসম্পদ সৃষ্টি হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় পতিত ফ্যাসিষ্ট সরকার পরিকল্পিতভাবে মাধ্যমিক শিক্ষাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছে। জুলাই-আগস্ট ২০২৪ এর বিপ্লবের মধ্যদিয়ে ছাত্র-জনতার বৈষম্য বিরোধী দেশ গড়ার যে স্বপ্ন আমাদের দেখিয়েছে তাতে আমরাও নতুন করে স্বপ্ন দেখছি আপনার গতিশীল নেতৃত্বে মাধ্যমিক শিক্ষা আবার জেগে উঠবে। এ স্বপ্নযাত্রায় আমরাও আপনার সহযাত্রী হতে প্রস্তুত।

এ বিষয়ে কিছু প্রস্তাবনা হলো, মাধ্যমিক স্তরের প্রতিষ্ঠানের ৯৭% বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয়করণ করা অত্যন্ত জরুরি। একই শিক্ষাগত যোগ্যতা, একই বই পড়ানো, একই বোর্ডের আওতায় পরীক্ষা অথচ সরকারি ও বেসরকারি নাম দিয়ে আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদার মধ্যে বিরাট বৈষম্য তৈরি করে রাখা হয়েছে যা শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে প্রধান অন্তরায়। শিক্ষার সকল অংশীজনের প্রাণের দাবি মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণ।

শিক্ষা বিভাগের দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো একাডেমিক ও প্রশাসনিক। শিক্ষকেরা একাডেমিক কাজে দক্ষ। তাদের সকল প্রশিক্ষণ পেড্যাগোজি কেন্দ্রিক। ক্লাস রুমের শিক্ষণ-শিখনে তারা দক্ষ। অন্যদিকে শিক্ষা প্রশাসনে দীর্ঘ ৩১ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের সকল প্রশিক্ষণ প্রশাসনিক। শিক্ষকতা ও প্রশাসন ভিন্ন চরিত্রের, ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের, কাজের ধরণ ভিন্ন, চর্চা বা অনুশীলন ভিন্ন। শিক্ষকরা প্রশাসনে অনভিজ্ঞ, জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপপরিচালক পদে তাঁদের পদায়ন করা হলে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক শূণ্যতা যেমন সৃষ্টি হয় তেমনি ক্লাস রুম শিক্ষকতায় অভিজ্ঞ একজন শিক্ষককে উল্লেখিত পদ সমূহে পদায়ন করা হলে বিভিন্ন বিধি বিধান সম্পর্কে পূর্ব জ্ঞান না থাকার কারণে অফিসের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন অধস্তন পদের লোকজনের পরামর্শ দ্বারাই পরিচালিত হতে হয়। প্রশাসনিক দৃঢ় সিদ্ধান্ত তাঁদের গ্রহণ করতে সমস্যা হয়। এ ছাড়াও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকগণকে পদায়ন করা হলে প্রশাসনিক অনভিজ্ঞ সিনিয়র শিক্ষকের অধীনে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার প্রধানগণকে কাজ করতে হবে, এতে শিক্ষাঙ্গনে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে। সে কারণে উপজেলা, জেলা, অঞ্চল ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখায় ৩১ বছর শিক্ষা প্রশাসনে কাজের দক্ষতা সম্পন্ন ৬ষ্ঠ গ্রেড অফিসার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের পদোন্নতি ও পদায়নের জোর দাবি করছি।

বহু মাত্রিক সমস্যায় মাধ্যমিক শিক্ষা জর্জরিত। স্কুল, মাদরাসা, সরকারি, বেসরকারি, ইংরেজি ভার্সন এ রকম নানা রকম প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এদের মধ্যে বৈষম্য প্রকট। দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করতে একটি শিক্ষা সংস্কার কমিশন করার জোর দাবি জানানো হয়।

RSS
Follow by Email