না.গঞ্জে নাহিদ ইসলাম ‘দেখেছি বিগত নির্বাচনে যারা গডফাদারগিরি করে, তারাই প্রার্থী হয়’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত কোনো জোটে না গিয়ে এককভাবে সর্বাধিক আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে গণঅভ্যুত্থানের তরুণদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির আহ্বায়ক ও অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, নভেম্বর মাসের ১৫ তারিখের মধ্যেই প্রাথমিকভাবে একটি প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করা হবে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ গোদনাইলের প্রয়াত জুলাই যোদ্ধা শহীদ গাজী সালাউদ্দিনের বাড়িতে তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম এসব তথ্য জানান।
নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তার দল বাংলাদেশের নির্বাচনী এলাকার ৩০০ টি আসনেই প্রার্থী দেওয়ার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে, ফ্যাসিবাদবিরোধী এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ‘অগ্রণী’ ভূমিকা রাখা ব্যক্তিদের সম্মানে কয়েকটি আসনে প্রার্থী দেবে না এনসিপি।
তিনি বলেন, “আমরা খালেদা জিয়া ও নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী যারা ফ্যাসিবাদ বিরোধী ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কথা বলেছেন তাদের সম্মানে হয়তো সেই আসনগুলো ছেড়ে দেব।”
এনসিপি নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বিদ্যমান সংস্কৃতিকে চ্যালেঞ্জ করতে চায়। নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা দেখেছি বিগত নির্বাচনে যাদের টাকা আছে, যারা গডফাদারগিরি করে, তারাই প্রার্থী হয়। আমরা সেই সংস্কৃতিকে চ্যালেঞ্জ করতে চাই। আমরা মূলত চাই যারা এলাকার সাধারণ মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে— যেমন ইমাম, শিক্ষক— তাদেরকে সংসদে এমপি হিসেবে দেখতে চাই। এছাড়া সর্বাধিক আসনে আমরা শাপলা কলির জন্য প্রার্থী দিব।”
নির্বাচনী জোট প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম স্পষ্ট করে বলেন, “এটি একটি সংস্কৃতি। আমরা এখন পর্যন্ত এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছি।”
তবে ভবিষ্যতের জোট নিয়ে তিনি বলেন, “সমঝোতা বা জোট রাজনৈতিক বা আদর্শিক জায়গা থেকে হতে পারে। জুলাই সনদের বিষয়ে যেসব দলের সংহতি রয়েছে, তাদের সাথে ভবিষ্যতে আমরা জোটের বিষয়ে বিবেচনা করব। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত এককভাবেই নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি জানান, আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এনসিপি তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করবে।
গোদনাইলের প্রয়াত জুলাই যোদ্ধা গাজী সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর নাহিদ ইসলাম জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ২০২৪ সালের আন্দোলনের সময় একাধিক স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত গাজী সালাউদ্দিন (৪৫) ১৫ মাস পর গত ১৬ অক্টোবর রাতে মারা যান।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “নির্বাচনের ডামাডোলে আহত জুলাই যোদ্ধাদের কোনোভাবে ভুলে যাওয়া যাবে না। তাদেরকে পরিপূর্ণ চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “হয়তো সাময়িক একটা চিকিৎসা অনেকেই পেয়েছে। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসাগুলো যদি অব্যাহত না থাকে, তাহলে এরকম ঘটনা কিন্তু ঘটতে থাকবে। না হলে আমাদের এই গাজী সালাউদ্দিন ভাইয়ের মতো এরকম অনেকেই কিন্তু মৃত্যুবরণ করতে থাকবে।”
এসময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির নারায়ণগঞ্জ জেলা সদস্য সচিব এড. আব্দুল্লাহ আল আমিন, আহমেদ তনু, সালেহ আহমেদ, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীরা।
