না.গঞ্জে ধর্ম উপদেষ্টা, ‘১৬ বছরের জঞ্জাল দেড় বছরে ঠিক করার চেষ্টা করছি’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আমরা একটু সুস্থ নির্বাচন দিয়ে আমাদের দায়িত্ব থেকে বিদায় নেব। যারা নির্বাচনে জয়ী হবে তাদের হাতে ক্ষমতা যাবে। আমাদের সময় কম তবে যদি বেশি সময় পেতাম তাহলে অনেক কাজ করতে পারতাম। ১৬ বছরের জঞ্জাল দেড় বছরের মধ্যে ঠিক করার চেষ্টা করছি। আমাদের সরকার যদি ব্যর্থ হই তাহলে আপনাদের উপর বিপদ চলে আসবে। রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারবেন না। সারাদেশে একটি পূজার উৎসব চলছে। কিছুক্ষণ পর পর আমাদের কাছে ফোন আসছে। আমাদের নাক কান চোখ খোলা রেখে কাজ করতে হচ্ছে। আমি শুধু মুসলিমদের মন্ত্রী নই আমি হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানদের ও পাহারীদেরও মন্ত্রী।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সন্ধায় দেওভোগ জামিআ আরাবিয়া দারুল উলূম মাদ্রাসায় এক মাহফিল ও সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিকেএমইএ‘র সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, মহানগর ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহসহ আরও অনেকে।
মাহফিলে ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছি আমি। কিন্তু মাওলানা মান্নান সাহেব ছিলেন প্রতিমন্ত্রী। এগুলো আমার নয় আপনাদের গৌরব। ভোটারদের হালনাগাদ করে আমরা নির্বাচন দেবো। ১৬ বছর পর প্রথম এই দেশের মানুষ নিজের ইচ্ছায় ভোট দিতে পারবে। আপনি যাকে চান তাকেই ভোট দিতে পারবেন। আমরা বঙ্গভবনের পতাকা নিয়ে ঢুকবো আপনাদের কাছে ক্ষমতা দিয়ে চলে আসবো। আমাদের চেয়ে চিফ অ্যাডভাইজার, আলহামদুলিল্লাহ আমাদের রিজার্ভ ২.২ এর জায়গায় ২.৭ বিলিয়ন ডলার প্রতি মাসে রিজার্ভে আসছে। বেশিদিন লাগবে না আমরা অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হয়ে যাব। আমরা শাসন করতে আসেনি যারা শাসন করবে তাদের পথ খুলে দেওয়ার জন্য এসেছি।
তিনি বলেন, সরকারের দায়িত্বশীল হওয়ার আগ পর্যন্ত আমি নিজেও একটি মসজিদে খুৎবা দিয়েছি, শিক্ষকতা করেছি। এরপর এসে রাস্তার দায়িত্ব নিয়েছি। আমরা রাষ্ট্র চালাই, রাষ্ট্রের শক্তির মধ্যে পুলিশ আনসার বিডিআর সেনার মত শক্তি আছে, কিন্তু আলেমদের আছে সামাজিক শক্তি। তবে আলেমদের ত্যাগী হতে হবে। মানুষের শরীরে যেমন হাত-পা ব্যথা হয়, ঠিক তেমনি কলিজার ভেতরে এক ধরনের রোগ হয়। আচারের পরিচয়, তোকে চিকিৎসা করে তারাই হচ্ছে ওলামা। তিনটি জিনিসের কারণে মানুষ পাগল হয়ে যায়। এগুলো হচ্ছে ক্ষমতা, টাকা-পয়সা এবং যৌন আকাঙ্ক্ষা। সুন্দর ছেলে- মেয়ে দেখলেই আমরা অবাক হয়ে যাই। কিন্তু সেটা আলেমদের হাত ধরে একবার তওবা করতে পারি এবং এই কলিজার রোগ থেকে আমরা মুক্তি পাবো। আলেম-ওলামারা এই ধরনের কলিজার রোগ থেকে মুক্ত। চরিত্রহীনদের দ্বারা কখনো জাতির খেদমত হয় না। আমার দীর্ঘ অনেক সময় শিক্ষকতা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ছাত্রের কারণে যদি শিক্ষকের অপমান হয় তাহলে সে ছাত্র পাগল হয়ে যায়। আল্লাহর রহমত থেকে বেয়াদবরা মাহরুম হয়ে যায়। যেহানতের সাথে যদি আদবের যোগ না হয়, তাহলে সে ছাত্রের এলেম তাকে কোন ফায়দা দেবে না। পৃথিবীতে যত ফেতনা এসেছে সবগুলোর পেছনে জহিন মানুষেরা ছিল। নিজের শিক্ষক বাবু বাচ্চাদের এমনভাবে খেদমত করতে হবে যেন আল্লাহ নারাজ। না হয়। আসুন আমরা আল্লাহর গজব ও আজাদ থেকে মুক্তি চাই।
উপদেষ্টা বলেন, আল্লাহ যাকে চান তাকে সম্মান এবং ইজ্জত দেন। আমি তো বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টা এটাও আল্লাহর দান। আমি কোনো তদবির করি নাই, সকালবেলা উঠেই আমাকে বলা হলো আপনি উপদেষ্টা। সেই থেকে মন্ত্রণালয়ের কাজগুলো অতি নিষ্ঠার ও পরিশ্রমের সাথে করে যাচ্ছি। সে সাথে শুধু অন্য কোন মন্ত্রণালয়ের দরকার পড়ে সেখানেও সুপারিশ করে যাচ্ছি। আমি হাজীদের দেখভাল করার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন গুলো, মডেল মসজিদগুলো দেখভাল করার জন্য আমি সর্বদা নিয়োজিত আছি। আমি মানুষ আমায় ভুল পথে হতে পারে, যদি ভুল হয় তাহলে আমাকে পরামর্শ দেবেন। আমি আপনাদের ভাই আমরা সকলেই এক খানদানের মানুষ। আমার ভুল পথে হলে আমাকে ধরিয়ে দিবেন, ফেসবুকে লেখেন কেন? ফেসবুকে কোন সমাধান করে না। আপনাদের এই ফেসবুকে কিছু লেখা আমাকে অপমান করতে চান তাহলে আমার বিশাল সাইবার টিম আছে, আপনাকে অপমান করার জন্য তারা দাঁড়িয়ে যাবে। কোন বেয়াদবকে এক সেকেন্ডের জন্য ছাড় দেবো না। রাষ্ট্র পরিচালনার যে শপথ নিয়েছি, শেষ দিন পর্যন্ত সেই দায়িত্ব পালন করে যাব। ফেসবুকের কথা আমি রাষ্ট্র পরিচালনা করব না। তোমরা যে ফেসবুকে ট্রল বাজি কর এগুলো শয়তানি। রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য আমরা ফেসবুকের মুখাপেক্ষী নই। যাদের সৎ সাহস নাই, যারা কূপের ব্যাংক তারাই ফেসবুকে উল্টাপাল্টা লেখালেখি করে। তোমার ভাষায় তোমার কাছে জবাব যাবে। যারা আমার সমালোচনা করছে তারা আমাকে আরো উপরে নিয়ে যাচ্ছে। আলেম-ওলামাদের বলবো আপনাদের অন্তর বড় করুন। একটা মাদ্রাসা চালানো সহজ। এটা মাদ্রাসা বাহ গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি চালানোর থেকে একটি রাষ্ট্র পরিচালনা কঠিন। আমি কিছু দিলে ই সেটা হয়ে যায় না। দশটি স্তর পার করে তারপর কার্যকর হয়। বাংলাদেশ বিমানের রেট কমাতে চাচ্ছি, সেটার জন্য অনেক জায়গায় ঘোরাঘুরি করছি। ১৮৫৮ টাকা কমানোর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমার সকল কাজ আপনাদের সহযোগিতা চাই। যাতা আমি আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি।