সোমবার, নভেম্বর ১৮, ২০২৪
Led02সদর

না.গঞ্জে দুদকের গণশুনানিতে ৫৫ অভিযোগ, তদন্তে ৫টি

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে দুর্নীতি দমন কমিশনের গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকাল ১০টা থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। যা চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত।

এসময় জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক।

আরও উপস্থিত ছিলেন- দুর্নীতি দমন কমিশনের ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাজহার হোসেন মাজুম।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা মুলক বক্তব্য প্রদান করেন অতিথিরা।

এসময় দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার মো. জহুরুল হক বলেন, দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের আমরা একটু বেশি সম্মান করি। যাতে সে দুর্নীতি করতে আরও উৎসাহিত হয়। বিশ্বের কোন দেশ দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের সম্মান করে না। একজন ঋণ খেলাপি, দুর্নীতিগ্রস্থ সে যদি পাশের রাস্তা দিয়ে আসে, আমরা এগিয়ে যাই তাকে আনতে। কখনো বলি না, তুমি দুর্নীতিগ্রস্থ তোমাকে আমি এগোতে যাবো না; এমনটা করলে দুর্নীতি কমে আসবে। দুর্নীতির ব্যপারে বিশ্বের বহু দেশ অনেক আইন করেছে। আর আমাদের দেশে যে যত বড় দুর্নীতিগ্রস্থ তাকে তত বেশি সম্মান করি। আপনারা এদের ঘৃণা করুন। শুধু তাদের বলবেন, আপনি দুর্নীতিগ্রস্থ ব্যক্তি আমি আপনাকে পছন্দ করি না। এটা বলতে পারলে দেশের ৮০ভাগ দুর্নীতি কমে যাবে।

তিনি বলেন, এমনিতেই নারায়ণগঞ্জ ধনী এলাকা, প্রভাবশালী এলাকা। যার প্রভাব বেশি, তার দুর্নীতিও বেশি। বিনা দুর্নীতিতে প্রভাবশালী হওয়া যায় না।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, আজকে দুর্নীতি দমন কমিশনের যে গণশুনানি হলো, এখানে বিভিন্ন মানুষি তাদের অভিযোগ জানালেন। আয় বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগও আমরা পেয়েছি। মোট ৫৫টি অভিযোগ এখানে পেয়েছি। তার মধ্যে ৫টি অভিযোগ তন্দন্তের জন্য নেওয়া হয়েছে, এটি প্রমানিত হলে পরে এটি মামলার দিকে যাবে। এছাড়া ৫০টি অভিযোগের এখানে তাৎক্ষনিক প্রতিকার দেওয়া হয়েছে। আপনারা দেখেছেন বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ এখানে রয়েছেন, এমনকি আমার দপ্তরেরও কয়েকটি অভিযোগ এখানে রয়েছে। সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন দপ্তরের কাউকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে, আবার কাউকে পাঁচ দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। অনেককে আবার আজকের কথাও বলা হয়েছে। সুতরাং এই গণশুনানি অত্যন্ত সার্থক এবং সফল হয়েছে।

জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, এটা দুদকের খুব ভালো একটি উদ্যোগ। এর মধ্য দিয়ে সেবা দাতা ও সেবা গ্রহিতার মধ্যে একটি বন্ধন তৈরি হবে। আমাদের মুল উদ্দেশ্য হচ্ছে, সমাজের মধ্য থেকে দুর্নীতি নামক ব্যাধিটাকে উচ্ছেদ করা। আমি মনে করি, এটা ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করতে হবে। যদি আমি নিজে মনে করি যে, আমি দুর্নীতি করবো না; তাহলে এটা দুর করা সম্ভব হবে। আমি সব সময় বলে থাকি, একজন ব্যাক্তির দায় একটি প্রতিষ্ঠান নিতে পারে না। একটি প্রতিষ্ঠানে যদি এক’শ জন লোক থেকে থাকে তাহলে, তার মধ্যে ৯৫ভাগের বেশি মানুষ ভালো। দুই-একজন কর্মকর্তার জন্য প্রতিষ্ঠানের দায়ভার নেওয়া ঠিক হবে না।

বক্তব্য পর্ব শেষ শুরু হয় গণশুনানি। এসময় ৫৫জনের বিভিন্ন দপ্তরের বিরুদ্ধে করা বিভিন্ন অনিয়ম শোনেন দুদক কমিশনার ও অন্যানরা।

জানা গেছে, গণশুনানিতে ডিপিডিসি, তিতাস, নির্বাচন কমিশন, টিটিআই, পানি উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, রাজউক, পাসপোর্ট অফিস, আনসার, বিমা ও অর্থিক অফিসার, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, জেলা কারাগাড়, খানপুর ও ভিক্টোরিয়া হাসপাতালসহ সিআইডি ও এসিল্যান্ডদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেন ভুক্তভুগিরা। ৫৫টির মধ্যে ৫টি অভিযোগ তদন্তের জন্য আমলে নেয় দুদক, যার সত্যতা প্রমানিত হলে মামলা করা হবে। এছাড়া কিছু সমস্যার তাৎক্ষনিক সমাধান করা হয় এবং বেশি কিছু সমস্যার সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ঠ দপ্তর প্রধানদের সময় বেধে দেয় দুদক।

RSS
Follow by Email