সোমবার, ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪
Led01জেলাজুড়ে

না.গঞ্জে ক্রমাগত ‍বাড়ছে ডাকাতির ঘটনা, অধিকাংশ ফতুল্লায়

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জে নতুন করে ডাকাতে আতঙ্ক বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। যানবাহন, পার্ক, বিনোদন কেন্দ্র থেকে শুরু করে বাড়ি পর্যন্ত পৌছে গেছে এই আতঙ্ক। কখনো প্রকাশ্যে কখনো ছদ্মবেশে ছড়িয়ে পরছে এমন আতঙ্ক। পুলিশের চেষ্টা থাকলেও ক্রমাগত বেড়েই চলেছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ি জেলা জুড়ে বিভিন্ন স্থানে পুলিশের পোশাক পড়ে, অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ও নৈশ প্রহরীদের বেঁধে ডাকাতির ঘটনা বর্তমানে ব্যাপক আলোচিত। এদিকে, বিগত ২ মাসে নারায়ণগঞ্জে ডাকাতি এবং ডাকাতির প্রস্তুতির ঘটনা ঘটেছে ৭ টি। এর মধ্যে ফতুল্লায় ৫ টি, আড়াইহাজারে ১টি ও রূপগঞ্জ উপজেলায় ১টি ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

পাঠকের সুবিধার জন্য প্রকাশিত সংবাদের তথ্য উল্লেখ করা হলো-
৩০ জানুয়ারি ফতুল্লার পাগলায় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতির অভিযোগে রফিক খান (৫২) নামের ১ জনকে আটক করেছ পুলিশ। পুলিশ জানায়, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর অজ্ঞাত একদল ডাকাত ফতুল্লার ভূইগড় রাইস মিল এলাকায় একটি অটোরিকশার পার্টসের দোকানে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে প্রায় ১২ লাখ টাকার মালামাল ডাকাতি করে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আগে একজনসহ মোট ২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

২৯ জানুয়ারি ফতুল্লা রেল স্টেশন প্লাট ফ্রম সংলগ্ন মোল্লা মার্কেটের পেছনের বালুর মাঠ থেকে ডাকাতি প্রস্ততির অভিযোগে ৫ যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, ফতুল্লার দাপা পাইলট স্কুল সংলগ্ন মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে জয়(২১), একই থানার দাপা ইদ্রাকপুরস্থ পুরাতন ক্যালিক্স গলির আব্দুল হাইয়ের বাড়ীর ভাড়াটিয়া মো. আল আমিন (২২), একই এলাকার মৃত রুহুল আমিনের ছেলে সাব্বির (২৩),উকিল বাড়ী মোড়ের মৃত মাসুম আলীর ছেলে আল আমিন(২৪) ও মৃত ছামছুল হকের সুমন (২৫)। এ সময় আটককৃতদের নিকট থেকে দেশীয় তৈরি তিনটি রামদা, একটি চাপাতি,একটি ছুরি, একটি চাকু ও একটি তালা কাটার প্লাস উদ্ধার করে বলে জানানো হয়। পুলিশ জানায়, ডাকাতির প্রস্ততিকালে দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্রসহ ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে।

২১ ডিসেম্বর ফতুল্লার ভুইগড়ে এক অটো রিক্সা পার্টস্ ও ব্যাটারী দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় স্থানীয়রা এগিয়ে এসে কামাল (৪৫) নামের এক ডাকাত কে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এ বিষয়ে পুলিশ জানায়, ডাকাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে। আটককৃত ডাকাত প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার সহোযোগি নাম বলেছে। ডাকাত দলের পলাতক অপর সদস্য সহ লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা করছে পুলিশ।

২১ ডিসেম্বর একই দিন ফতুল্লা উত্তর নরসিংপুরের প্রমি ফ্যাশন নামের গার্মেন্টস সংলগ্ন আলমের নির্মানাধীন ভবনের তৃতীয় তলা থেকে ডাকতির প্রস্ততির অভিযোগে ৪ যুবককে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলো, ফতুল্লা উত্তর নরসিংপুর সামছুল আলম মোড়ের রিনার বাড়ীর ভাড়াটিয়া লাল মিয়ার ছেলে মো. রনি(২৪),মুসলিম নগর আমেনা মার্কেট সংলগ্ন মৃত জিলানীর ছেলে বাবু মিয়া (২২), পূর্ব গোপালনগরের মনির হোসেনের ছেলে নাজমুল হাসান (২২) ও উত্তর নরসিংপুরের মাদবরের বাড়ীর ভাড়াটিয়া জামাল মিয়ার ছেলে খোকন মিয়া (২৫)। এছাড়া পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়, মুসলিমনগর এতিমখানার মোক্তার হোসেনের ছেলে সানি(৩৩) সহ অজ্ঞাত আরও ১০-১৫ জন। পুলিশ জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযানে তাদের আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে দেশীয় তৈরি একটি রামদা,একটি চাইনিজ কূড়াল,একটি সুইচ গিয়ার ও একটি ধারালো ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।

১৮ নভেম্বর ফতুল্লার দাপা পিলকুনি পাঁচতলা এলাকায় নৈশপ্রহরীদের বেঁধে নিউ আলিফ জুয়েলার্স নামে একটি দশ-বারো জনের একটি ডাকাত দল দুর্ধষ ডাকাতি সংঘটন করে। দোকান কর্মচারীদের ভাষ্যমতে, ডাকাতরা দোকানটি থেকে চার ভরি স্বর্ণের অলংকার, ক্যাশ থেকে নগদ ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন লোকজনের বন্ধক রাখা বিপুল পরিমাণ স্বর্ণের অলংকার নিয়ে যায়। এঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ঘটনার আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকি ডাকাতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

এছাড়া বিগত ২ মাসের অন্যান ডাকাতির ঘটনাগুলো হলো:

২৩ জানুয়ারি রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভার ডেমরা ব্রিজ এলাকায় পুলিশের পোশাক পরে প্রাইভেট কার থামিয়ে ডাকাতির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা জানান, সৌদি থেকে আজ বাংলাদেশে এসেছি। এয়ারপোর্ট থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে আসার সময় তারাবো বিশ্বরোড গোলচত্বরের কাছাকাছি আসলে তখন পুলিশের পোশাক পরিহিত ৭-৮ জন লোক আমাদের গতিরোধ করে। তারা পাসপোর্ট চেক করার কথা বলে আমার টলিব্যাগ, লাগেজ, ভ্যানিটিব্যাগ ও হাতব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। ভয় দেখিয়ে আমার থেকে ৮ ভরি সমপরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও বিভিন্ন মূল্যবান মালামাল ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

১২ ডিসেম্বর আড়াইহাজারের মাহমুদপুর ইউপির সালমদী গ্রামে বাড়ীর ঘরের দরজা ভেঙে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানায়, ঘরের ভিতরে অবস্থানরত পরিবারের লোকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। এসময় পরিবারের সদস্যদের ডাক-চিৎকারে আশপাশের বাড়ির লোকজন এগিয়ে আসলে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। ডাকাদের পালাতে বাধা দিরে ইদ্রিস আলী (৩৫) নামের এক জনকে আহত করে তারা। পুলিশ জানায়, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।

হটাৎ ডাকাতি বাড়ার কারণ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ফতুল্লা থানার ইন্সপেক্টর (অফিসার ইনচার্জ) নুরে আজম মিয়া লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, এই প্রশ্নের উত্তরতো আমি দিতে পারবো না। আর প্রয়োজনে আমাকে থানায় এসে প্রশ্ন করেন এগুলো ফোনে বলা যায় না।

RSS
Follow by Email