না.গঞ্জে কমিউনিস্ট পার্টির ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে পালন
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র ৭৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে আলোচনা সভারে আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৬মার্চ) বিকেল ৪ টায় শহরের মিশণ পাড়া এলাকায় জেলা সিপিবি’র সভাপতির ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ওই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিউনিস্ট পার্টির জেলা কমিটির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বক্তব্য রাখেন জেলা সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, সাবেক সভাপতি রথিন চক্রবর্তী, সম্পাদক মন্ডলির সদস্য আ. হাই শরীফ, বিমল কান্তি দাস, শাহানারা বেগম, ইকবাল হোসেন, আব্দুস সালাম বাবুল, জেলা কমিটির সদস্য দুলাল সাহা, জাকির হোসেন, মনিরুজ্জামান চন্দন, প্রমূখ।
আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, কমিউনিস্ট পার্টি ঐতিহাসিক লড়াই সংগ্রামের পার্টি। বিগত শতাব্দির বিশের দশকে ভারতবর্ষের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআই) প্রতিষ্ঠিত হয়। তাঁরপর ১৯৪৮ সালের ৬ মার্চ সিপিআই-এর দ্বিতীয় কংগ্রেসে পৃথকভাবে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা ভিন্ন একটি অধিবেশনে মিলিত হয়ে স্বতন্ত্রভাবে পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি এবং একই সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৬৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক কমিটির ৪র্থ সম্মেলনে পৃথক কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করে স্বতন্ত্র ও স্বাধীন পার্টি হিসেবে পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি কার্যক্রম শুরু করে এবং ওই সম্মেলনকে প্রথম পার্টি কংগ্রেস হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তবে আমাদের নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় ১৯ সালের ৩০ দশকের দিকেই কমিইউনিস্ট পার্টি গড়ে উঠে ছিলো। সেই থেকে শ্রমিক শ্রেণী ও গণমানুষের পক্ষে লড়াই সংগ্রাম করে চলেছে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পরই পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী কমিউনিস্ট কর্মীদের ওপর হত্যা, নির্যাতন, জেল-জুলুম-হুলিয়া চালানোর মাধ্যমে হাজার হাজার কমিউনিস্টকে দেশত্যাগে বাধ্য করে ছিলো। ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহীর খাপড়া ওয়ার্ড কমিউনিস্ট রাজবন্দীদের ওপর পুলিশ গুলি চালালে ৭ জন কমরেড শহীদ হন। পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্টরা তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলেন। তেভাগা, নানকার, টংকসহ নানা কৃষক আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলনের পাশাপাশি ছাত্র ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন সংগঠিত করেছেন। ঐতিহ্যবাহী গণসংগঠনগুলো প্রতিষ্ঠার পেছনে কমিউনিস্ট পার্টির ভূমিকাই মুখ্য। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম, সাম্প্রদায়িকতা ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই, জাতীয় সম্পদ রক্ষার আন্দোলনসহ সকল আন্দোলন-সংগ্রামেই সিপিবি অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। ভাষা আন্দোলনসহ দীর্ঘদিনের গণসংগ্রামে এবং মুক্তিযুদ্ধে সিপিবি অগ্রণী ভূমিক রেখেছে। পতিত আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধেও সিপিবি সবচেয়ে বেশি আন্দোলন সংগ্রাম করেছে।
৫ আগস্টে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যূত্থানে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে।এখন গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা বাস্তবায়নে গণতন্ত্র ও শোষণ-বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণের সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা এবং দেশ ও জাতির কাঙ্খিত মুক্তির জন্য সমাজতন্ত্রের লক্ষ্যে বিপ্লবী গণতান্ত্রিক পরিবর্তন সাধনে সিপিবি কাজ করে যাচ্ছে। সকল শ্রেণী পেশার সাধারণ মানুষ কে কমিউনিস্ট পার্টির চলমান লড়াই সংগ্রামে যুক্ত হওয়ার আহবান জানান নেতৃবৃন্দ।