সোমবার, নভেম্বর ১৮, ২০২৪
Led01Led05অর্থনীতিজেলাজুড়েবিশেষ প্রতিবেদনসদর

না.গঞ্জে কমছেই না মাছ-মাংসের দাম, ডিম-মুরগিতে ক্রেতাদের ঝোঁক

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় প্রয়োজন প্রোটিন। দেহের প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে মাছ, মাংস ও ডিমের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে নারায়ণগঞ্জের খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য বিলাসিতার পণ্য হয়ে উঠেছে এ মাছ, মাংস। বাজারে সবজি, চাল-ডাল কিনতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেলেও মাছ, মাংস থেকে ক্রমেই আগ্রহ হারাচ্ছেন ক্রেতারা।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গরু ও খাসি জবাই করে দোকানে বসে আছেন কসাইরা। সকাল থেকে দুপুর হওয়া পর্যন্ত ক্রেতাদের তেমন আনাগোনা দেখা যায় নি। মাঝে মধ্যে অল্প কয়জন ক্রেতা মাংসের দরদাম করলেও মাংস না কিনেই চলে যাচ্ছেন।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক মাসের ব্যবধানে গরু ও খাসির মাংসের দাম কমে নি। গরুর মাংস কেজিতে ৭৫০ টাকায়, কলিজা ৬৮০-৭০০ টাকায়, মাথা ৪০০-৪৫০ বিক্রি হচ্ছে। খাশির মাংস কেজিতে ১০০০ টাকায়, কলিজা ২৫০ টাকায়, মাথা ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংস বিক্রেতা মো. লাক মিয়া লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, ক্রেতাদের চাপ অনেক কম এখন। আমরাও চাই মাংসের দাম এমন মাত্রায় থাকুক, যাতে করে সবাই কিনে খেতে পারেন। হাট থেকে চরা দামে গরু আনি, সংসার খরচ চালাতে অল্প হলেও লাভ করার চেষ্টা করি। গরুর খাবারের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে রাখছে। গরুর খাবারের দাম বেশি হওয়ায় হাটে বেশি দামে গরু কিনতে হয়। যার কারণে মাংসের দামও কমছে না। সরকার ব্যবসায়ীদের নিয়ে বসলে, গরুর খাবারসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হলে অনেক পণ্যের দাম স্থির কিংবা কমবে।

বিভিন্ন মাছের দোকান ঘুরে জানা যায়, বিক্রেতারা ইলিশ ছোট সাইজের কেজিতে ৬০০ টাকা, ইলিশ বড় সাইজের ১৭০০ টাকা, পাংগাশ ২০০-২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, রুই ৩৫০-৪০০ টাকা, পোয়া মাছ ৪০০ টাকা, কই মাছ ২০০-২৫০ টাকা, চাপিলা মাছ ২৫০ টাকা, চিংড়ি বড় ১২০০ টাকা, চিংড়ী ছোট ৬৫০ টাকা, চর বাইল্লা ৮০০ টাকা, শিং ৮০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কয়েকজন বিক্রেতাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, বেশির ভাগ মাছ যাত্রাবাড়ী আড়ৎ থেকে আনা হয়েছে। বৃষ্টি ও বন্যার কারণে আড়তে এবার মাছ কম আসছে। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ২০ টাকা বেশি দিয়ে মাছ কেনা হয়েছে। তাই মাছ বিক্রির সময় দাম একটু বেশি। ক্রেতাদের কই, পাংগাস ও তেলাপিয়ায় আগ্রহ থাকলেও অন্যান্য মাছের বিক্রি হচ্ছে কম।

এদিকে, মুরগির মাংস প্রায় দুসপ্তাহ ধরে স্থীর রয়েছে। ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১৭০ টাকা, কক মুরগি ২১০ টাকা, লেয়ার লাল মুরগি ৩২০ টাকা, প্যারেন্ট খাসী মুরগি ২৮০ টাকা, প্যারেন্ট খাসি মোরগ ৩২০ টাকা, সোনালী মুরগি ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতা মনির জানান, কয়েক সপ্তাহ ধরে মুরগির দাম প্রায় স্থিতিশীল রয়েছে। আমাদের কাছে ঢাকা থেকে মুরগির সাপ্লাই আসছে। এর উপর বন্যা কবলিত এলাকা থেকে অনেক খামারের মালিক কিছুটা কম দামে মুরগি বিক্রি করছেন। সামনে আরও কয়েকদিন মুরগির দাম স্থিতিশীল থাকবে।

পুষ্টির চাহিদা মেটাতে জেলার বেশিরভাগ মানুষদের বিকল্প খাবার ডিম। প্রায় এক মাসের ব্যবধানে ডিমের দাম হালিতে ৪ টাকা করে বেড়েছে। বাজার ঘুরে জানা যায়, মুরগির লাল ডিম খুচরা হালিতে ৫২ টাকা (পাইকারি ৫০), মুরগির সাদা ডিম ৫০ টাকা, হাশের ডিম ৭০ টাকা, দেশি কক মুরগির ডিম ৬০-৬৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

ডিম কিনতে আসা সাব্বির লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, গরু ও খাসির মাংসের দাম বেশি বলে এসকল দোকানের কাছেও যাওয়া হয় না। মাঝে মধ্যে তেলাপিয়া নইলে পাংগাস কেনা হয়। আর মাংসের চাহিদা মেটাতে কখনও কখনও ব্রয়লার মুরগি কেনা পড়ে। মাংসের যে দাম তা খেটেখাওয়া মানুষদের পক্ষে কিনে খাওয়া সম্ভব না। বেশিরভাগ সময় খাবারের জন্য বাসায় ডিম নেওয়া হয়। পুষ্টির চাহিদা মেটাতে এর চাহিদা বেশি, কিন্তু এর দামও দিন দিন নাগালের বাইরে যাচ্ছে। তাই বলবো, বাজার নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রনে সরকার-প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দরকার।

RSS
Follow by Email