মঙ্গলবার, জুন ৩, ২০২৫
Led01অর্থনীতি

না.গঞ্জে ঈদ বাজারে বৃষ্টির হানা: জলাবদ্ধতায় ডুবছে কেনাকাটার উৎসব

# টানা বর্ষণে ক্রেতা নেই, বিক্রেতারা হতাশ
# মার্কেট ফাঁকা, থমকে গেছে বেচাকেনা।

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, টানা বৃষ্টি আর জলাবদ্ধতায় নারায়ণগঞ্জের চিরচেনা ঈদের বাজার ততই ঝিমিয়ে পড়ছে। সাধারণত এই সময়ে নগরীর সমবায় মার্কেট, ডিআইটি মার্কেট, এবং ফ্রেন্ডস মার্কেটসহ অন্যান্য বিপণিবিতানগুলোতে উপচে পড়া ভিড় থাকে। কিন্তু গত কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টিতে সেই চিত্র একেবারেই উল্টো। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না মানুষ, যার ফলে বিক্রেতারা অলস সময় পার করছেন, এতে ক্ষতির আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা।

গত কয়েকদিন নগরীর চাষাঢ়া, কালীর বাজার, এবং ডিআইটি এলাকায় এমনই চিত্র। বৃষ্টির কারণে চাষাঢ়া, মিশনপাড়া এবং কালীর বাজার সংলগ্ন বেশ কিছু সড়কে পানি জমে আছে। এই জলাবদ্ধতার কারণে সমবায় মার্কেট, ডিআইটি মার্কেট, এবং ফ্রেন্ডস মার্কেট-এ ক্রেতাদের প্রবেশে বিঘ্ন ঘটছে। এমনকি ফুটপাতের দোকানগুলোও সেভাবে দেখা যাচ্ছে না।

বিক্রেতারা বলছেন, এবার ঈদে এমনিতেই বিক্রি কিছুটা কম। তার ওপর গত কয়েকদিন বৃষ্টি এবং সড়কে জমে থাকা পানি ব্যবসা আরও খারাপ করে দিয়েছে। আজকের মেঘাচ্ছন্ন আকাশ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। সব মিলিয়ে মার্কেটগুলোতে ক্রেতা সমাগম একেবারেই কম, যার ফলে বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে।

সমবায় মার্কেটের দোকানি শাওন আহমেদ হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “গত কয়েকদিন থেমে থেমে সারাদিন বৃষ্টি ছিল। কাস্টমার তেমন একটা পাইনি। আজও আবহাওয়া খারাপ। এ আবহাওয়ায় মানুষ ঘর থেকেই বের হয় না। কেনাকাটা করতে কীভাবে আসবে! ঈদের আগে শুক্রবার অনেক বিক্রির আশা করছিলাম, আবহাওয়ার কারণে আর হলো না।”

ফ্রেন্ডস শপিং কমপ্লেক্সের পাশের পাঞ্জাবীর দোকানি জাবেদ বলেন, “সকাল থেকে মাত্র দুটো পাঞ্জাবি বিক্রি করেছি। ক্রেতা তেমন একটা নেই, বিক্রিও নেই। আবহাওয়া ভালো না হলে কাস্টমার তেমন একটা পাবো না। আশা করছি শেষের দিকে ভালো বিক্রি হবে।”

অন্যদিকে, হকার্স মার্কেটের ফুটপাতের ব্যবসায়ী তামিম অনিশ্চিত কণ্ঠে জানান, “সকাল থেকে দোকান চালু করব ভাবছি। মনে হচ্ছে এখনই বৃষ্টি শুরু হবে। দোকান চালু করলে যদি হঠাৎ বৃষ্টি আসে, জিনিসপত্র ভিজে যাবে। তাছাড়া কাস্টমারও কম। রোদ উঠলেই দোকান চালু করতাম।”

তবে কিছু ক্রেতা, বিশেষ করে তরুণদের দেখা গেছে মার্কেটে। তারা বলছেন, বিভিন্ন কাজে তারা বাসা থেকে বের হয়েছেন, তাই ঈদের টুকটাক কেনাকাটাও সেরে নিচ্ছেন। এসব ক্রেতাদের চাহিদা মূলত প্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট এবং পাঞ্জাবি।

শিফাত হোসেন নামের এক ক্রেতা জানান, “একটা কাজে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম। এজন্য ভাবলাম কিছু কেনাকাটা করে যাই। সমবায় মার্কেটে এমনিতেই ভিড় থাকে। ঈদের সময় বেশি ভিড় হওয়ার কথা। কিন্তু আবহাওয়া খারাপ থাকায় তেমন একটা ভিড় নেই। দেখেশুনে সময় নিয়ে কেনাকাটা করা যাবে।”

বৃষ্টির এই ধারা অব্যাহত থাকলে নারায়ণগঞ্জের ঈদের বাজার আরও মন্দা যাবে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। শেষ মুহূর্তে আবহাওয়ার উন্নতি না হলে ঈদ উপলক্ষে যে ব্যবসার আশা করেছিলেন তারা, তা হয়তো অধরাই থেকে যাবে।

RSS
Follow by Email