না.গঞ্জে অস্থির কাঁচাবাজার, ডিমের দাম হালিতে কমেছে ৫ টাকা
# ‘পঞ্চাশ টাকার নিচে সবজি নাই বাজারে’
# ‘আগে মাইনসে ২-৪ টা মুরগি নিত, এহন একটাও নেয় না’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের কাঁচাবাজারে পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। পেঁয়াজ, মরিচ, টমেটো, ঢেড়শ, আদা, রসুন, উস্তা, ধুন্দুল, সিম, বাধাকপি, ফুলকপি, মূলাসহ বিভিন্ন সবজি ধীরে ধীরে সাধারন মানুষের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। তবে আগের চাইতে কমেছে ডিমের দাম। গত সপ্তাহের ব্যবধানে হালিতে কমেছে ৫ টাকা। মুরগির দাম গত সপ্তাহের দামেই স্থির রয়েছে।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সদর থানার দ্বিগু বাবুর বাজার ঘুরে এ তথ্য জানা যায়। বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পেঁয়াজ জাত ভেদে প্রতি পাল্লা ৫৬০-৫৭০ টাকায় ও কেজিতে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু প্রতি পাল্লা ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ দেশি ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শীতকালীন সবজির মধ্যে সিম কেজিতে ২০০ থেকে ২১০ টাকা, ফুলকপি ছোট জোড়া ৫০ থেকে ৬০ ও বড় জোড়া ১০০ থেকে ১২০ টাকা, মূলা কেজিতে ৫০ টাকা, বাধাকপি জোড়া ১০০ টাকা, গাজর ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শাকের মধ্যে লাল শাক কেজিতে ৮০ টাকা, লাউ শাক কেজিতে ৫০, পুই শাক কেজিতে ৪০ টাকা, মূলা শাক ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যান্য সবজির মধ্যে টমেটো ইন্ডিয়ান কেজিতে ১৬০ টাকা, ঢেড়শ ৮০ টাকা, রসুন চায়না ২২০ টাকা ও দেশি ২৮০ টাকা, আদা দেশি ১২০ টাকা ও নতুন আদা ১৪০ টাকা, বেগুন লম্বা ৮০ টাকা, উস্তা ৭০ টাকা, পেপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শশা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কুমড়া ফালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, ক্যাপ্সিকাম লাল-হলদ ৫০০ থেকে ৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ক্রেতাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, বাজারে সবজির মূল্য শুধুই বেড়ে চলছে। বাজারে পণ্যের উর্ধ্বমুখী দামে অনেকের সংসারে টাপড়েন হচ্ছে। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষরা হিমশিম খাচ্ছেন।
জাকারিয়া নামে এক ক্রেতা জানান, বেশির ভাগ সবজির দাম সত্তর-আশি টাকায় ঠেকেছে। পঞ্চাশ টাকার নিচে সবজি নাই তেমন বাজারে। চল্লিস টাকার নিচে দুই একটা সবজি পাইছি। মাছ-মাংসের দাম এমনিতেই বেশি। এর উপর সবজির দাম এত বেশি হলে তো, কিছুই খাওয়ার থাকছে না। শূনেছি, বাজার মনিটরিং হচ্ছে। কিন্তু বাজারে পণ্যসামগ্রির দাম তো কমতে দেখি না। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, বাজারে জিনিসপত্রের দাম মানুষের নাগালের মধ্যে আনুন।
বেলায়েত হোসেন নামে এক বিক্রেতা জানান, আমি পাইকারী রেটে তিন জাতের পেঁয়াজ আনছি। ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ কেজিতে ১০২ টাকা, চায়না পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। দেশি পেঁয়াজের পাইকারী ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় আনা। এটাই খুচরায় ১৪০ টাকার বেশি হবে। আরেকটা আছে দেশি হাইব্রিড, যার পাইকারী দাম ১১৪ থেকে ১১৫ টাকা। এর দাম কেজিতে খুচরা পর্যায়ে বেড়ে ১২০ টাকা হচ্ছে। সরবরাহকারী, আমদানিকারক থেকে আমরা যে দাম পাই, সেটা দিয়েই আমরা বাজারে বিক্রি করছি।
এদিকে, মুরগির দাম গত সপ্তাহের দামে স্থির রয়েছে। তবে ডিমের দাম কমেছে। বাজারে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২০৫ টাকা, কক মুরগি ৩৩০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩৩০ টাকা, লেয়ার সাদা মুরগি ২৮০ টাকা, প্যারেন্ট খাসী মুরগি ৩২০ টাকা, প্যারেন্ট খাসী মোরগ ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে, মুরগির লাল ডিম হালিতে হয়েছে ৫০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৫ টাকা। এছাড়াও বাজারে মুরগির সাদা ডিম হালি প্রতি ৫০ টাকা, হাঁসের ডিম ৭৮ টাকা, সোনালী মুরগির ডিম হালিতে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা ও কোয়েল হালিতে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সাইদুল নামে এক মুরগি বিক্রেতা লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ভাই, আমরা ঢাকা থিকা মুরগি যে রেটে পাই সেটা দিয়াই বেইচা দেই। মুরগির দাম যখন ১৬০ টাকা ছিল তখন, আমদের বেচা-কিনা ভালো ছিল। তহন মাইনসে তিন চারটা কইরা মুরগি নিয়া গেছে। কিন্তু এহন একটা মুরগি কিনতেও কয়েকবার চিন্তা করে। আগে যাও মানুষ মুরগি কিনতো, আর এহন একটাও নেন না।