না.গঞ্জে অতিরিক্ত দামে সয়াবিন বিক্রি, ব্যবসায়িদের দাবি সরবরাহ কম
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক দিক ও পরিস্থিতি বিবেচনায় সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েছিলো সরকার। তবে দাম বাড়ানোর পরও এখনো বাজারে নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে না বহুল ব্যবহৃত এই ভোজ্য তেল। এদিকে অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রির কারণ হিসেবে বাজারে তেল সরবরাহ কম বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন কোম্পানির ডিলাররা ইচ্ছা করেই বাজারের তেলের সংকট রাখতে চাইছে বলে অভিযোগ তাদের। চড়া মূল্য সয়াবিন তেল কিনতে হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ক্রেতারা।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সরেজমিনে নগরীর দ্বিগু বাবুর বাজার ও আশে পাশের এলাকার দোকান ঘুরে এ তথ্য পাওয়া যায়। বাজারে প্রায় দোকানে বিক্রি হচ্ছে না সয়াবিন তেল। তবে কিছু দোকানে বোতলের গায়ের লেখা দামের থেকে অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি হচ্ছে এ নিত্য পণ্য। রূপচাঁদা, ফ্রেশ, তীরের মতো প্রায় প্রতিটি কোম্পানীর ৫ লিটার সয়াবিন তেলের মূল্য রাখা হচ্ছে ৮৮০ থেকে ৯০০ টাকা। সরকারের নির্ধারিত প্রতি পাঁচ লিটার তেল বিক্রি হওয়ার কথা ৮৭৫ টাকায়। তবে গত সপ্তাহেও বোতলজাত তেল বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকায়। এছাড়াও খোলা সয়াবিন তেল যেখানে বিক্রি হওয়ার কথা ১৫৭ টাকা সেখানে ১৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বাজার করতে আসা গৃহিনী হোসনে আরা বলেন বলেন, ‘বিগত এক মাস ধরে তেল নিয়ে কি তামাশা চলতেছে আল্লাহ ভালো যানে। দশ দোকান ঘুরলে এক দোকানে তেল পাই। এলাকার দোকানে তো পাই ই না। এভাবে সংসার কিভাবে চলে? তেলের দাম বাড়ার পর মনে করসিলাম আবার আসবে হয়তো। কিন্তু এখনো একমাসের মতো হবে তেল পাই না। খোলা তেল যাও কিছু পাই সেটার দামও অনেক বেশি রাখে।
আরেক ক্রেতা সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যারা বলছে তেল নেই, তাদের কাছে তেল আছে। বিক্রি করছে না। সামনে রোজা, তখন আরও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করবে। আমরা আছি বিপদে। বেশি দাম দিয়ে কিনে খাবো সেটাও পাই না। আসলে ব্যবসায়ী আর সরকার যে কী চায়, সেটাই আমরা বুঝতে পারি না। তারা কী আরও দাম বাড়াতে চায়?
এ বিষয়ে মুদি দোকান ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান বলেন, ‘ডিলাররা আমাদের তেল দেয় না। আমরা ডিলারের কাছে বললে তারা বলে, তেল নাই। ডিলার যদি না দিতে পারে তাহলে আমরা কীভাবে পাবো? আর ক্রেতারাও কথা শোনায়। তেলের বোতলে গায়ে যে দাম লেখা সেই দামে তো আমি নিজেই কিনি নাই। ১৫ দিন আগে অর্ডার ও অগ্রিম টাকা দিয়ে রেখেছি তেলের জন্য। এখনো তেল হাতে পাই নাই।’
আরেক ব্যবসায়ী খালেক মজুমদার বলেন, ‘আমরা তো ডিস্ট্রিবিউটরদের চাপও দিতে পারি না। চাপ দিলে যে এই দুই-তিন কার্টন তেলও দেয়, সেটাও দেবে না। ডিলাররা বলে কোম্পানি তেল দেয় না, আমরা দিবো কীভাবে। তাই এখন দোকানে তেল উঠাই নাই।’
প্রসঙ্গত, গত ৯ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্যতেল পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দিন। এ সময় বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিনসহ দেশের ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সে সময় প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৭৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর আগে বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল ১৪৯ টাকা লিটারে বিক্রি হতো।